১০ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১, ০১ জিলকদ ১৪৪৫
`


তিন বিদেশী শক্তি আ’লীগকে ক্ষমতায় রাখতে কাজ করেছিল : জি এম কাদের

-

দলের তৃণমূলের নেতাকর্মীদের মতামত উপেক্ষা করে কেন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন তার ব্যাখ্যা দিয়েছেন জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান জি এম কাদের এমপি। নির্বাচনের প্রায় সাড়ে তিন মাস পর কেন্দ্রীয় কমিটির সভায় তিনি বলেছেন, আগেই বুঝেছিলাম, বিএনপির আন্দোলন সফল হবে না। তিন বিদেশী বড় শক্তি আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় রাখতে কাজ করে যাচ্ছে। তাই দলের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলাম। তবে ভোট ভালো হয়নি।
গতকাল (শনিবার) রাজধানীর রমনায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটে জাপার কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভাপতির বক্তব্যে জাতীয় সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা জি এম কাদের এ কথা বলেন। এর আগে গত বছরের ১২ নভেম্বর অনুষ্ঠিত পার্টির বর্ধিত সভায় তৃণমূল নেতারা নির্বাচন বর্জনের পক্ষে মতামত দিয়েছিলেন। তবে আওয়ামী লীগের কাছ থেকে ২৬ আসনে ছাড় পেয়ে নির্বাচনে অংশ নেন জি এম কাদের। সেই নির্বাচনে যাওয়ার প্রেক্ষাপট তুলে ধরে জি এম কাদের বলেন, ৭ জানুয়ারি নির্বাচনের আগে বিদেশী বন্ধুদের সাথে বৈঠক করে পরিষ্কার বুঝেছি, তিনটি বিদেশী বড় শক্তি আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় রাখতে এবং নির্বাচন সফল করতে কাজ করে যাচ্ছে। শুধু তারা নয়, আরো বেশ কয়েকটি বিদেশী শক্তি আওয়ামী লীগের হয়ে কাজ করতে প্রস্তুত ছিল।
নির্বাচনে অংশ নেয়ার প্রশ্নে নেতাকর্মীদের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছিল জানিয়ে জাপা চেয়ারম্যান বলেন, নির্বাচন বন্ধ করে কোনো দেশে সরকার পরিবর্তন সম্ভব নয়। তাই জাতীয় পার্টি নিয়মতান্ত্রিকভাবে রাজনীতি করছে। নির্বাচনের আগে বর্ধিত সভায় নির্বাচনে না যাওয়ার পক্ষে মতামত দেয়া হয়েছিল। ভোটে না গেলে ভবিষ্যতে জাতীয় পার্টিকে টিকিয়ে রাখা যাবে কি না, সন্দেহ ছিল। তাই নির্বাচনে গিয়েছি। বিএনপি এক কোটি লোক নিয়ে রাস্তায় নামলেও আন্দোলন সফল হবে না, তা বুঝতে পেরেছিলাম।

জি এম কাদের বলেন, বিএনপি আন্দোলনে পরাস্ত হয়েছে, আমি তাদের দোষ দিচ্ছি না। দেশের স্বার্থে তারা কাজ করছে; কিন্তু তারা সফল হয়নি। তাদের দোষটা আমার ঘাড়ে চাপিয়ে দিচ্ছে। তারা বলছে, আমি একটা বিশাল নেতা, আমি নির্বাচনে না গেলে নাকি দেশের ভবিষ্যৎই পরিবর্তন হয়ে যেত। আমি নিজেকে এত বড় নেতা মনে করি না। আমি নির্বাচনে যেতাম আর না যেতাম দেশ এভাবেই চলত। এমন পরিস্থিতিই থাকত। আমাকে দোষ দিয়ে নিজেদের দোষ ঢাকার চেষ্টা করবেন না।
গত ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে মাত্র ১১ আসন পেয়েছে জাপা। দলটি আনুষ্ঠানিকভাবে ভেঙেছে। রওশন এরশাদের নেতৃত্বে আরেকটি জাতীয় পার্টি গঠিত হয়েছে। জি এম কাদেরের দল থেকে দুই কো-চেয়ারম্যানসহ কয়েকজন সিনিয়র নেতা রওশনের জাপায় চলে গেছেন। এ প্রসঙ্গে দলের মহাসচিব মো: মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, নির্বাচনের পর অনেক সহকর্মী ভুল বুঝে দূরে সরে গেছেন, ভালো থাকলে দুঃখ নেই। কিন্তু যারা প্রার্থী হলেন না, নির্বাচন করলেন না তারা গেলেন কেন? পল্লীবন্ধুর প্রতিনিধিত্ব করেন গোলাম মোহাম্মদ কাদের। তার নেতৃত্বেই জাতীয় পার্টি ঐক্যবদ্ধ আছে।
বর্ধিত সভায় আরো বক্তব্য রাখেন- জাপার কো-চেয়ারম্যান এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার এমপি, অ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম এমপি, প্রেসিডিয়াম সদস্য মো: হাফিজ উদ্দিন আহমেদ এমপি, অ্যাডভোকেট মো: রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, মোস্তফা আল মাহমুদ, জহিরুল ইসলাম জহির, জহিরুল আলম রুবেল, উপদেষ্টা আশরাফুজ্জামান আশু এমপিসহ বিভিন্ন জেলার প্রতিনিধিরা।


আরো সংবাদ



premium cement