আসামের পর এবার দেশের বাকি অংশ থেকেও বেআইনি অনুপ্রবেশকারীদের চিহ্নিত করে ভারত থেকে বিতাড়িত করা হবে। দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও ক্ষমতাসীন দল বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ গতকাল সোমবার এ ইঙ্গিত দেন।
আগের দিন রোববার আসামের নাগরিকপঞ্জি থেকে ১৯ লাখ মানুষের নাম বাদ যাওয়া প্রসঙ্গে অমিত বলেন, কেন্দ্র প্রত্যেক বেআইনি অনুপ্রবেশকারীকে দেশ থেকে ছুড়ে ফেলে দেবে। আর গতকাল তিনি বলেন, ‘পুরো দেশই নাগরিকপঞ্জি নিয়ে ভয় পাচ্ছে। আসাম মনে করছে, নাগরিকপঞ্জি ভুল। ছোট রাজ্যগুলো ভাবছে, সেখানেও এমন হবে। আমি আপনাদের নিশ্চিত করছি, কেবল আসাম নয়, আমরা চাই গোটা দেশই বেআইনি অনুপ্রবেশকারীদের থেকে মুক্ত হোক। আমরা একটা প্ল্যান রেডি করে ফেলেছি। আমরা সব রাজ্যেই আত্মবিশ্বাস ফিরিয়ে আনব।’
পাশাপাশি অমিত জানান, সরকারের কোনো পরিকল্পনা নেই সংবিধানের ৩৭১ ধারা বাতিল করে উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলো থেকে ‘বিশেষ মর্যাদা’ তুলে নেয়ার।
তিনি বলেন, ‘আমি পরিষ্কার করে দিতে চাই ৩৭০ ও ৩৭১ ধারার মধ্যে কোনো সম্পর্ক নেই। নাগরিক বিল ৩৭১ ধারায় কোনো সমস্যা সৃষ্টি করবে না। ভারত সরকার এই নিশ্চয়তা দিচ্ছে।’
তিনি জানান, সরকারের পরিকল্পনা রয়েছে একটি বিল আনার, যার দ্বারা বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের কিছু নাগরিককে ভারতের নাগরিকত্ব দেয়া হবে, তাদের কাছে বৈধ নথি না থাকলেও।
জম্মু ও কাশ্মির থেকে ৩৭০ ধারা বাতিল করে সেখানকার বিশেষ মর্যাদা তুলে নেয়ার পর নাগাল্যান্ডের মতো উত্তর-পূর্বের রাজ্যে আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে সেখানে প্রযুক্ত ৩৭১ ধারা নিয়ে। এ দিন অমিত পরিষ্কার জানিয়ে দিলেন, ওই ধারা বাতিল করার মতো কোনো প্রস্তাব আনবে না সরকার।
অমিত সফরে আসার আগে আসামকে আগামী ছয় মাসের জন্য ‘অশান্ত অঞ্চল’ বলে ঘোষণা করা হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে অমিত শাহ রোববার আসামে এসেছেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হওয়ার পর এই প্রথম অমিত শাহ উত্তর-পূর্ব ভারতের কোনো রাজ্যে সফরে এলেন।
এনআরসির আগেই ডিটেনশন সেন্টার বানাচ্ছে মহারাষ্ট্র
ওয়ান ইন্ডিয়া জানায়, ভারতের মহারাষ্ট্রে এনআরসি শুরুর আগেই সেখানে ডিটেনশন সেন্টার তৈরির পরিকল্পনা নিয়ে নিয়েছে রাজ্য সরকার। মহারাষ্ট্রের স্বরাষ্ট্র দফতর নবি মুম্বাই প্ল্যানিং অথোরিটিকে চিঠি দিয়েছে অবৈধ অভিবাসীদের জন্য ডিটেনশন সেন্টার তৈরির জন্য জমির বন্দোবস্ত করতে।
আসামে এনআরসির চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশিত হয়েছে ৩১ অগাস্ট। সেই তালিকা থেকে বাদ পড়েছে রাজ্যের ১৯ লাখ বাসিন্দার নাম। জল্পনা শুরু হয়ে গেছে এরপরেই কি মহারাষ্ট্রের নাম। মহারাষ্ট্র দেশের দ্বিতীয় জনসংখ্যাবহুল রাজ্য।
মুম্বাইয়ের সিটি অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল ডেভেলপমেন্ট করপোরেশন অব মহারাষ্ট্র নেরুলে দুই থেকে তিন একর জমির জন্য চিঠি পেয়েছে। মুম্বাই থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটার দূরে নবি মুম্বাইয়ের কাছেই অবস্থিত এই নেরুল।
মহারাষ্ট্র সরকারের তরফ থেকে যদিও এই ধরনের চিঠি পাঠানোর কথা অস্বীকার করা হয়েছে। এ বছরের শুরুর দিকে কেন্দ্রের তরফে দেয়া নির্দেশিকায় বলা হয়েছিল দেশের সব বড় ইমিগ্রেশন পয়েন্টগুলোতে ডিটেনশন সেন্টার তৈরির কথা।
সামনেই মহারাষ্ট্রে বিধানসভা নির্বাচন। আর সেই নির্বাচনকে সামনে রেখে শাসক সহযোগী শিবসেনা অভিযোগ করেছে, বাংলাদেশী অভিবাসীরা মুম্বাইয়ে থাকে এবং সেখানে কাজ করে। জুলাই মাসে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ রাজ্যসভায় বলেছিলেন, সরকার দেশের প্রতি ইঞ্চিতে অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের খোঁজে তল্লাশি চালাবে।
বিহার ক্যাবিনেটের বিজেপি মন্ত্রী ইতোমধ্যেই রাজ্যে এনআরসির দাবি জানিয়েছেন। মে মাসে গোয়ার মুখ্যমন্ত্রী প্রমোদ সওয়ান্ত ৫০ লাখ টাকা ব্যয়ে তৈরি ডিটেনশন সেন্টারের উদ্বোধন করেছিলেন।
আসামে এখন কারাগারের মধ্যেই রয়েছে ডিটেনশন সেন্টার। তবে বর্তমানে গোয়ালপাড়ায় তিন হাজার মানুষকে রাখার জন্য ৪৬ কোটি টাকা ব্যয়ে ডিটেনশন সেন্টার তৈরি হচ্ছে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা