২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫
`


সুস্বাদু ইলিশ : বঞ্চিত জনতা

-

১৬-৯-২০২২ দৈনিক নয়া দিগন্তের ৮-এর পাতায় শিরোনাম : পাথরঘাটায় জেলের জালে ৩ কেজির রাজা ইলিশ। অবশ্য এমন ইলিশের খবর সতত শোনা যায়; ছেলেবেলায় হাটবাজারে গেলেই বাবা ইলিশ আনতই। তখন দাম ছিল টাকার সাথে আনার হিসেবে। এক টাকা এত আনা, দুই টাকা অতো আনা। একজন দিনমজুর কিংবা একজন গরিব মানুষ হাটেবাজারে খড়ি বেচতে গেলেও একটা ইলিশের গলায় দড়ি ঝুলিয়ে নিয়ে আসত। এই তো স্বাধীনতার পরও মাত্র দুই-তিন টাকা হতে পাঁচ-সাত টাকায় ইলিশ পাওয়া যেত। আজ বাংলাদেশের সম্পদ আল্লাহ পাকের দেয়া এতবড় নেয়ামত থেকে কোটি কোটির অঙ্কে মানুষ বঞ্চিত। যারা হীরক কপালি তারা ইচ্ছে করলে প্রতি সন্ধ্যায় ইলিশ খেতে পারে। শুধু তাই নয়, বাংলা নববর্ষের প্রথম দিনে দুই-তিন হাজার টাকা কেজির ইলিশ দিয়ে কমপক্ষে ১৫ কোটি বঞ্চিত মানুষকে দেখিয়ে দেখিয়ে (টিভির মাধ্যমে) রসিয়ে রসিয়ে পান্তা দিয়ে খায়। এত গেল দেশের হীরক কপালিদের কথা।
দেশের ইলিশ দেশের মানুষের মুখ মুছে বৈদেশিক মুদ্রার নামে যাচ্ছে বিদেশে। যারা নিজেরা খাবে এবং দেশের মানুষকে বঞ্চিত করে পরদেশী বন্ধুদেরকে খাওয়াবে। আর বঞ্চিত দেশবাসী না খেয়েই তাদের জন্য হাত তুলে শোকরানার দোয়া করবে? কেন...? দেশে কত কিছুতেই তো ভর্তুকি দেয়া হচ্ছে, হাজার লাখ কোটি টাকা লুটপাট হয়ে বিদেশে পাচার হয়ে যাচ্ছে; দু-একটি মামলা মোকদ্দমা হয়ে সাজাপ্রাপ্ত হলেও তারা অর্থবিত্তের কল্যাণে জেলখানাতেও শ্বশুরবাড়ির মেহমানি জীবন যাপন তো করছে। আবার তাদের পাচার করা টাকা ফেরত আনতে না পারার কারণে তাদের আওলাদ বুনিয়াদরা সে অর্থ ভোগ করে শখ মেটাচ্ছে। গোটা দেশের কোটি কোটি বঞ্চিত মানুষের পক্ষে আমি এক বঞ্চিত; কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানাই- দেশের বঞ্চিত আত্মার মানুষগুলোর সহজলভ্যতার জন্য হাজারের অঙ্কে নয়, শ’এর অঙ্কে প্রতি কেজির মূল্য নামিয়ে আনতে। না হলে যাদের মহাসুখে দশ-বিশ তলায় এসি রুমে পৌষের হাড় কাঁপানো শীত এবং ভাদ্রের তাল পাকা গরমে স্নেহময়ী মাতৃক্রোড়ে নি-িদ্র ঘুমে রাত কাটছে, আবার তাদেরই প্রাসাদের নিচে ফুটপাথ কিংবা নর্দমার ঢাকনার উপরে পাষাণ শয্যায় বাহু শিথানে মশার খাদ্য অথবা কাঁথাবিহীন ঘুমের বড়িবিহীন রাজকীয় ঘুম পেড়ে রাত কাবার করছে; যারা পরকালে বিশ্বাসী তারা একটু ভেবে দেখবেন কি যে, উভয়ের হিসাবটা এক মাপের হবে কি না। যদি একমত হয়, তাহলে সোনায় সোহাগা, আর যদি...? বঞ্চিতের দীর্ঘশ্বাস এবং আত্মার হাহাকারে আজ কেউ কর্ণপাত না করলেও মহান মাবুদের সূক্ষ্ম বিচারের মুখোমুখি হতেই হবে।
কাজী মো: গোলজার হোসেন
ইসলামপুর, পায়রাবন্দ
মিঠাপুকুর, রংপুর।


আরো সংবাদ



premium cement