০৬ মে ২০২৪, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`


রংপুরে ছুরিকাঘাতে আহত মাদরাসাছাত্রী মারা গেছেন

নিহত তারমিনা বেগম ফুলতি - ছবি নয়া দিগন্ত

ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত রংপুরের বদরগঞ্জের লোহানীপাড়ার মাদরাসা ছাত্রী তারমিনা বেগম ফুলতি (১৪) মারা গেছেন। ঘটনার চার দিন পর রোববার সকালে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে তিনি মারা যান।

চিকিৎসকরা জানিয়েছেন অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তার মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় গত বৃহস্পতিবার শাখাওয়াত হোসেনের বিরুদ্ধে বদরগঞ্জ থানায় মামলা হয়েছে।

রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা: হামিদুল ইসলাম জানান, গত ২৮ জুলাই আশঙ্কাজনক অবস্থায় তারমিনাকে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের ১৬ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি করানো হয়। এ সময় ছুরিকাঘাতের কারণে তারমিনার বুক, দুই উরু ও পাজরে রক্ত ঝড়ছিল। আমরা তাকে সুস্থ করার জন্য মেডিক্যাল টিম গঠন করে চিকিৎসা দিয়েছি। কিন্তু তার বুক ও পেটের মাঝামাঝি স্থানে রক্তনালী কেটে যাওয়ায় অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে মৃত্যু হয়েছে।

বদরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হাবিবুর রহমান জানান, তারমিনা লোহানীপাড়া দাখিল মাদরাসার নবম শ্রেণীর শিক্ষার্থী ছিল। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার একটি মামলা হয়েছে। ওই মামলাটি এখন হত্যা মামলা হিসেবে গন্য হবে। অভিযুক্তদের গ্রেফতারে আমরা সাড়াশি অভিযান চালাচ্ছি।

তারমিনার বাবা তোয়াব আলী জানান, আমি ঘটনার দিনই মামলা দিয়েছি। কিন্তু পুলিশ কাউকেই গ্রেফতার করতে পারেনি। আমি আমার মেয়ে হত্যার বিচার চাই। সাখাওয়াদের ফাঁসি চাই।

তারমিনার মা পারভীন আখতার জানান, মিঠাপুকুর উপজেলার বড়বালার পশ্চিম বড়বালায় আমার বড় মেয়ে তহমিনার বিয়ে হয়। বোনের বাড়িতে বেড়াতে গেলে ওই এলাকার মোনায়েম হোসেনের ছেলে সাখাওয়াত হোসেন আমার ছোট মেয়ে তারমিনাকে প্রেমের প্রস্তাব দেয়। বিভিন্নভাবে উত্তক্ত করতে থাকে। এ কারণে বিয়ের বয়স না হলেও গত ২৮ জুলাই তারমিনার জন্য আমরা বিয়ের দিন ধার্য করি।

তারমিনার মা জানান, বিয়ের দিন ভোরবেলা মোটরসাইকেলে এসে আমার বাড়ির দেয়াল টপকিয়ে আমার ঘুমন্ত মেয়েকে ডেকে তুলে দরজার সামনেই ছুরি দিয়ে কুপিয়ে পালিয়ে যায়। তারমিনা চিৎকার দিয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়লে আমরা এসে দেখি তারমিনা বুক, দুই উরু ও পাজরে ছুরির আঘাতে রক্ত ঝড়ছে। পরে তাকে গুরুতর আশঙ্কাজনক অবস্থায় রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের ১৬ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি করাই। পাঁচ দিন সেখানে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় আমার মেয়ে মারা যায়।

পারভীন আখতার বলেন, আমরা সেদিনই মামলা দিয়েছিলাম। কিন্তু পুলিশ কোনো ভাবেই আসামিকে ধরতে পারেনি। সাখাওয়াত আমার ফুলের মতো মেয়েকে হত্যা করেছে। আমিও তার ফাঁসিতে ঝোলানো লাশ দেখতে চাই।


আরো সংবাদ



premium cement