২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`

শার্শায় ১০ টাকার চাল বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ

শার্শায় ১০ টাকার চাল বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ -

যশোরেরর শার্শা উপজেলার বাগআঁচড়ায় খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় ১০ টাকা কেজি দরের চাল বিতরণে স্থানীয় ইউপি মেম্বার ও ডিলারের বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এই তালিকায় মেম্বারের চাচাতো ভাই ও ডিলারের আপন ভাই শফিকুল বিশ্বাস ও তার স্ত্রী সালমা খাতুন, সাইফুর বিশ্বাসের পরিবারে ৪টি ও চাচাতো ভাই সেলিম রেজার পরিবারে ৩টি কার্ড আছে। একধিক কার্ড আছে এমন পরিবারের সংখ্যা ১৪টি, কর্তা প্রবাসে আছেন এমন পরিবারের সংখ্যা ৬টি, স্বচ্ছল পরিবারের সংখ্যা ২৬টি ও খোঁজ পাওয়া যায়নি এমন পরিবারের সংখ্যা ৯টি।

শার্শা উপজেলার ৮নং বাগআঁচড়া ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ড বাগআঁচড়া সাতমাইল ও পিপড়াগাছি গ্রামের মেম্বার আসাদুল ইসলাম ও ডিলার মেম্বারের চাচাতো ভাই নজরুল ইসলাম বিশ্বাসের বিরুদ্ধে স্থানীয় জনগণ এই অফিযোগ করেছেন। উপজেলার বাগআঁচড়া জিবলিতলা আইসি ক্যাম্প মোড়ে আসাদুল ইসলাম মেম্বারের দোকান থেকে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওয়ায় ৬৮০ জন দুঃস্থ অসাহয় সুবিধাভোগী ও হত দরিদ্রদের মাঝে ১০ টাকা কেজি দরে ৩০ কেজি করে চাল বিক্রয় করা হয়। নিজে মেম্বার হওয়ায় বিভিন্ন লোকের আইডি কার্ড সংগ্রহ করে তালিকায় তাদের নাম ব্যবহার করে নিজেই সেই চাল আত্মসাৎ করার অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা।

তালিকার ৫৭০ নম্বর ক্রমিকে মফিজ উদ্দীন, ৫৭৩ নম্বর কার্ডধারী আবু সাঈদ, ৫৭৮ নম্বরে ইউসুফ আলী, ৭২৬ নম্বর ক্রমিকের কার্ডধারী মোছা: হাসিনা, রবিউল হোসেন (৫২৫), ইস্রাফিল হোসেন (৬৭৯), ওয়াজেদ আলী (৫১৭), খালিদ হাসান অপু (৫৭০), আব্দুর রহমান, মালেকা (৫৯৩), শওকত আলী (৬৫০), মফিজ উদ্দীন মোল্লা (৫৩১), বরকতুল্যা সরদার (৫৩১), সিরাজুল ইসলাম (৫১৭), ফজের আলী (৬১৭) অভিযোগ করে বলেন ১০ টাকা কেজি দরের চালের কার্ডে তাদের নাম আছে, সেটা তারা জানতেন না। চার বছর ধরে ওই তালিকার চাল মেম্বার নিজে আত্মসাৎ করেছেন।

বাগআঁচড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইলিয়াছ কবির বুকল বলেন, ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বাররা স্ব স্ব ওয়ার্ডে যাচাই-বাছাই করে এই তালিকা চূড়ান্ত করেন। তালিকা মোতাবেক তাদের নামে কার্ড বণ্টন করা হয়। ডিলাররা ওই কার্ড অনুযায়ী চাল বিতরণ করেন। এখানে ডিলার মেম্বারের আত্মীয় হওয়ায় এই অনিয়মের সুযোগ পেয়েছেন। পুনরায় এর ভিতরে কোন অনিয়ম থাকলে সেটি সংশোধন করে দিতে বলা হলে সে ১৬টি নাম পরিবর্তন করে দিয়েছে। পরে বিষয়টি তদন্ত করে আমার কাছে ৫৮টি কার্ডে অনিয়ম ধরা পড়েছে।

ওএমএস কার্ডে বিত্তবানদের নাম তোলার ব্যাপারে জানতে চাইলে ডিলার নজরুল ইসলাম বলেন, এ বিষয়ে আমি সৎপথে রয়েছি। আমার জানা মতে আমি কোনো ভুল করিনি। নামের তালিকা করে মেম্বার। সেখানে আমার কোন হাত নেই।

বাগআঁচড়া ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ড মেম্বার ও ডিলার আসাদুল ইসলাম বলেন, আমার ভুল হয়েছে। আমাকে ক্ষমা করে দেন। শার্শা উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক ইন্দ্রজিৎ রায় বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় হতদরিদ্র ও নিম্ন আয়ের মানুষ যারা কোনো সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনির অর্ন্তভুক্ত নন, তাদের জন্য বিশেষ ওএমএস সুবিধা চালু করা হয়েছে।

বাগআঁচড়া খাদ্য গুদামের কর্মকর্তা হাসানুজ্জামান বলেন, ৬৮০ জন উপকারভোগীর জন্য আসাদুল মেম্বার গত ১ মে রোববার বাগআঁচড়া খাদ্য গুদাম থেকে ২০ হাজার ৪০০ কেজি চাল উত্তোলন করেছেন। খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওয়ায় দুঃস্থ অসহায় সুবিধাভোগী ও হতদরিদ্রদের মাঝে এই চাল উত্তোলনের এক সপ্তাহের মধ্যে বিতরণ করার নিয়ম থাকলেও ২৭ মে বুধবার তিনি তার দোকান থেকে চাল সরানোর সময় স্থানীয় জনগণ তাকে আটকে দেয়।
ব্যাপক তথ্য অনুসন্ধানে জানা গেছে, উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নে এধরনের অনিয়ম দুর্নীতি চলছে। তদন্ত হলে সকল ঘটনা উম্মোচিত হবে।

এ ব্যাপারে শার্শা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পূলক কুমার মন্ডল বলেন, আমি এমন একটি অভিযোগের কথা শুনেছি। এটি সংশোধন করার জন্য রোববার পর্যন্ত সময় দিয়েছি। অভিযোগ পাওয়া গেলে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট দিয়ে তদন্ত করা হবে। তদন্তে দোষী প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


আরো সংবাদ



premium cement