২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`

৪০ বছরের পরিশ্রমের ফল ৬০ বছর বয়সে

লিয়োনেল মার্টিনেজ - ফাইল ছবি

গুলির পর গুলি খরচ হয়েছে। তবু পদক আসেনি। বার বার হতাশ হয়েছেন। কিন্তু হাল ছাড়েননি লিয়োনেল মার্টিনেজ। ৪০ বছরের চেষ্টায় অবশেষে সহায় হয়েছে ভাগ্য। পদক জিতেছেন ভেনেজুয়েলার শুটার।

১৯৮৩ সালে প্রথমবার আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছিলেন ৬০ বছরের মার্টিনেজ। শেষ করেছিলেন ৪১তম স্থানে। আন্তর্জাতিক পর্যায় তার সেরা সাফল্যও এসেছিল একই বছরে। প্যান আমেরিকান গেমসে নিজের ট্র্যাপ ইভেন্টে শেষ করেছিলেন অষ্টম স্থানে। তার পর কখনো কোনও প্রতিযোগিতার ফাইনাল রাউন্ডেও পৌঁছতে পারেননি মার্টিনেজ। বার বার ব্যর্থ হলেও হাল ছাড়েননি ভেনেজুয়েলার শুটার। বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপ, বিশ্বকাপ, অলিম্পিক্স- সব বড় বড় প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছেন। কিন্তু ব্যর্থতাই সঙ্গী হয়েছে তার।

চার দশক ধরে ব্যর্থ হয়েও হাল ছাড়েননি। প্রিয় শুটিংকে আঁকড়েই জীবনে এগিয়ে যেতে চেয়েছেন। ১৯৮৪ সালের লস অ্যাঞ্জেলস অলিম্পিক্সে পদক জয়ের অন্যতম দাবিদার ছিলেন মার্টিনেজ। পারেননি। একটা পদকের জন্য চার দশক ধরে ছুটে বেরিয়েছেন গোটা পৃথিবী। ছোটাই সার। একটার পর একটা প্রতিযোগিতা থেকে খালি হাতে ফিরেছেন। সমালোচনা, গঞ্জনা কম সহ্য করতে হয়নি। প্রশ্ন উঠেছে তার দক্ষতা নিয়ে। তবু নিজের উপর বিশ্বাস হারাননি। জাতীয় দল থেকে বাদ পড়েছেন। তাতেও অনুশীলন বন্ধ করেননি। নিশানা লক্ষ্য করে গুলি ছুড়ে গিয়েছেন দিনের পর দিন। মাসের পর মাস। বছরের পর বছর। দশকের পর দশক।

শুধু একটা পদক। যেকোনো একটা আন্তর্জাতিক পদককে পাখির চোখ করে উৎসাহিত করেছেন নিজেকে। চার দশক অপেক্ষার পর অবশেষে পেলেন সেই সাফল্য। এবারের প্যান আমেরিকান গেমসে মার্টিনেজ অংশগ্রহণ করেছিলেন ব্যক্তিগতভাবে। পদক হিসেবে কেউ রাখেননি তাকে। তাতে অবশ্য মার্টিনেজের কিছু যায় আসেনি। গত চার বছরে এ সব অভ্যাস হয়ে গিয়েছে তার। যারা তাকে হিসাবের মধ্যে রাখেননি, তাদের হিসাব মেলাতেও দেননি ৬০ বছরের শুটার।

ট্র্যাপ ইভেন্টের প্রাথমিক পর্বের তিন রাউন্ডে ২৩, ৪৬ এবং ৬৯ পয়েন্ট স্কোর করে পঞ্চম হয়ে ফাইনালে উঠেছিলেন মার্টিনেজ। ফাইনালে তার স্কোর ৪২। ১ পয়েন্টের জন্য সোনা হাতছাড়া হয়েছে তার। এসেছে রুপার পদক। এটাই বা কম কী! চার দশক ধরে যার গুলি নিশানায় পৌঁছায়নি, তার গলায় পদক। মার্টিনেজ নিজেই বিশ্বাস করতে পারেননি। কাঙ্ক্ষিত সাফল্যে ধরে রাখতে পারেননি চোখের পানি।

জীবনের প্রথম আন্তর্জাতিক পদক ছাড়া আরো একটা প্রাপ্তি হয়েছে তার। ১৯৮৪ সালের অলিম্পিক্সে ভেনেজুয়েলার প্রতিনিধিত্ব করা মার্টিনেজকে দেখা যাবে প্যারিস অলিম্পিক্সেও। রুপা জয়ের সুবাদে একটা অলিম্পিক্স কোটা জিতেছেন তিনি। ব্যক্তিগতভাবে জিতেছেন। যা একান্তভাবেই ৬০ বছরের শুটারের প্রাপ্তি। ভেনেজুয়েলার শুটিং সংস্থা জানিয়েছে, আগামী বছর প্যারিস অলিম্পিক্সে মার্টিনেজ দেশের হয়েই প্রতিনিধিত্ব করবেন।
সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা


আরো সংবাদ



premium cement