২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`

ইবিতে ছাত্রীকে মারধর-নির্যাতন, নেতৃত্বে ছাত্রলীগ নেত্রী

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় - ছবি : সংগৃহীত

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ছাত্রী হলে র‌্যাগিংয়ের অভিযোগ উঠেছে শাখা ছাত্রলীগ সহ-সভাপতি সানজিদা চৌধুরী অন্তরা ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগীর অভিযোগ, এ সময় তাকে মারধর ও বিবস্ত্র ভিডিও ধারণ করে পরে ভাইরালের হুমকি দেন অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেত্রীরা।

রোববার (১২ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত রাতে শেখ হাসিনা হলে এ ঘটনা ঘটে। পর দিন সকালে ভয় পেয়ে হল ছেড়ে বাসায় চলে যান ভুক্তভোগী ওই ছাত্রী। এদিকে মঙ্গলবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর ও ছাত্রউপদেষ্টার কাছে অভিযোগপত্র প্রদান করেন ভুক্তভোগী। অভিযুক্ত অন্তরা পরিসংখ্যান বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।

অভিযোগপত্র সূত্রে জানা গেছে, নবীনবরণের আগের দিন এক সিনিয়রের মাধ্যমে শেখ হাসিনা হলের এক কক্ষে গেস্ট হিসেবে ওঠেন ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের নবীণ শিক্ষার্থী ফুলপরি। রোববার ফুলপরির বিরুদ্ধে সিনিয়রদের সাথে খারাপ আচরণের অভিযোগ করেন তার বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী তাবাসসুম ও ছাত্রলীগ সহ-সভাপতি অন্তরা। পরে সন্ধ্যায় তাকে হল থেকে বের করে দেয়ার দাবি জানান তারা।

এ সময় হল প্রভোস্ট ও প্রক্টরিয়াল বডির উপস্থিতিতে বিষয়টি মীমাংসা করা হয়। ওই দিন রাতেই ফুলপরিকে ডেকে নেয় ছাত্রলীগ নেত্রী অন্তরা ও তাবাসসুমসহ তাদের কয়েকজন সহযোগী। এ সময় তাকে বিভিন্নভাবে হুমকি দেয়া হয়। তাদের পা ধরে মাফ চাইতে গেলে লাথি মারেন তারা। এছাড়া তাকে জোরপূর্বক বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণ করেন এবং এ বিষয়ে কাউকে কিছু বললে ভিডিও ভাইরাল করে দেয়ার হুমকি দেয়া হয়। এছাড়াও ভুক্তভোগীর দ্বারা ময়লা গ্লাস চেটে পরিষ্কার করান অভিযুক্তরা। পরে ভয় পেয়ে সোমবার সকালে হল ছেড়ে বাসা চলে যান ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ফুলপরী বলেন, আমাকে যেভাবে অত্যাচার করা হয়েছে আমি তার সুষ্ঠু বিচার চাই। যাতে আর কোনো শিক্ষার্থী এরকম ঘটনার সাক্ষী না হয়।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত ছাত্রলীগ সহ-সভাপতি সানজিদা চৌধুরী অন্তরাকে অভিযোগের বিষয়ে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, ‘ওই মেয়েই তার বড় ভাইকে দিয়ে আমাকে হুমকি দিয়েছিল। সে যদি অভিযোগ করে তাহলে তাকে প্রমাণ দিতে বলেন। আর এ বিষয়ে আমি আর কিছু বলতে চাচ্ছি না।’

শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি ফয়সাল সিদ্দিকী আরাফাত বলেন, ‘ওই মেয়ের (ভুক্তভোগী) সাথে সিনিয়রদের ভুল বুঝাবুঝি হয়েছিল। পরে প্রভোস্ট স্যার ও সহকারী প্রক্টর স্যারদের মাধ্যমে বিষয়টি সমাধান হয়েছিল। এর পরে যদি কেউ তাকে হেনস্থা করে তাহলে বিষয়টি অন্যায়। অভিযোগের বিষয়টি খতিয়ে দেখে আমরা সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিব।’

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদৎ হোসেন আজাদের সাথে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘আমি অফিসের বাইরে আছি, অফিসে গিয়ে অভিযোগপত্রটি দেখবো। উভয় পক্ষের সাথে কথা বলে বিষয়টি নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম বলেন, ‘র‌্যাগিংয়ের বিষয়টি আমি শুনেছি। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে কখনো র‌্যাগিং ছিল না। কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে এ বিষয়গুলোকে অ্যালাউ করে না। সংশ্লিষ্টদের সাথে বসে বিষয়টি বিস্তারিত খোঁজ নিয়ে পদক্ষেপ নেয়া হবে।’


আরো সংবাদ



premium cement