১০ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১, ০১ জিলকদ ১৪৪৫
`


অবৈধভাবে জ্যামার বুস্টার বিক্রির অভিযোগে গ্রেফতার ২

-

রাজধানীর মোহাম্মপুরে অভিযান চালিয়ে বিপুল অবৈধ জ্যামার, রিপিটার এবং নেটওয়ার্ক বুস্টারসহ দু’জনকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-৩। গ্রেফতারকৃতরা হলেন- অবৈধ জ্যামার ও নেটওয়ার্ক বুস্টার বিক্রয়কারী আবু নোমান (২৮) ও সোহেল রানা (৩৭)। গত শনিবার মধ্যরাতে র্যাব-৩ এর একটি দল ও বিটিআরসির সমন্বয়ে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করে বলে জানিয়েছে র্যাব। এ সময় তাদের কাছ থেকে চারটি মোবাইল নেটওয়ার্ক জ্যামার, ২৪টি জ্যামার এন্টিনা, তিনটি পাওয়ার ক্যাবল, তিনটি মোবাইল নেটওয়ার্ক বুস্টার, নয়টি বুস্টারের আউটডোর এন্টিনা, ২৬টি বুস্টারের ইনডোর এন্টিনা, ৩৭টি বুস্টারের ক্যাবল, একটি ল্যাপটপ উদ্ধার করা হয়।
র্যাব জানায়, অবৈধভাবে চীন থেকে জ্যামার আনছে একটি চক্র। এগুলো ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কাছে বিক্রি করা হচ্ছে। এই জ্যামার ব্যবহার করে খুব সহজে যেকোনো এলাকার মোবাইল নেটওয়ার্ক অচল করে দেয়া যায়। এর পেছনে দেশে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টির পাঁয়তারা দেখছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
গতকাল রোববার দুপুরে রাজধানীর কাওরানবাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে র্যাব-৩ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে আমরা জানতে পারি, অবৈধ জ্যামার ও নেটওয়ার্ক বুস্টার বিক্রয়কারী চক্রের কিছু সদস্য দীর্ঘদিন ধরে রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকায় বিনা অনুমতিতে অবৈধ জ্যামার ও নেটওয়ার্ক বুস্টার বিক্রয় করে আসছে। এরই প্রেক্ষিতে র্যাবের একটি দল বিটিআরসির প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে শনিবার রাত পৌনে ১টায় মোহাম্মদপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে অবৈধ জ্যামার ও নেটওয়ার্ক বুস্টার বিক্রয়কারী ওই দুজনকে গ্রেফতার করা হয়।
তিনি বলেন, চক্রটি গত কয়েক বছর ধরে চীন থেকে জাহাজে করে জ্যামার বুস্টার নিয়ে আসছিল। পরে তারা এগুলো বিভিন্ন ব্যক্তি প্রতিষ্ঠানের কাছে বিক্রি করত। এসব জ্যামার বিক্রির অনুমোদন বিটিআরসি দেয়নি।থ এগুলো অবৈধভাবে দেশে আনা হয়েছিল। থথবিটিআরসির অনুমোদন ছাড়া এসব যন্ত্র এবং যন্ত্রাংশ ক্রয়-বিক্রয় বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী দণ্ডনীয় অপরাধ। কোনো অপরাধী নেটওয়ার্ক জ্যামার ব্যবহার করে অপরাধ সংঘটিত করলে ভুক্তভোগীরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাহায্য নিতে কোনো মোবাইল নেটওয়ার্ক পাবেন না। কোনো স্থানে জ্যামার থাকলে আশপাশের প্রচুর গ্রাহক নেটওয়ার্ক সংযোগ পায় না। অবৈধ বুস্টার বা রিপিটারও একই ধরনের সমস্যা সৃষ্টি করে। এসব যন্ত্র স্থাপনের ফলে নেটওয়ার্ক ফল করছে, কল ড্রপ হচ্ছে। সবচেয়ে বড় বিষয় হচ্ছে নিরাপত্তা ঝুঁকি।
আরিফ মহিউদ্দিন জানান, এ পর্যন্ত ২০০ জ্যামার তারা বিক্রি করেছে বলে আমাদের কাছে জানিয়েছে। এছাড়াও ব্যক্তি ও কিছু প্রতিষ্ঠানের সন্ধান মিলেছে। যারা বিভিন্ন সময় এই চক্রটির কাছ থেকে মোবাইল নেটওয়ার্ক নিয়ন্ত্রণের এসব যন্ত্র কিনেছে।
র্যাব কর্মকর্তা জানান, গ্রেফতারকৃত নোমানের আইটি স্টল.কম.বিডি নামে ই-কমার্স ওয়েবসাইট ও ফেসবুক পেজ রয়েছে। সোহেল রানার সোআইএম বিডি নামে ই-কমার্স ওয়েবসাইট ও ফেসবুক পেজ রয়েছে। ওই ই-কমার্স ওয়েবসাইট ও ফেসবুক পেজের মাধ্যমে তারা আইপি ক্যামেরা, ডিজিটাল ক্যামেরা ও ইলেকট্রনিক যন্ত্রাংশের পাশাপাশি উচ্চমূল্যে বিভিন্ন ব্যক্তির কাছে জ্যামার ও নেটওয়ার্ক বুস্টারসহ এর যন্ত্রাংশ লাইসেন্স ব্যতীত অবৈধভাবে বিক্রি করে থাকে। জ্যামার ও নেটওয়ার্ক বুস্টার টুজি, থ্রিজি এবং ফোরজি মোবাইল নেটওয়ার্কের কার্যক্ষমতাকে প্রভাবিত করতে সক্ষম। তাদের ক্রেতা বিভিন্ন বহুতল ভবনের বাসিন্দা, মসজিদ কর্তৃপক্ষ বলে আমাদের জানিয়েছে। তবে বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। গ্রেফতার সোহেল রানার বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম ও খুলনা জেলায় দু’টি চেক জালিয়াতির মামলা রয়েছে বলে জানায় র্যাব।

 


আরো সংবাদ



premium cement