আবার বিক্ষোভ শুরু হয়েছে আরব বসন্তের সূতিকাগার তিউনিসিয়ায়। রাজধানী তিউনিস ও উপকূলীয় শহর সুসাসহ দেশটির অন্যান্য শহরে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। আরব বসন্তের ১০ম বর্ষপূর্তির মধ্যেই শনিবার রাতে বিক্ষোভকারীরা বিভিন্ন শহরের রাস্তায় নেমে আসে।
১০ বছর আগে তিউনিসিয়ার সাধারণ মানুষের বিক্ষোভে দেশটির দীর্ঘকালীন একনায়ক জাইনুল আবেদিন বেন আলীর পতন হয়। তিউনিসিয়ার এই বিপ্লব পরে পুরো আরব বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে। আরব বিশ্বের বিভিন্ন দেশের একনায়কদের বিরুদ্ধে জনতার এই বিপ্লব ‘আরব বসন্ত’ নামে পরিচিতি পায়।
এর আগে শুক্রবার সিলিয়ানা ও অন্যান্য শহরে বিক্ষোভ শুরু হয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক মেষপালককে এক পুলিশ কর্মকর্তার তিরস্কার ও নির্যাতনের ভিডিও ছড়িয়ে পড়লে এই বিক্ষোভ শুরু হয়। ওই মেষপালকের ভেড়া স্থানীয় সরকারি কার্যালয়ের ভেতর ঢুকে পড়েছিল।
রাজধানী তিউনিস থেকে ১৩০ কিলোমিটার দূরের ওই শহরে রাস্তায় ব্যারিকেড দিয়ে ও আগুন জ্বালিয়ে প্রতিবাদ করেন বিক্ষোভকারীরা।
এই বিক্ষোভকে প্রধানমন্ত্রী হিশাম মাশিশির সরকারের জন্য চ্যালেঞ্জ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। এর আগে শনিবার, মন্ত্রীসভায় পরিবর্তনের অংশ হিসেবে স্বরাষ্ট্র, বিচার ও জ্বালানিসহ নতুন ১২ মন্ত্রীকে তিনি নিয়োগ করেন।
সুসা শহরের প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, টায়ার পুড়িয়ে রাস্তা অবরোধ করা ক্ষুব্ধ বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে নিরাপত্তা বাহিনী টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ করেছে।
নিরাপত্তা বাহিনী জানিয়েছে, সুসা শহরের দোকানপাট ভাঙচুর করা হয়েছে। এছাড়া সুসার কাছে কিলয়া কবিরা শহরেও সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়েছে।
এক দশক আগে বেকারত্ব, দারিদ্র্য, দুর্নীতি ও অবিচারের বিরুদ্ধে বিপ্লবের মাধ্যমে তিউনিসিয়ায় গণতান্ত্রিক শাসনের সূচনা ও এর ধারাবাহিকতা থাকলেও দেশটির অর্থনৈতিক অবস্থা এখনো শোচনীয়। দুর্বল সরকারি সেবা ব্যবস্থাপনার সাথে সাথে দেশটির অর্থনৈতিক অবস্থা মারাত্মক বিপর্যয়ের প্রান্তে রয়েছে।
রাজধানী তিউনিসের আত-তাদামিন, মাললাসিন, ফুশানা, সিজুমিসহ বিভিন্ন এলাকায় বিক্ষোভ হচ্ছে। এছাড়া কিফ ও বিনজার্তে শহরে রাতে বিক্ষোভ ও দাঙ্গার ঘটনা ঘটেছে।
এ দিকে তিউনিসিয়ার বিপ্লবের ১০ বছর পূর্তিতে কোনো প্রকার আয়োজন করা হয়নি। উত্তর আফ্রিকার দেশটিতে করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে চারদিনের লকডাউন দেয়া হয়েছিল।
দেশটির নাগরিকরা এই চারদিনের লকডাউনের বিষয়ে প্রশ্ন তুলছেন। ২০১০ সালের ১৭ ডিসেম্বর, তিউনিসিয়ার সিদি বুজিদ শহরে ২৬ বছরের যুবক ফল বিক্রেতা মোহাম্মদ বোয়াজিজি পুলিশের অপমানের প্রতিবাদে নিজের শরীরে আগুন দেন। অগ্নিদগ্ধ বোয়াজিজি পরে মৃত্যুবরণ করেন।
বোয়াজিজির মৃত্যু তিউনিসিয়ায় জনসাধরণের মাঝে বিক্ষোভের সূচনা করে। বিক্ষোভের মুখে ২০১১ সালের ১৪ জানুয়ারি তিউনিসিয়াকে দীর্ঘ ২৩ বছর শাসন করা একনায়ক জাইনুল আবেদিন বেন আলী ক্ষমতা ত্যাগ করার ঘোষণা দেন।
সূত্র : আলজাজিরা
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা