০৬ মে ২০২৪, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`


উড়তে চান এক পায়েই

-

তারা শুধু নামেই প্রতিবন্ধী। তাদের মনের জোরের কাছে পরাস্ত সব প্রতিবন্ধকতা। ক্রিকেট, ফুটবল, সাঁতার, হাইজাম্প, লংজাম্প, ব্যাডমিন্টন কী পারেন না। অপয়া, অকর্মণ্য, তোদের দিয়ে কিচ্ছু হবে না ইত্যাদি শব্দগুলোকে ভুল প্রমাণিত করেছেন তারা। সবাই জানালেন, পড়ালেখার পাশাপাশি স্পোর্টসই তাদেরকে জুগিয়েছে অসম মনোবল, দেখিয়েছে সামনে এগিয়ে যাওয়ার রাস্তা। তারাও স্বপ্ন দেখেন দেশের পতাকাকে বিশ্বের দরবারে তুলে ধরার। এ জাতীয় সব মানুষের জন্য প্রেরণা হিসেবে থাকতে চান এক পায়ে প্যারা ব্যাডমিন্টনে খেলতে আসা মো: রাসেল, নাফিউর, মকবুল ও তামিম।
ফেনীর রাসেল তো মনেই করেন না তার এক পা নেই। রেলস্টেশনের পাশে বাসা থাকায় শিশুকালে হামাগুড়ি দিয়ে চলে যান রেললাইনে। ওই সময় একটি চলন্ত ট্রেনে তার পা কেটে যায়। মা দৌড়ে এসেও রক্ষা করতে পারেননি তার আদরের ছেলেটিকে। রিকশাচালক বাবার এই ছেলেটি বতর্মানে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে তৃতীয় সেমিস্টারের তুখোড় ছাত্র। ফুটবল খেলেন কিপার হিসেবে আর ব্যাডমিন্টন টুর্নামেন্ট খেলেন স্বাভাবিক খেলোয়াড়দের সাথেই। প্যারা ব্যাডমিন্টন খেলতে এসে জানালেন, ‘ধৈর্য ধরলে সফল হবোই। কোন কিছুকেই তুচ্ছ করে দেখা ঠিক নয়। এখন হয়তো নিজের টাকায় খেলতে এসেছি। পরবর্তী সময়ে ফেডারেশনের টাকায় বিদেশেও যেতে পারি।’
জামালপুর সদরের হটাচন্দ্রার ছেলে খন্দকার নাফিউর রহমান। জন্মের সময়ই তার এক পা নেই। পড়ছেন ইসলামপুর সরকারি কলেজে। তিনি ছাড়া পরিবারের সবাই স্বাভাবিক। এলাকায় ডানপিটে হিসেবেই তার পরিচিতি। এক পা দিয়েই সাইকেল চালিয়ে ২ কিলোমিটার দূরে স্কুলে যেতেন, কলেজে গিয়েছেন মোটরসাইকেল চালিয়ে। ২০১৭ সালে ‘রবি খোঁজ’ ট্যালেন্ট হান্ট প্রোগ্রামে স্পিনার হিসেবে ময়মনসিংহ বিভাগে প্রথম হয়ে সেরা কুড়িতে নাম লিখান। প্যারা ব্যাডমিন্টনে অংশ নেন ২০১৯ সালে। এবারো এসেছেন। সাঁতার, হাইজাম্পেও পারদর্শী তিনি। নাফিউর জানালেন, ‘স্পোর্টসের মাধ্যমেই একজন প্রতিবন্ধী সবচেয়ে বেশি মনের ভাব প্রকাশ করতে পারে। মাঠে আসতে পারছি এটাই বড় কথা। প্যারা অলিম্পিকে অংশ নিয়ে পোডিয়ামে দাঁড়িয়ে গাইতে চাই আমাদের জাতীয় সঙ্গীত।’ যোগ করেন, ‘আমরা পরিবার কিংবা দেশের বোঝা নই। এমন প্রতিবন্ধীদের জন্য আমরা একটা উদাহরণ হয়ে থাকতে চাই।’
ঠাকুরগাঁও টেংরিয়ার মকবুল জানালেন, গ্রামের রাস্তায় ২০০৮ সালে মাত্র ৬ বছর বয়সে দৌড়াদৌড়ি করার সময় গরুর গাড়ির চাকা তার পায়ের উপর দিয়ে যায়। তারপরই কেটে ফেলতে হয় তার এক পা। এইচএসসি দ্বিতীয় বর্ষের এই ছাত্র ফুটবল খেলেন স্ট্রাইকার পজিশনে। ব্যাডমিন্টন ভালো খেলেন। ঢাকায় প্যারা ব্যাডমিন্টনে এসে এ ইচ্ছাটা আরো বেশি প্রকট হয়েছে। ‘শারীরিক প্রতিবন্ধীদের খেলা হয় এটা জানতাম না। ইনডোরে ঢোকার পরই স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছি। আমরা যারা এমন ব্যাক্তি আছি, তাদেরকে আরো বেশি করে জানানোর পদক্ষেপ নিতে হবে’ জানান তিনি।
গাজীপুরের কালিগঞ্জের তামিম আহমেদ ৫ বছর বয়সে লেগুনার ধাক্কায় পা হারিয়েছেন। এবার এসএসসি পরীক্ষা দেবেন। সিআরপিতে এসেছিলেন নকল পা লাগানোর জন্য। তখন জানলেন ব্যাডমিন্টনের কথা। আগে থেকেই খেলতেন। তবে এমন টুর্নামেন্টে প্রথম। জানালেন, ব্যাডমিন্টন আমার অক্সিজেন। আমি ক্র্যাচ ছাড়াই এক পায়ে দাঁড়িয়ে খেলতে পারি। কার না স্বপ্ন থাকে অলিম্পিকে যাওয়ার।’ তিনি আরো জানালেন, ‘যারা গাড়ি চালান তারা যেন আরো সতর্ক হন। তাদের ভুলে একটা পরিবার যুগ যুগ ধরে ভুগতে থাকে।’


আরো সংবাদ



premium cement
ঝিনাইদহ-১ আসনের উপ-নির্বাচন স্থগিত গাছ কাটা ও লাগানো বিষয়ে নীতিমালা প্রণয়ন প্রশ্নে হাইকোর্টের রুল ইউক্রেনের কাছে পারমাণবিক মহড়ার নির্দেশ দিলো পুতিন আমলাদের সন্তানের জন‌্য আলাদা বিশ্ববিদ‌্যালয়ের চিন্তা সরকারের নেই চৌগাছায় বিদ্যুৎস্পৃষ্টে বাসচালকের মৃত্যু প্রাথমিকে মঙ্গলবার থেকে স্বাভাবিক রুটিনে ক্লাস জামালপুরে ট্রাক উল্টে চালক নিহত ভালুকায় রাইদা কারখানার শ্রমিকদের মহাসড়ক অবরোধ কক্সবাজারের পাহাড়ি ছরায় গোসল করতে নেমে ২ শিশুর মৃত্যু কাঁঠালিয়ায় ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতিকে অব্যাহতি রোহিঙ্গা গণহত্যা মামলায় সহযোগিতার জন্য ওআইসি সদস্যদের প্রতি আহ্বান পররাষ্ট্রমন্ত্রীর

সকল