২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`

দেশে নিত্যপণ্যের দাম কমতে সময় লাগবে : পরিকল্পনামন্ত্রী

একনেকে ১৮ প্রকল্প অনুমোদন
-


বৈশ্বিক বাজারে নিত্যপণ্যের দাম কমলেও দেশে এখনই তার প্রভাব পড়ছে না। পাশাপাশি মূল্যস্ফীতি কবে কমবে সে বিষয়ে কিছু বলতে পারবেন না বলে জানিয়েছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। তিনি বলেন, আমরা অনেক পণ্যের দাম দুই মাস আগে পেমেন্ট করেছি। এ ছাড়া ডলারের দাম এখনো কমেনি। ফলে দেশে নিত্যপণ্যের দাম কমতে সময় লাগবে। তবে মূল্যস্ফীতি ৬ শতাংশে নামিয়ে আনা সম্ভব নয়।

রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে একনেক চেয়ারপারসন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে গতকাল অনুষ্ঠিত জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভা শেষে তিনি এই মন্তব্য করেন। সভায় ১৮টি প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়। সভা শেষে আনুষ্ঠানিক ব্রিফিংয়ে বিস্তারিত জানান পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। অনুমোদিত প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে মোট ব্যয় হবে ১১ হাজার ৩৮৭ কোটি ৯১ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারি তহবিল থেকে ৭ হাজার ৪৪৫ কোটি ৩৪ লাখ টাকা, বৈদেশিক ঋণ থেকে ৩ হাজার ৮৬১ কোটি ৭৯ লাখ টাকা এবং সংস্থার নিজস্ব তহবিল থেকে ৮০ কোটি ৭৮ লাখ টাকা পাওয়া যাবে।

বৈশ্বিক বাজারে কমলেও আমাদের দেশে নিত্যপণ্যের দাম কমছে না কেন- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, বিদেশে কমলেও রাতারাতি দেশে প্রভাব পড়ে না। আমরা অনেক পণ্যের দাম দুই মাস আগে পেমেন্ট করেছি। সেগুলো এখনো হাতে পাইনি। এ ছাড়া ডলারের দাম এখনো কমেনি। ডলার দিয়েই আমাদের পণ্য আমদানি করতে হয়। তিনি বলেন, আশা করেছিলাম মূল্যস্ফীতি কমবে। কিন্তু কমেনি, বরং আরো বেড়েছে। এটা দুঃখজনক। বিশাল লোডশেডিং আমাদের জন্য গ্রহণযোগ্য নয়। দুই সপ্তাহ পরে লোডশেডিং কমবে, তবে মূল্যস্ফীতি কবে কমবে বলতে পারব না। মূল্যস্ফীতি কমানোর জন্য আমরা নানা কৌশল নিচ্ছি।

নতুন প্রস্তাবিত বাজেটে মূল্যস্ফীতি ৬ শতাংশ ধরা হয়েছে। এটা সম্ভব নয় দাবি করে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, মূল্যস্ফীতি ৬ শতাংশে নামানোর কথা বলা হয়েছে, যা সম্ভব নয়। তবে মূল্যস্ফীতি কমাতে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে। মালামাল স্টক (পণ্য মজুদ) করতে হবে। ইউরোপীয় ইউনিয়নে নিত্যপণ্যের দাম কমছে, আমরাও পারব। তবে ৬ শতাংশে নামতে পারব না, চেষ্টা করব কমানোর। বাজারকে মসৃণ করব। মন্ত্রী বলেন, ডলার ছাড়াও অন্য মুদ্রায় বাণিজ্য করব। নানা মুদ্রায় ব্যবসা-বাণিজ্য করব। সরকার অন্যান্য পণ্য আমদানিতে যাবে। পেঁয়াজ আমদানি করছি, এখন দাম কমছে। দরকার হয় অন্য পণ্যও আমদানি করব।

অনুমোদিত প্রকল্পগুলো হলো, ফরিদপুর জেলাধীন মধুমতি নদীর বাম তীরের ভাঙন হতে শহীদ বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সী আব্দুর রউফ স্মৃতি জাদুঘর সংযোগ রাস্তাসহ অন্যান্য এলাকা সংরক্ষণ ও ড্রেজিং প্রকল্প, বাগেরহাট জেলার পল্লী অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প, নতুন ৬টি আঞ্চলিক কার্যালয় স্থাপনের মাধ্যমে স্থানভিত্তিক ধানের জাত ও প্রযুক্তি উদ্ভাবন এবং বিদ্যমান গবেষণাগার উন্নয়ন প্রকল্প, নেত্রকোনা জেলার গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প; প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের ‘আশ্রয়ণ-২ (৫ম সংশোধন)’ প্রকল্প, ‘১০টি মেডিক্যাল কলেজের ছাত্রছাত্রীদের জন্য আধুনিক সুবিধা সংবলিত ১৯টি হোস্টেল ভবন নির্মাণ’ প্রকল্প, পটুয়াখালী মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল স্থাপন, পটুয়াখালী (১ম সংশোধনী) প্রকল্প, ‘জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ফাইন আর্টস ফ্যাকাল্টি বিল্ডিং স্থাপন’ ও ‘হায়ার এডুকেশন এক্সিলারেশন অ্যান্ড ট্রান্সফরমেশন (এইচইএটি)’ প্রকল্প, গুরুত্বপূর্ণ নগর অবকাঠামো উন্নয়ন (২য় পর্যায়) (১ম সংশোধিত)’ প্রকল্প, বাংলাদেশ রিজিওনাল কানেকটিভিটি প্রজেক্ট-১: শেওলা, রামগড় ও ভোলাগঞ্জ স্থলবন্দর উন্নয়ন এবং বেনাপোল স্থলবন্দরের নিরাপত্তা ব্যবস্থার আধুনিকায়ন (২য় সংশোধিত)’ প্রকল্প।

এ ছাড়া সাতক্ষীরা সড়ক ও সিটি বাইপাস সড়ককে সংযুক্ত করে সংযোগ সড়কসহ তিনটি লিংক রোড নির্মাণ (প্রস্তাবিত ১ম সংশোধিত) প্রকল্প, সাভার সেনানিবাস এলাকায় মিট প্রসেসিং প্ল্যান্ট স্থাপন প্রকল্প; ডিজিএফআই এর টেলিযোগাযোগ ও আইসিটি অবকাঠামো, মানবসম্পদ এবং কারিগরি সক্ষমতা উন্নয়ন (টিআইএইচডিটিসিবি) (প্রস্তাবিত ২য় সংশোধিত) প্রকল্প, বাংলাদেশ রেলওয়ের ঢাকা-টঙ্গী সেকশনে ৩য় ও ৪র্থ ডুয়েল গেজ লাইন এবং টঙ্গী-জয়দেবপুর সেকশনে ডুয়েল গেজ ডাবল লাইন নির্মাণ (প্রস্তাবিত ২য় সংশোধনী) প্রকল্প, লার্নিং অ্যান্ড আর্নিং ডেভেলপমেন্ট প্রকল্প (২য় সংশোধিত) প্রকল্পের মেয়াদ ৪র্থ বার বৃদ্ধি প্রকল্প, থ‘চট্টগ্রাম সিটি আউটার রিং রোড’ প্রকল্প; ‘জাতীয় উন্নয়ন প্রশাসন একাডেমি প্রতিষ্ঠা’ প্রকল্প এবং ‘নড়াইল জেলার পল্লী অবকাঠামো উন্নয়ন’ প্রকল্প।

 


আরো সংবাদ



premium cement