১৭ মে ২০২৪, ০৩ জৈষ্ঠ ১৪৩১, ০৮ জিলকদ ১৪৪৫
`


বাইপাস সার্জারির জন্য কৃত্রিম রক্তনালী তৈরির চেষ্টা

বাইপাস সার্জারির জন্য কৃত্রিম রক্তনালী তৈরির চেষ্টা - প্রতীকী ছবি

বাইপাস সার্জারির জন্য শরীরের অন্য অংশ থেকে রক্তনালী নেন সার্জনরা৷ তবে অনেকসময় এমন হয় যখন রোগীর শরীরে উপযুক্ত রক্তনালী পাওয়া যায় না৷ তাই অনেকদিন ধরেই কৃত্রিম রক্তনালী তৈরির চেষ্টা চলছে৷

জার্মানির কিল বিশ্ববিদ্যালয়ে এ নিয়ে গবেষণা হচ্ছে৷ কয়েক বছরের মধ্যে এমন রক্তনালী বাজারে আসতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে৷

ভাস্কুলার সার্জন ডা. রুফেন ব্যার্ন্ট বলেন,‘কৃত্রিম ধমনী দিয়ে অস্ত্রোপচার অনেক পুরনো এক স্বপ্ন৷ কার্ডিওভাস্কুলার সার্জন হিসেবে আপনি অবশ্যই এমন এক অবস্থার মুখোমুখি হবেন যখন আপনি রোগীকে সুস্থ করতে চাইবেন, কিন্তু হৃদযন্ত্র বা পায়ে বাইপাস সার্জারির জন্য উপযুক্ত উপাদান খুঁজে পাবেন না৷ তাই অনেকদিন ধরে গবেষণাগারে বায়োআর্টিফিসিয়াল ধমনী সৃষ্টির চেষ্টা চলছে৷ সেটি সম্ভব হলে আমরা যেসব রোগীর শরীরে বাইপাস সার্জারি করার জন্য উপযুক্ত রক্তনালী নেই তাদেরও সার্জারি করতে পারবো৷'

একটি প্রিন্টার দিয়ে একইসাথে দুটি তরল চেপে বায়োমেটেরিয়াল দিয়ে তৈরি প্রায় ৩০ সেন্টিমিটার লম্বা নমনীয় এক নল তৈরির পরিকল্পনা করছেন গবেষকেরা৷

তরলগুলোর মধ্যে একটি তথাকথিত ‘বায়োইঙ্ক'৷ এটি এক ধরনের জৈব কালি, যা মানুষের ভাস্কুলার কোষসমৃদ্ধ৷ এর ভিত্তি হলো ‘অ্যালজিনেট', যেটি বাদামি শেওলা দিয়ে তৈরি হয়৷ হিউম্যান বায়োলজিস্ট মার্টিন আলব্রেশট বলেন,‘অ্যালজিনেটের সমস্যা হলো, কোষগুলো এর সাথে ভালোভাবে যুক্ত হতে পারে না৷ সে কারণে আমরা পেপটাইড যোগ করি, যেটা একধরনের প্রোটিন৷ কোষগুলো পেপটাইডের সাথে যুক্ত হতে পারে৷ এছাড়া পেপটাইড কোষকে সঙ্কেত পাঠাতে পারে বলে কোষগুলো বেঁচে থাকতে ও বংশবৃদ্ধি করতে পারে৷'

শুরুতে সাধারণ থ্রিডি প্রিন্টার ব্যবহার করলেও গবেষকদল এখন একটি রোবটের হাত ব্যবহার করছেন, যার সাথে বিশেষভাবে তৈরি দুই চেম্বারবিশিষ্ট প্রিন্টহেড যুক্ত রয়েছে৷ একটি চেম্বারে থাকে বায়োইঙ্ক, অন্যটিতে ক্যালসিয়াম ক্লোরাইড৷

গবেষকেরা ইতোমধ্যে অসংখ্যবার পরীক্ষামূলক প্রিন্ট করেছেন৷ প্রিন্ট হওয়া বাইপাসের পুরুত্ব যেন সব জায়গায় একই থাকে সেটা নিশ্চিত করা একটা চ্যালেঞ্জ৷

কৃত্রিমভাবে তৈরি বাইপাস যতটা সম্ভব অপরিবর্তনশীল হতে হবে যেন তা রোগীর শরীরে কয়েক দশক কার্যকর থাকতে পারে৷

প্রিন্ট হওয়ার পর বাইপাসকে কয়েকদিনের জন্য ৩৭ ডিগ্রি তাপমাত্রার পুষ্টিকর দ্রবণে চুবিয়ে রাখতে হবে৷ সেল বায়োলজিস্ট কারিনা সিট্টা বলেন,‘আমরা সাধারণত ঘরের তাপমাত্রায় প্রিন্ট করি৷ কিন্তু কোষগুলোকে এই তাপমাত্রায় অনেকদিন রাখলে কোষের ক্ষতি হতে পারে৷ সে কারণে আমরা প্রিন্ট করার পর বাইপাসকে ৩৭ ডিগ্রি তাপমাত্রার বায়োরিয়েক্টরে রেখে দেই৷'

সূত্র : ডয়েচে ভেলে/ মাটিয়ু গ্রেবা


আরো সংবাদ



premium cement