২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫
`


রংপুরে অসময়ে ৫ একর জমির আলু হাটু পানির নিচে

- ছবি : নয়া দিগন্ত

অসময়ে হাটু পানি ভেঙে আলু তুলছেন রংপুর মহানগরীর সরদারপাড়া একটি এলাকার চাষি। বৃষ্টির পানির সাথে বোরো আবাদের জমির পানি চুইয়ে ওই এলাকার প্রায় ৫ একর জমির আলু এখন পানির নিচে। তবে কৃষি অফিস জানিয়েছে, এটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা হওয়ায় উৎপাদনে কোনো প্রভাব ফেলবে না।

শুক্রবার সরেজমিনে জানা গেছে, ওই এলাকার নজরুল ইসলামের দুই একর, জরিফুল ইসলাম, এমদাদুল হক এবং আল হোসেনের এক একর করে জমির আলু এখন পানির নিচে। ওই এলাকাটি নিচু হওয়ায় গত দু’দিনের বৃষ্টির পানির সাথে আশপাশের লাগানো বোরোর জমির পানি চুইয়ে আলুর জমি ভরে গেছে। সেকারণেই হাটু পানি। এসব পানি কোনোভাবেই আর বের করে দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। স্থানীয়ভাবে অধিক খরচ দিয়ে পানিতেই আলু তোলার
চেষ্টা করছেন চাষিরা।

ভুক্তভোগী নজরুল ইসলাম জানিয়েছেন, বৃষ্টির আগে আলু তুলতে পারি নাই। বৃষ্টির পানির সাথে পাশের বোরোর পানি এসে জমা হয়েছে। আমার আলুর জমিতে এখন পানি কোমড়ের কাছাকাছি। অধিক মূল্যে কৃষাণ নিয়ে আলু তোলার চেষ্টা করছি। আগে ২২ শতক জমিতে আলু তুলতে সর্বোচ্চ খরচ হতো তিন হাজার টাকা। এখন ১০ হাজার টাকায়ও কুলাবে না। তার ওপরে এভাবে পানিতে ডুবে অর্ধেক আলুও উঠানো সম্ভব হবে না। এতে আমার প্রায় দুই লাখ টাকারও বেশি ক্ষতি হবে।’

অপর চাষি আলী হোসেন জানান, ‘এই আলুর আবাদ করেই আমি বারো মাস চলি। কিন্তু এবার কপাল খারাপ। অসময়ে আমার আলুর জমিতে এক হাটুরও বেশি পানি। আলু তুলতে পারছি না। এই পানি সেচে অন্য জায়গায় দেয়ারও বুদ্ধি নাই। কৃষাণ নিয়েও সব আলু উঠাতে পারছি না। বৃষ্টির আগে উঠাতে পারলে আমার এতো বড় ক্ষতি হতো না। এবার আমার সংসার চালানো খুব কষ্ট হবে।’

চাষিরা জানিয়েছেন, ওই চার কৃষকের জমির আশপাশের চাষিরা আলু তুলে বোরো আবাদ শুরু করেছেন। শুধু ওই চার কৃষকেরই আলু উঠানো বাকি ছিল। সে কারণে বৃষ্টির পানি অন্যকোনো দিকে যেতে পারেনি। তার ওপর বোরোর জমির পানি চুইয়ে এসেছে। সে কারণে তাদের কমপক্ষে ৫ লাখ টাকারও বেশি ক্ষতি হবে।

রংপুর আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, বুধবার সকাল ৬টা থেকে শুক্রবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ৪৮ দশমকি ৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছে।

রংপুর কৃষি অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক ওবায়দুর রহমান মন্ডল জানিয়েছেন, ‘আলু হারভেস্ট শেষের পথে। ওই চার কৃষকের ঘটনাটি ভিন্ন। সেখানে চারপাশে আগেই আলু তুলে বোরো লাগাচ্ছেন কৃষক। সে কারণে ওই জমির পানি বের হতে পারছে না। এই ঘটনা উৎপাদনে কোনো ব্যাঘাত ঘটাবে না।

মূলত, এবার মাঠেই কৃষক ৩০ থেকে ৩২ টাকা কেজি দরে আলু বিক্রি করছেন। যা আলুর ইতিহাসে রেকর্ড ঘটনা। এবার দেশে ৪ লাখ ৪২ হাজার হেক্টর জমি থেকে প্রায় ১ কোটি ১৭ লাখ টন আলু উৎপাদনের আশা কৃষি বিভাগের। যা গত বছরের তুলনায় ৫ লাখ টন বেশি। মোট চাহিদা ৮০ থেকে ৯০ লাখ টন।


আরো সংবাদ



premium cement