২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`


স্ম র ণ : সিরাজুল হোসেন খান

-

আজ প্রখ্যাত সাংবাদিক, রাজনীতিক, কলামিস্ট ও শ্রমিক নেতা সিরাজুল হোসেন খানের মৃত্যুবার্ষিকী। ২০০৭ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি তিনি ৮০ বছর বয়সে ইন্তেকাল করেন। নয়া দিগন্তে তিনি প্রতি শুক্রবার কলাম লিখতেন ‘সহজ ভাষায় সহজ কথা’ শিরোনামে। এতে তিনি সমসাময়িক জাতীয়-আন্তর্জাতিক, রাজনৈতিক-আর্থসামাজিক বিবিধ বিষয়ে লেখা ছাড়াও প্রসঙ্গক্রমে স্মৃতিচারণ করে অনেক অজানা কথা প্রকাশ করেছেন। মৃত্যুর দু’সপ্তাহ আগে অসুস্থ হয়ে পড়া পর্যন্ত তিনি নয়া দিগন্তে নিয়মিত লিখেছেন। তিনি ছিলেন আগ্রাসন ও আধিপত্যবাদবিরোধী সংগ্রামের অন্যতম পুরোধা।
১৯২৭ সালে হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ে সিরাজুল হোসেন খানের জন্ম। ১৯৪৭ সালে নবগঠিত পাকিস্তানে জন্ম নেয়া প্রথম গণতান্ত্রিক ছাত্রসংগঠন মুসলিম ছাত্রলীগের তিনি অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সদস্য। ১৯৪৯ সালে সাব-এডিটর হিসেবে যোগ দেন নতুন ইংরেজি দৈনিক অবজারভারে। পরের বছর মাস্টার্স পাস করে সরকারের প্রচার বিভাগে সহকারী পরিচালক নিযুক্ত হন। কয়েক বছর পরে তিনি তা ছেড়ে দিয়ে সাংবাদিকতায় ফিরে আসেন। ১৯৬১ সালে লাহোরের বিখ্যাত পাকিস্তান টাইমস পত্রিকার ঢাকা ব্যুরো প্রধানের দায়িত্ব নেন। ১৯৬৩ সালে নির্বাচিত হন পূর্ব পাকিস্তান সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক। ১৯৬৪ সালে সব দল-মতের শ্রমিক সংগঠনের সমাহারে গঠিত ফোরামের এবং পরে একই সাথে কয়েক বছর পূর্ব পাকিস্তান শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। এই ফেডারেশন ছিল মওলানা ভাসানীর অনুসারী এবং তদানীন্তন বৃহত্তম শ্রমিক সংগঠন। ১৯৬৭ থেকে ১৯৬৯ পর্যন্ত দু’দফায় ১৪ মাস কারাবন্দী ছিলেন মরহুম খান। ১৯৬৯ সালে ঢাকাভিত্তিক প্রথম বেসরকারি বার্তা সংস্থা ইস্টার্ন নিউজ এজেন্সি বা এনা’র তিনি প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক ও অন্যতম উদ্যোক্তা। একই সময়ে তিনি ছিলেন ইংরেজি সাপ্তাহিক ঢাকা টাইমস সম্পাদক। ১৯৭৪ সালে রাজনৈতিক চাপে তিনি এনা ছাড়তে বাধ্য হন। সাপ্তাহিক হলিডে’তে বহু দিন কলাম লিখেছেনÑ এমনকি মন্ত্রিত্বের পরও। কয়েকটি দেশ সফর করেছিলেন সাংবাদিক ডেলিগেশনের নেতা হিসেবে।
সিরাজুল হোসেন খান ১৯৭০ সালে আরো কয়েকজন বামপন্থী নেতাসহ গোপনে গড়ে তোলেন পূর্ব বাংলার কমিউনিস্ট পার্টি (মার্কসবাদী)। আওয়ামী লীগ থেকে পৃথকভাবে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন এবং বাংলাদেশ লিবারেশন লিয়াজোঁ কমিটির সদস্য ছিলেন।
১৯৭৩ সালে ভাসানীর সমর্থকদের একাংশ নিয়ে গঠিত জাতীয় গণমুক্তি ইউনিয়নের তিনি প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক। আশির দশকে গণতান্ত্রিক পার্টির নেতা হিসেবে সাতদলীয় জোটে শামিল ছিলেন। কিছু দিন ছিলেন তথ্যমন্ত্রী। ১৯৯৬ সালে এরশাদ আওয়ামী লীগ সমর্থন করলে জাতীয় পার্টি ছেড়ে দেন। কিছু দিন পরই যোগ দিলেন বিএনপিতে। বিশ্বরাজনীতির রূপরেখা, উপমহাদেশের সামাজিক ও রাজনৈতিক ইতিবৃত্ত, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস এবং ছেঁড়া কাগজ সেলাই ও অর্থনীতি প্রভৃতি বই লিখেছেন।
হ মীযানুল করীম


আরো সংবাদ



premium cement