২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`

ক্ষতিপূরণ দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সন্ত্রাসী তালিকামুক্ত হচ্ছে সুদান

-

সন্ত্রাসবাদে মদতদাতা দেশের তালিকা থেকে সুদানকে সরিয়ে নেয়া হবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সোমবার এক টুইট বার্তায় তিনি জানান, খার্তুমের সরকার হামলার শিকারদের ক্ষতিপূরণ পরিশোধে রাজি হওয়ায় এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
ট্রাম্প জানান, সুদান সরকার ৩৩ কোটি ৫০ লাখ ডলার পরিশোধে রাজি হয়েছে। সুদানের নতুন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার মনে করে, যুক্তরাষ্ট্রের এই তালিকা থেকে বাদ পড়লে বিদেশী বিনিয়োগ পাওয়ার সুযোগ বাড়বে। আর এতে দেশটির অর্থনীতির উন্নতি হবে।
দীর্ঘ দিনের শাসক ওমর আল বশির ক্ষমতায় থাকার সময়ে ১৯৯৩ সালে সুদানকে সন্ত্রাসবাদে মদদদাতা দেশের তালিকায় যোগ করে যুক্তরাষ্ট্র। ওয়াশিংটনের অভিযোগ ছিলÑ বশিরের সরকার সন্ত্রাসী গ্রুপগুলোকে সমর্থন দেয়। যুক্তরাষ্ট্রের ওই তালিকাভুক্ত হওয়ায় সুদান কৌশলগতভাবে ঋণ মওকুফ এবং আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে জরুরি অর্থ বরাদ্দ পাওয়ার অযোগ্য হয়ে পড়ে।
বিক্ষোভের জেরে সেনা হস্তক্ষেপে গত বছরের আগস্টে ওমর আল বশির নেতৃত্বাধীন সরকারের পতনের পর সুদানের ক্ষমতায় আসে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। ওই সরকার দায়িত্ব নিয়েই যুক্তরাষ্ট্রের সন্ত্রাসবাদে মদতদাতা দেশগুলোর তালিকা থেকে নিজেদের সরিয়ে নেয়াকে শীর্ষ অগ্রাধিকার তালিকায় নিয়ে আসে।
সোমবার টুইট বার্তায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প লেখেন, ‘অভাবনীয় উন্নতি করা সুদানের নতুন সরকার সন্ত্রাসের শিকার মার্কিন নাগরিক ও তাদের পরিবারগুলোর জন্য ৩৩ কোটি ৫০ লাখ ডলার পরিশোধে রাজি হয়েছে। একবার জমা হয়ে গেলেই আমি সুদানকে সন্ত্রাসে মদদদাতা দেশের তালিকা থেকে সরিয়ে নেবো। দীর্ঘকাল পর অবশেষে মার্কিন নাগরিকরা ন্যায়বিচার পাচ্ছে আর সুদানের জন্য এটা বড় পদক্ষেপ।’ তবে প্রেসিডেন্ট আনুষ্ঠানিকভাবে এই তালিকা থেকে সুদানকে সরিয়ে নেয়ার পর ওই সিদ্ধান্ত মার্কিন কংগ্রেসের অনুমোদন পেতে হবে।
ট্রাম্পের টুইটার পোস্টের কিছুক্ষণ পরই মার্কিন প্রেসিডেন্টকে ধন্যবাদ জানিয়ে টুইট করেন সুদানের অন্তর্বর্তীকালীন প্রধানমন্ত্রী আবদুল্লাহ হামদক। ওই পোস্টে তিনি বলেন, সুদানের কর্তৃপক্ষ এখন অপেক্ষায় আছে কবে প্রেসিডেন্ট কংগ্রেসকে আনুষ্ঠানিকভাবে তার সিদ্ধান্ত জানাবেন আর কংগ্রেসে তা অনুমোদিত হবে। এ জন্য সুদানকে বহু মূল্য দিতে হয়েছে বলেও জানান তিনি।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, যুক্তরাষ্ট্রের এই সিদ্ধান্ত সুদানের প্রশাসন এবং জনগণের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত হলে সুদানের অর্থনৈতিক উন্নয়নের সুযোগ তৈরি হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এ ছাড়া সন্ত্রাসবাদে মদদদাতা দেশের তালিকা থেকে সরানোর পর সুদান ইসরাইলের সাথেও সম্পর্ক স্থাপন করে ফেলতে পারে বলে অনেকেই ধারণা করছেন। যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় সংযুক্ত আরব আমিরাত ও বাহরাইন গত কয়েক সপ্তাহের মধ্যে একই ধরনের চুক্তি করার পর সুদানও একই পদক্ষেপ নিতে পারে বলে অনেক বিশ্লেষকই ধারণা করছেন।


আরো সংবাদ



premium cement