সূচক পতনের মধ্যেই শেয়ারবাজার
ইনটেকের ৭ পরিচালককে ১ কোটি টাকা জরিমানা- অর্থনৈতিক প্রতিবেদক
- ০৫ জুলাই ২০২২, ০০:০০
আগের কার্যদিবসের ধারাবাহিকতায় সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবস গতকাল প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) লেনদেনে অংশ নেয়া বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমেছে। এতে দুই বাজারেই কমেছে মূল্যসূচক। তবে লেনদেন কিছুটা বেড়েছে। মূল্যসূচক ও লেনদেন কমার পাশাপাশি প্রধান শেয়ারাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে তিন ডজনের বেশি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের ক্রয় আদেশের ঘর শূন্য পড়ে। লেনদেনের প্রায় পুরো সময় প্রতিষ্ঠানগুলোর ক্রয় আদেশের ঘর শূন্য অবস্থায় থাকে। এতে দিনের সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে গেছে প্রতিষ্ঠানগুলোর শেয়ার ও ইউনিটের দাম।
বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, এ দিন ডিএসইতে লেনদেন শুরু হয় বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার মাধ্যমে। ফলে লেনদেন শুরুর ৯ মিনিটের মাথায় ডিএসইর প্রধান সূচক ১৭ পয়েন্ট বেড়ে যায়। তবে লেনদেনের শুরু থেকেই পতনের তালিকায় নাম লেখায় মূল্য সূচকে সব থেকে বড় প্রভাব রাখা গ্রামীণফোন। লেনদেন শুরু হতেই এই কোম্পানিটির শেয়ার দাম দিনের সর্বনিম্ন পর্যায়ে চলে যায়। এর আগে ভয়েস কল ও ইন্টারনেট সংযোগে গ্রাহকদের ‘মানসম্মত সেবা দিতে না পারার’ কারণ দেখিয়ে গত বুধবার গ্রামীণফোনের নতুন সিম বিক্রির ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয় বিটিআরসি।
গতকাল ডিএসইর লেনদেনে অংশ নেয়া ১৪৯টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৮২টির। আর ৫০টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। দাম বাড়ার তালিকায় নাম লেখানো প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ছয়টির শেয়ার দাম দিনের সর্বোচ্চ পরিমাণ বেড়েছে। বিপরীতে ৩৯টির দাম দিনের সর্বনিম্ন পরিমাণ কমেছে। এতে প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের চেয়ে ১২ পয়েন্ট কমে ৬ হাজার ৩৪৬ পয়েন্টে নেমে গেছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক ৭ পয়েন্ট কমে ২ হাজার ২৮৩ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর ডিএসই শরিয়াহ আগের দিনের চেয়ে দশমিক ৪১ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৩৮৫ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। মূল্যসূচক কমলেও বাজারটিতে লেনদেনের পরিমাণ কিছুটা বেড়েছে। দিনভর ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৬৬২ কোটি ৬১ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় ৬৫৪ কোটি ৮৩ লাখ টাকা। সে হিসাবে লেনদেন বেড়েছে সাত কোটি ৭৮ লাখ টাকা।
ডিএসইতে টাকার অঙ্কে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে রবির শেয়ার। কোম্পানিটির ২৭ কোটি ৭৯ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা শাহিনপুকুর সিরামিকের ২৪ কোটি ২৪ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। ২৩ কোটি ৭৮ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে মেঘনা ইন্স্যুরেন্স। এ ছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছেÑ ইন্ট্রাকো, বেক্সিমকো, ফরচুন সুজ, ফু-ওয়াং ফুড, তিতাস গ্যাস, এসিআই ফরমুলেশন ও লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশ।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই কমেছে ৪ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ২৮ কোটি ৩৯ টাকা। লেনদেন অংশ নেয়া ২৯১টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১২৩টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১২৮টির এবং ৪০টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
ইনটেকের পরিচালকদের জরিমানা : মূল্য সংবেদনশীল তথ্য গোপনীয়তার মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদেরকে কোম্পানির প্রকৃত অবস্থা সম্পর্কে অন্ধকারে রাখার দায়ে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ইনটেক লিমিটেডের সাবেক পাঁচজনসহ ছয় পরিচালক ও সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালককে এক কোটি টাকা জরিমানা করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। যারা পর্ষদে থাকাকালে বিএসইসির ২০১১ সালে জারিকৃত ন্যূনতম ২ শতাংশ শেয়ার ধারণের নির্দেশনাও পরিপালন করেনি। দোষী ব্যক্তিরা হলেনÑ ইনটেক লিমিটেডের বর্তমান পরিচালক এ টি এম মাহবুবুল আলম, সাবেক পরিচালক মো: শহীদুল আলম, মো: আরিফুর রহমান, মোসলেহ উদ্দীন আহমেদ, মো: আশিকুর রহমান, শামসুল আলম ও সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মির্জা আমিনুল ইসলাম বেগ।
তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগে বলা হয়েছে, সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন সুবিধাভোগী ব্যবসা নিষিদ্ধকরণ বিধিমালায় তালিকাভুক্ত প্রতিটি কোম্পানির কোনো মূল্য সংবেদনশীল তথ্যের বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ৩০ মিনিটের মধ্যে বিএসইসি ও উভয় স্টক এক্সচেঞ্জে পাঠানোর বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এ ছাড়া দু’টি জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় ও একটি অনলাইন পত্রিকায় প্রকাশ করতে হয়। এ সত্ত্বেও ২০১৬ সালের ২২ ডিসেম্বর বার্ষিক সাধারণ সভার (এজিএম) আলোচ্যসূচিতে থাকা কোম্পানির রিসোর্ট প্রজেক্টের বিষয়ে মূল্য সংবেদনশীল তথ্য হিসেবে যথাসময়ে প্রকাশ করেনি। এ ছাড়া ২০১২ সালের ১৭ মে এজিএমের সাধারণ আলোচ্যসূচিতে ভিন্নখাতে ব্যবসা সম্প্রসারণসংক্রান্ত বিষয়ে আলোচনাকে দোষী করা হয়েছে। এর মাধ্যমে ডিএসই লিস্টিং রেগুলেশনস ২০১৫ এর ২৪ ধারা এবং কোম্পানি আইন ১৯৯৪ এর ৫১ ধারার সিডিউল ১ এর পরিপন্থী কাজ করা হয়েছে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা