২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`


ফটো সাংবাদিক লুৎফর রহমান বিনু আর নেই

-

সিনিয়র ফটো সাংবাদিক লুৎফর রহমান বিনু আর নেই। গতকাল দুপুরে তিনি নিজ বাসভবনে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে রাজধানীর ইবনে সিনা হাসপাতালে নেয়ার পথে তিনি মারা যান। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। তার বয়স হয়েছিল ৬৭ বছর। তিনি স্ত্রী, এক ছেলে, এক মেয়েসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। তার দুই সন্তানের মধ্যে ছেলে অস্ট্রেলিয়া এবং মেয়ে যুক্তরাষ্ট্রে থাকেন। গতকাল বাদ আসর রাজধানীর হাজিপাড়া নূর মসজিদে নামাজে জানাজা শেষে তার দাফন সম্পন্ন হয়।
প্রতিভাবান ফটো সাংবাদিক লুৎফর রহমান বিনু ছিলেন জাতীয় প্রেস ক্লাব, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন ও বাংলাদেশ ফটো জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সিনিয়র সদস্য। তিনি সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত ফটো সাংবাদিক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
বিনুর বই থেকে জানা যায়, তার জন্ম ১৯৫৫ সালে ঢাকায়। ১৯৬৯ সালে তিনি আলোকচিত্রী হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। তিনি ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন। ১৯৭৬ সালে পেশাগত জীবন শুরু করেন দৈনিক কিষাণে। তবে এক যুগেরও বেশি সময় দৈনিক সংবাদে কাজ করার মাধ্যমে বিনু একজন আলোকচিত্র সাংবাদিক হিসেবে সুখ্যাতি লাভ করেন। দৈনিক সংগ্রাম, দৈনিক দেশ, মর্নিং পোস্ট, মর্নিং সান এবং দৈনিক ইনকিলাব পত্রিকাতেও তিনি কাজ করেছেন। অনেক বিখ্যাত ছবি তার তোলা। নব্বইয়ে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের প্রচুর ছবিও তারই তোলা। তার আলোকচিত্রের প্রদর্শনী হয়েছে বেশ কয়েকবার। সর্বশেষ দৈনিক ইনকিলাবে সিনিয়র ফটো সাংবাদিক হিসেবে অবসর নেন। এর বাইরে আলোকচিত্র নিয়ে তিনি লিখেছেন বই।
তার উল্লেখযোগ্য প্রকাশনা (ফটো অ্যালবাম ও ছবির বই) ‘ঢাকা-৭১’, ঝঃৎঁমমষব ভড়ৎ উবসড়পৎধপু, ‘আমাদের প্রধানমন্ত্রী’ এবং ‘এ চলার শেষ নেই’ আলোকচিত্রের একেকটি সমৃদ্ধ আকর গ্রন্থ। তার আলোকচিত্রে উঠে এসেছে বিভিন্ন সময়ের ঐতিহাসিক মুহূর্ত।
বিনুর তোলা সংবাদচিত্র ফার ইস্টার্ন ইকোনমিক রিভিউ, দ্য টেলিগ্রাফ, ফ্রন্টলাইন, দ্য হিন্দুস্তান টাইমস, ইন্ডিয়া টুডে ও দ্য স্টেটসম্যানে প্রকাশ হয়েছে। তিনি ১৯৮৮ সালে জাতীয় জাদুঘরের স্বাধীনতা দিবস প্রদর্শনীর বিশেষ পুরস্কার এবং ১৯৮৯ সালে পরিবেশ সাংবাদিকতার ওপর এফইজেবি/এসকাপ পুরস্কার লাভ করেন।
১৯৮৮ সালে এএমআইসি স্কলারশিপ পেয়ে তিনি সিঙ্গাপুরে প্রশিক্ষণ লাভ করেন। আলোকচিত্র সাংবাদিকতার ওপর ১৯৮৬ সালে বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউট থেকেও তিনি প্রশিক্ষণ লাভ করেন। ২০০৪ সালে চীনে অনুষ্ঠিত ওয়ার্ল্ড প্রেস ফটোগ্রাফিতে অংশ নেন।
১৯৮৮ সালে ঢাকায় ও ১৯৮৯ সালে চট্টগ্রামে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ওপর তার একক আলোকচিত্র প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়। তার আলোকচিত্র ১৯৮৯ সালে ব্যাংককে এসকাপ প্রদর্শনীতে স্থান পায়।
বিনুু তার কর্মজীবনে দেশী-বিদেশী বহু রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধান এবং বিশ্ব-ব্যক্তিত্বের ছবি তোলার সুযোগ পেয়েছেন। তাদের মধ্যে রয়েছেন জিয়াউর রহমান, মওলানা ভাসানী, খালেদা জিয়া, জর্জ বুশ, বাদশাহ ফাহাদ, ইয়াসির আরাফাত, ফ্রাঁসোয়া মিতেরা, সুহার্তো, রাজীব গান্ধী, চন্দ্রশেখর, পি ভি নরসীমা রাও, নওয়াজ শরিফ, রানাসিংহে প্রেমাদাসা, মামুন আবদুল গাইয়ুম, পোপ দ্বিতীয় জন পল ও মাদার তেরেসা।
জ্যেষ্ঠ এই সাংবাদিকের মৃত্যুতে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, জাতীয় প্রেস ক্লাব সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন ও সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সভাপতি এম আবদুল্লাহ, মহাসচিব নুরুল আমিন রোকন, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) সভাপতি কাদের গনি চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক মো: শহিদুল ইসলাম, ফটো জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি গোলাম মোস্তফা, সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট নাসিম সিকদার, সাধারণ সম্পাদক কাজল হাজরা পৃথক বিবৃতিতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করে শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করেছেন।


আরো সংবাদ



premium cement
প্রবীণ সাংবাদিক জিয়াউল হক আর নেই নোয়াখালীতে ফের নতুন গ্যাস কূপের সন্ধান, খনন উদ্বোধন বরিশালে তীব্র তাপদাহে ৩ স্কুলছাত্রী অসুস্থ বগুড়ায় জব মেলায় চাকরি পেলেন বেকার প্রকৌশলীরা গণতন্ত্রকে ধ্বংস করার নীলনকশা থামছে না : রিজভী তাজউদ্দীন মেডিক্যাল দুদকের অভিযান : নানা অনিয়ম-দুর্নীতির তথ্য মিলেছে পূর্ব কালুরঘাটে বেইলিব্রিজে টেম্পু চাপায় কলেজশিক্ষার্থী নিহত কুবি শিক্ষকদের ওপর হামলায় নেতৃত্ব দেয়া ছাত্রলীগের ৮ নেতাকর্মী শনাক্ত দিনাজপুরে পরাজিত প্রার্থীর সমর্থক-পুলিশ সংঘর্ষ, গুলিতে নিহত ১ ভারতে মসজিদের ভেতর ইমামকে পিটিয়ে হত্যা তীব্র গরমে কাঁঠালিয়ায় এক শিক্ষার্থী অসুস্থ

সকল