জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান ও বিরোধীদলীয় উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ কাদের (জিএম কাদের) এমপি বলেছেন, আগে আইনগতভাবে বাকশাল করা হয়েছিল। এখন আইনগতভাবে না করলেও বাকশালের আদলে ‘আওয়ামী লীগ প্লাস’ তৈরি করা হয়েছে। আমাদের দুর্ভাগ্য আর তাদের সৌভাগ্য হলো আগামী নির্বাচনের পর বাকশালের নাম হবে ‘আওয়ামী লীগ প্লাস’।
সোমবার (৫ জুন) দুপুরে জাতীয় পার্টি ঢাকা জেলা শাখার দ্বি-বার্ষিক সম্মলনে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় জিএম কাদের এসব কথা বলেন।
সম্মেলনে ঢাকা জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি হিসেবে পুনরায় অ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম এমপি’র নাম ঘোষণা করা হয়। একই সাথে ঢাকা-১ আসনে (দোহার-নবাবগঞ্জ) জাতীয় পার্টির প্রার্থী হিসেবেও তার নাম ঘোষণা করেন কাদের।
জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান বলেন, আওয়ামী লীগের সাথে এখন যোগ দিয়েছে পুলিশ, প্রশাসন, নির্বাচন কমিশন, পাবলিক সার্ভিস কমিশন। তারা একটা নতুন দল হয়েছে ‘আওয়ামী লীগ প্লাস’। সবাই যেন এখন আওয়ামী লীগের অঙ্গ সংগঠন। সবাই এখন আওয়ামী লীগের ভাষায় কথা বলে। পার্লামেন্টও এখন আওয়ামী লীগের অঙ্গ হয়েছে। বিচার বিভাগকে আওয়ামী লীগের অঙ্গ বানানোর চেষ্টা চলছে। কয়েক দিন আগে আওয়ামী লীগের এক নেতা বলেছেন, এক প্রধান বিচারপতিকে নামিয়ে দিয়েছি। প্রমাণ হয়েছে আওয়ামী লীগ বিচার বিভাগকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে।
তিনি বলেন, রাজনীতির মাঠে কথা আছে আওয়ামী লীগ জামায়াতকে বিভিন্ন নামে কিছু সিট দিবে। আমাদেরও কিছু সিট দিবে। আমাদের বলা হয়, আপনারা আরো সংগঠিত হন, আপনাদের আরো বেশি সিট দিবে। কে দিবে? আওয়ামী লীগ দিবে? জনগণ ভোট দেবে না? আওয়ামী লীগের নেতা নেত্রীরা যদি সিট দিতে পারে তাহলে নির্বাচনের দরকার কী? তাহলে ঘোষণা দিয়ে দেন কে কে পাশ করেছে। সাংবাদিকরাও প্রশ্ন করছে আওয়ামী লীগ কোন কোন সিট দিবে আপনাদের? নির্বাচনের অর্থ হচ্ছে জনগণ ঠিক করবে কে হবেন তাদের প্রতিনিধি। যদি আওয়ামী লীগই জনপ্রতিনিধি ঠিক করে দেন তাহলে নির্বাচনের প্রয়োজন কেন? আওয়ামী লীগ প্লাস ধংস না হওয়া পর্যন্ত গণতন্ত্র সম্ভব নয়। আওয়ামী লীগ প্লাস ধংস না হওয়া পর্যন্ত দেশের মানুষের মুক্তি সম্ভব নয়।
সাবেক এ মন্ত্রী বলেন, সারাদেশ গরমে পুড়ছে, সরকারের খবর নেই। সরকার ভাবছে দেশের মানুষ মরণের পরে সবাই দোজখে যাবে। তাই দেশের মানুষকে এই গরমে প্র্যাকটিস করার ব্যবস্থা করে দিচ্ছে।
তিনি বলেন, সারাদেশে শতভাগ বিদ্যুৎ দেয়ার কথা বলে ১৪ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদা মেটাতে ২৪ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র তৈরি করে রেখেছে। তারপরও দেশের মানুষ বিদ্যুৎ পাচ্ছে না কেন? আসলে তারা আমাদের বিদ্যুত দেয়ার জন্য বিদ্যুৎ কেন্দ্র তৈরি করেননি। তারা লুটপাটের জন্য বিদ্যুৎ কেন্দ্র তৈরি করেছে। তারা হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাট করে বিদেশে পাচার করে দিয়েছে। আমাদের দরকার ১৪ হাজার মেগাওয়াট আর তৈরি করা হচ্ছে ২৪ হাজার মেগাওয়াট। কিন্তু আমরা পাচ্ছি ১০ হাজার মেগাওয়াটেরও কম বিদ্যুৎ।
জিএম কাদের আরো বলেন, সরকার এখন গ্যাস কিনতে পারছে না, কয়লা কিনতে পারছে না, তেল কিনতে পারছে না টাকার অভাবে। এ দেশের গরিব মানুষও বিদ্যুতের বিল বকেয়া রাখেনি তাহলে সরকার কয়লা কিনতে পারবে না কেন? হাসি হাসি মুখে তারা বলেন, কয়লা কিনতে আরো দেড় মাস লাগবে। তাহলে আপনারাও আমাদের সাথে আসুন, আপনারাও থাকুন আমাদের সাথে দোজখের আগুনে।
জাতীয় পার্টির মহাসচিব মো: মুজিবুল হক চুন্নু এমপি বলেন, সালমা ইসলাম এমপি নিজেদের টাকা খরচ করে গণমানুষের পাশে থাকেন। অন্যদিকে, এই এলাকায় এক দরবেশ আছেন তিনি লাখ লাখ যুবকের জীবন ধ্বংস করেছেন শেয়ারবাজার লুট করে। তিনি বলেন, করোনা টিকা বাণিজ্যেও সেই দরবেশের নাম চলে এসেছে।
তিনি বলেন, রেন্টাল ও কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎ প্লান্ট নামে ১২ বছরে ৯০ হাজার কোটি টাকা লুটপাট করেছে সরকার। জনগণের সামনে একদিন জবাব দিতেই হবে।
জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান ও ঢাকা জেলা জাতীয় পার্টির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম এমপির সভাপতিত্বে সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা এমপি।
সম্মেলনে বার্ষিক প্রতিবেদন পাঠ করেন ঢাকা জেলা জাতীয় পার্টির সদস্য সচিব ও চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা ইসরাফিল খান খোকন এবং অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন জাতীয় পার্টির যুগ্ম মহাসচিব গোলাম মোহাম্মদ রাজু।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা