২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`

তাইওয়ানকে রক্ষার ঘোষণা যুক্তরাষ্ট্রের, হুঁশিয়ারি চীনের

-

চীনের আক্রমণ থেকে তাইওয়ানকে রক্ষা করার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তিনি বলেন, প্রতিশ্রুতি অনুযায়ীই তাইওয়ানকে সুরক্ষা দেয়ার দায়িত্ব যুক্তরাষ্ট্রের। বেইজিং-তাইপের চলমান উত্তেজনার মধ্যেই নিজের অবস্থান পরিষ্কার করলেন বাইডেন। চীন-তাইওয়ান সাম্প্রতিক উত্তেজনার ভেতরেই এই মন্তব্য করলেন তিনি। সিএনএন টাউন হলে তাইওয়ানকে প্রতিরক্ষা সহায়তার দেয়ার এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তাইওয়ানের প্রতি আমাদের একটা প্রতিশ্রুতি আছে।
বাইডেনের এমন মন্তব্যের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র কার্যত তাইওয়ান ইস্যুতে তাদের দীর্ঘদিনের নীতি থেকে বেরিয়ে এলো। চীন আক্রমণ করলে যুক্তরাষ্ট্র তাইওয়ানকে রক্ষা করবে কি না এমন প্রশ্নের উত্তরে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেন, ‘হ্যা, তাইওয়ানকে রক্ষার ব্যাপারে আমাদের প্রতিশ্রুতি আছে।’
প্রেসিডেন্ট বাইডেন আরো বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের কানাডা ও ইউরোপে ন্যাটো মিত্রদের রক্ষা করার জন্য যেমন একটি প্রতিশ্রুতি রয়েছে ঠিক তেমনি জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, তাইওয়ানের সাথেও রয়েছে। তবে বাইডেনের মন্তব্যের পর হোয়াইট হাউজের মুখপাত্র সাংবাদিকদের জানান, তাইওয়ান ইস্যুতে মার্কিন নীতির কোনো পরিবর্তন হবে না।
এ দিকে এএফপি জানায়, তাইওয়ান নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রকে সতর্কবার্তা দিয়েছে চীন। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তাইওয়ানের বিষয়ে মন্তব্য করার ক্ষেত্রে সাবধান হওয়া উচিত যুক্তরাষ্ট্রের। চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ওয়াং ওয়েনবিন শুক্রবার বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশে বলেন, ‘নিজের অভ্যন্তরীণ কোনো বিষয়ে চীন কখনো আপস করে না। আমরা আশা করব, ওয়াশিংটন বেইজিংয়ের এই নীতিকে সম্মান করবে এবং ভবিষ্যতে তাইওয়ান ইস্যুতে কোনো রকম মন্তব্য ও পদক্ষেপ নেয়ার ক্ষেত্রে আরো সতর্ক হবে।’
তবে জো বাইডেনের সম্প্রতিক মন্তব্যকে স্বাগত জানিয়েছে তাইওয়ানের ক্ষমতাসীন সরকার। দেশটির প্রেসিডেন্টের দফতরের মুখপাত্র জেভিয়ার চ্যাং শুক্রবার এক বিবৃতিতে এ সম্পর্কে বলেন, যুক্তরাষ্ট্র সরকার আরেকবার ঘোষণা করল- তাইওয়ানের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের বন্ধুত্ব পাথরের মতো মজবুত।’ গত কয়েক মাসে রেকর্ডসংখ্যক চীনা যুদ্ধবিমান তাইওয়ানের আকাশ প্রতিরক্ষা জোনে অনুপ্রবেশ করে। এমন পরিস্থিতিতে ওই অঞ্চলে যুদ্ধাবস্থা বিরাজ করছে। সম্প্রতি দ্বীপটির প্রেসিডেন্ট সাই ইং-ওয়েন বলেন, তাইওয়ান কখনো চীনের কাছে মাথা নত করবে না। তাইওয়ানকে নিজেদের দ্বীপ অঞ্চল বলে দাবি করে আসছে চীন। কিন্তু তাইওয়ান নিজেদের আলাদা রাষ্ট্র বলে আসছে।
তবে মার্কিন প্রেসিডেন্টের এমন মন্তব্যের পরে হোয়াইট হাউজের এক মুখপাত্র কয়েকটি মার্কিন সংবাদমাধ্যমের কাছে দাবি করেন, তাইওয়ান ইস্যুতে জো বাইডেনের মন্তব্য যুক্তরাষ্ট্রের নীতি পরিবর্তনের ইঙ্গিত দেয় না। অবশ্য তাইওয়ানের সাথে সাম্প্রতিক উত্তেজনা বৃদ্ধির পেছনে যুক্তরাষ্ট্রকে দায়ী করে আসছে চীন। তাইওয়ানকে নিজেদের একটি প্রদেশ বলে মনে করে থাকে বেইজিং।
অন্যদিকে চীনের প্রদেশ নয়, বরং নিজেকে একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র বলে মনে করে থাকে তাইওয়ান। তাইওয়ান পূর্ব এশিয়ার একটি দ্বীপ, যা তাইওয়ান প্রণালীর পূর্বে চীনা মূল ভূখণ্ডের দক্ষিণ-পূর্ব উপকূলে অবস্থিত। গত এক বছরেরও বেশি সময় ধরে চীন বারবার তাদের আকাশসীমা লঙ্ঘন করছে বলে অভিযোগ করে আসছে দ্বীপটি। চলতি অক্টোবর মাসের প্রথম সপ্তাহে চার দিনে তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা সীমানার মধ্যে প্রায় ১৫০টি যুদ্ধবিমান পাঠিয়েছিল চীন। এরপর থেকেই অঞ্চলটিতে তীব্র উত্তেজনা বিরাজ করছে।


আরো সংবাদ



premium cement