২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`

মানুষের দামের হিসাব কি কেউ রাখে?

-

জাপানে একবার মুলা চাষ করে অনেক লাভবান হয়েছেন একজন কৃষক। ক্ষেতের অর্ধেক মুলা বিক্রি করতেই কাক্সিক্ষত মুনাফা উঠে আসে। তাই তিনি সিদ্ধান্ত নিলেন বাকি অর্ধেক বিক্রি না করে জমি সবার জন্য উন্মুক্ত করে দেবেন যাতে সবাই ফ্রি প্রয়োজন মতো নিতে পারে। কিন্তু দেখা গেল, কেউ একটির বেশি মুলা নিচ্ছে না। কারণ কারো এর অতিরিক্ত প্রয়োজন নেই। যখন প্রশ্ন করা হয় মাত্র একটি নিচ্ছেন কেন? জবাবে তারা বলেছেন, অন্য লোকদের নেয়ার সুযোগ দিতে চাই। এবার বাংলাদেশের কথা কল্পনা করি। সরকার থেকে রাতে ঘোষণা দেয়া হলো তিনজন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত। সবাইকে পরিষ্কার থাকা ও বাইরে মাস্ক পরে চলাচল করতে বলা হলো। অথচ রাতারাতি বাজারে কৃত্রিম ‘মাস্ক সঙ্কট’।
দু’টি খবর আমাদের খুব ভাবাচ্ছে। একটি হলো, তিন বাংলাদেশী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত, অন্যটি হলো হঠাৎ করেই বাজারে মাস্ক ‘সঙ্কট’। একটি প্রাকৃতিক সঙ্কট, আরেকটি আমাদের মতোই মানুষরা তৈরি করেছি। চাইলেই প্রকৃতির সাথে পেরে উঠতে পারি না, তবে চেষ্টার ত্রুটি কেউই করছে না। কিছু দিন আগে এক শ্রেণীর মানুষ পেঁয়াজ মজুদ করে রাখল। ফলে পেঁয়াজের আকাশচুম্বী মূল্য, তবুও আমাদের ‘কিছুই করার ছিল না’। আমরা বেশি দাম দিয়েই পেঁয়াজ কিনতে বাধ্য হলাম। প্রতি রোজার সময় স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি দাম থাকে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের, তবুও আমাদের কিনতেই হয়। অথচ বাজারে সঙ্কট থাকে না কোনো পণ্যের। ফার্মেসিতে কোথাও কোনো মাস্ক নেই। তবে যদি এ দেশে বেঁচে থাকার প্রবল আগ্রহ থাকে তাহলে মাস্ক পাবেন, কিন্তু কয়েক গুণ অতিরিক্ত টাকা আপনাকে গুনতে হবে। ১০-১৫ টাকার যে মাস্কগুলো বাসে-রাস্তায় বিক্রি হতো সেগুলো এখন ৫০ টাকার ওপরে, একবার ব্যবহার করা যায় এরকম মাস্ক ৩০ টাকার ওপরে। আর একটু ভালো কোয়ালিটি নিতে হলে গুনতে হবে ৩০০ টাকার ওপরে, যেটা আগে ছিল মাত্র ৫০-৬০ টাকা।
ব্যবসার এই মৌসুম তো সবসময় আসবে না। তাই ব্যবসা করে নিচ্ছি। সবার দিকে তাকাতে গেলে ব্যবসা হয় না। তাই দাম বাড়িয়ে দিচ্ছি সব কিছুর।’ কিন্তু এটা করতে গিয়ে আমরা যে মানুষের দামই কমিয়ে দিয়েছি, সে হিসাব কি আদৌ কেউ রেখেছেন?
আল সানি
শিক্ষার্থী, সাউথইস্ট বিশ্ববিদ্যালয়


আরো সংবাদ



premium cement