২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`

তিউনিসিয়াকে গণতন্ত্রে ফেরার আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের

প্রধানমন্ত্রীকে পদত্যাগে বাধ্য করতে হেনস্তার অভিযোগ; প্রেসিডেন্ট কায়েস সাঈদকে পরামর্শ দিচ্ছে মিসর ও আমিরাত
কায়েস সাঈদ; অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন -

তিউনিসিয়াকে গণতন্ত্রের পথে ফেরার আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ২৯ জুলাই বৃহস্পতিবার মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন এই আহ্বান জানিয়েছেন। বৃহস্পতিবার আলজাজিরা টেলিভিশনকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তিউনিসিয়ায় সম্প্রতি দেশটির সংবিধানপরিপন্থী যেসব ঘটনা ঘটেছে, সে ব্যাপারে তিনি উদ্বিগ্ন। এ দিকে প্রধানমন্ত্রী হিশাম মেশিশিকে পদত্যাগে বাধ্য করা এমনকি এ জন্য তাকে শারীরিকভাবে হেনস্তা করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। অবশ্য হিশাম মেশিশি এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
২০২১ সালের ২৫ জুলাই সেনা সমর্থন নিয়ে তিউনিসিয়ার প্রধানমন্ত্রী হিশাম মেশিশিকে বরখাস্ত করেন প্রেসিডেন্ট কায়েস সাঈদ। এক মাসের জন্য পার্লামেন্টও স্থগিতের ঘোষণা দেন তিনি। তার এমন পদক্ষেপকে বিরোধীরা ‘অভ্যুত্থান’ হিসেবে অভিহিত করেছে। অন্য দিকে প্রেসিডেন্টের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে কেউ বিক্ষোভ বা সহিংসতার কথা চিন্তা করলে সশস্ত্র বাহিনী বুলেট দিয়ে তার জবাব দেবে বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন কায়েস সাঈদ। একই সাথে এক মাসের জন্য কারফিউ ঘোষণা করেছেন তিনি।
এমন পরিস্থিতিতেই বৃহস্পতিবার দেশটিকে গণতান্ত্রিক পথে ফেরার আহ্বান জানালেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন বলেন, তিউনিসিয়ার প্রেসিডেন্ট প্রশাসনিক ক্ষমতা দখলের পর তিনি তাকে দেশটিকে গণতান্ত্রিক পথে ফেরানোর আহ্বান জানিয়েছেন।
পদত্যাগের জন্য প্রধানমন্ত্রীকে হেনস্তার অভিযোগ
পদত্যাগ করার আগে তিউনিসিয়ার পদচ্যুত প্রধানমন্ত্রী হিশাম মেশিশিকে হেনস্তার অভিযোগ উঠেছে। বৃহস্পতিবার স্থানীয় বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে এ অভিযোগ করা হয়। তবে হিশাম মেশিশি তাকে হেনস্তার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। খবরে বলা হয়, পদত্যাগ করতে রাজি না হওয়ায় প্রধানমন্ত্রীকে শারীরিকভাবে হেনস্তা করা হয়। হেনস্তার পর হিশাম পদত্যাগ করতে রাজি হন।
মিডল ইস্ট আইয়ের খবর অনুসারে, রোববার তিউনিসিয়ার পদচ্যুত প্রধানমন্ত্রী হিশাম মেশিশিকে দেশটির প্রেসিডেন্ট কায়েস সাঈদ তার প্রাসাদে ডেকে পাঠান। হিশাম ওই প্রাসাদে গেলে তাকে পদচ্যুত করার কথা জানান কায়েস সাঈদ। এ ছাড়া দেশটির পার্লামেন্ট স্থগিত করা এবং দেশটির শাসন চালাতে একটি কর্তৃপক্ষ গঠনের ঘোষণা দেন তিনি। হিশাম মেশিশির একটি ঘনিষ্ঠ সূত্র মিডল ইস্ট আইকে জানিয়েছে, মেশিশির সাথে থাকা নিরাপত্তাকর্মীরা ওই সাংবিধানিক অভ্যুত্থানের বিষয়ে কিছু জানতেন না। অন্য দিকে তিউনিসিয়ার সেনাবাহিনী এ বিষয়ে আগে থেকে অবহিত ছিল।
অন্য দিকে করোনা চিকিৎসার পর মাত্র হাসপাতাল ছাড়ার কারণে পার্লামেন্টের স্পিকার ও বৃহত্তম রাজনৈতিক দল আন নাহদার প্রধান রশিদ ঘানুশি প্রেসিডেন্টের আহ্বান এড়াতে সক্ষম হন। হিশাম মেশিশির ঘনিষ্ঠ সূত্র জানায়, হিশাম মেশিশিকে পদত্যাগ করতে বলা হলে তিনি প্রথমে অস্বীকার করেন। বারবার পদত্যাগ করতে অস্বীকারের পর তাকে হেনস্তা করা হয়।
পরে তিনি পদত্যাগ করতে রাজি হন। তবে পদত্যাগের পর জনসম্মুখে দেখা না যাওয়ায় তার আঘাত কতটুকু গুরুতর তা প্রকাশ্য হয়নি। হিশাম মেশিশি বর্তমানে তার বাড়িতেই রয়েছেন। স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, তাকে গৃহবন্দী রাখা হয়েছে। তবে এ তথ্যও তিনি অস্বীকার করেছেন।
মিডল ইস্ট আই হিশাম মেশিশির ঘনিষ্ঠ সূত্রে আরো জানতে পেরেছে, মিসরের নিরাপত্তা কর্মকর্তারা ওই সময় তিউনিসিয়ার প্রেসিডেন্ট প্রাসাদে উপস্থিত ছিলেন এবং পুরো সময় কায়েস সাঈদকে পরামর্শ দিয়ে আসছিলেন। ওই সব সূত্র আরো জানিয়েছে, মিসরের সেনাবাহিনীর কর্মকর্তাদের তিউনিসিয়ায় পাঠিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট আবদুল ফাত্তাহ আল-সিসি। সিসিকে এ ব্যাপারে সমর্থন করেছেন আবুধাবির যুবরাজ মোহাম্মদ বিন জায়েদ আল-নাহিয়ান।


আরো সংবাদ



premium cement