নারায়ণগঞ্জে ৫২ দিনে করোনা কিংবা করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা যাওয়া ৬১ লাশ দাফন ও সৎকারকারী সেই করোনা যোদ্ধা মাকছুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ নিজেই করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। গতকাল শনিবার তার করোনা রিপোর্ট পজেটিভ এসেছে। খোরশেদ একাধারে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপারেশনের ১৩ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর। নয়া দিগন্তকে তিনি বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেছেন, আমি নিজে করোনায় আক্রান্ত হয়েছি। সকলের কাছে দোয়া চাই। আমার জন্য আমার আল্লাহই যথেষ্ট। আল্লাহর ইচ্ছায় আমি করোনা পজেটিভ হয়েছি।
খোরশেদ জানান, আমি শারীরিকভাবে ঠিক আছি, আমার মনোবল অটুট রয়েছে। আমি আশা করি, আগামীতে আমার রিপোর্ট নেগেটিভ আসবে। আমি আবার মানুষের সেবায় এগিয়ে যাবো। আমি আক্রান্ত হলেও আমার টিম ত্রাণ কার্যক্রম, টেলিমেডিসিন সেবা, দাফন ও সৎকার কাজ চালিয়ে যাবে। বাসার দোতলা থেকে আমি তাদের নির্দেশনা দেবো।
তিনি জানান, আমি খবরটা নিজ থেকে এ জন্য দিলাম যারা আমার কাজে হিংসা করে তারা যাতে আমার আক্রান্ত হওয়া নিয়ে কোনো ষড়যন্ত্র না করতে পারে।
জানা যায়, গতকাল শনিবার সকালে করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া ব্যবসায়ী উত্তমকুমার সাহার সৎকার করে এসে খোরশেদ জানতে পারেন তিনি নিজেই এবার করোনায় আক্রান্ত। নারায়ণগঞ্জ শহরের গলাচিপা এলাকার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী উত্তমকুমার সাহা শনিবার রাত সাড়ে ১১টায় মারা যান। তাকে সৎকার করতে স্বজনরা এগিয়ে না আসায় খোরশেদ তার টিম নিয়ে সৎকার কাজ সম্পন্ন করেন। গত ৮ এপ্রিল থেকে গতকাল শনিবার পর্যন্ত উত্তমকুমারসহ ৬১ জনকে দাফন ও সৎকার কাজ করে খোরশেদ টিম।
তাদের কেউ মারা গেছেন করোনায় আক্রান্ত হয়ে, কেউ আবার করোনা উপসর্গ নিয়ে। তাদের কেউই কাউন্সিলর খোরশেদের স্বজন নন। কিংবা তিনিও তাদের কেউ নন। অথচ ৬১ লাশের ভার নিলেন তিনি। মুসলিমদের দিলেন নামাজে জানাজা, হিন্দুদের করলেন সৎকার।
করোনার এই দুর্যোগে নিহতের স্বজনদের কেউ এগিয়ে আসেনি। বরং মুখ লুকিয়েছে। বাবার লাশ ঘরের একরুমে আবদ্ধ রেখে খবর দিলেন কাউন্সিলরকে। প্রাণের ভয়ে স্বজনরা যেখানে এগিয়ে আসেননি। সেখানে মৃত্যুভয়কে উপেক্ষা করে এগিয়ে এসেছেন এ জনপ্রতিনিধি।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা