২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`
জলবায়ু পরিবর্তনে ভুক্তভোগী বাংলাদেশ

ক্ষতিপূরণে চাপ সৃষ্টির পরামর্শ

-


দেশে প্রথমবারের মতো জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ক্ষতিগ্রস্ত মানুষকে নিয়ে গণশুনানি অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার গাইবান্ধা সদর উপজেলার ব্রহ্মপুত্রের চরগ্রাম কুন্দেরপাড়ায় এ গণশুনানি অনুষ্ঠিত হয়। শুনানিতে বিচারক প্যানেলের প্রধান ছিলেন পানি ও জলবায়ু বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. আইনুন নিশাত। শুনানি শেষে তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য উন্নত দেশগুলো দায়ী। বাংলাদেশের কোনো দায় নেই। বিশ্বের ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর প্রধানত ভুক্তভোগী দেশ হচ্ছে বাংলাদেশ।
ড. আইনুন নিশাত বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনজনিত নানা ধরনের দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বাংলাদেশ। যেসব উন্নত দেশ জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য দায়ী সেসব দেশের কাছে ক্ষতিপূরণ আদায়ে সরকারের চাপ সৃষ্টি করা উচিত বলে মনে করেন তিনি।

বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা গণউন্নয়ন কেন্দ্রের ও সাউথ এশিয়ান ক্লাইমেট চেঞ্জ জার্নালিস্ট ফোরাম এই গণশুনানির আয়োজন করে। এতে গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম ও লালমনিরহাট জেলার নদী ভাঙ্গনসহ জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ক্ষতির শিকার ১২ জন নারী ও পুরুষ শুনানিতে অংশ নেন। তাদের কেউ নদী ভাঙ্গন, বনলতা, আগাম বনলতা, খরা, শীতসহ জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ক্ষতির শিকার হোন। তারা বিচারক মণ্ডলীর কাছে ক্ষতিপূরণ দাবি করেন। গণশুনানিতে পানি ও জলবায়ু বিশেষজ্ঞ ড. আইনুন নিশাত ছাড়াও সাউথ এশিয়ান ক্লাইমেট চেঞ্জ জর্নালিস্ট ফোরামের প্রেসিডেন্ট আশীষ গুপ্ত, লেখক ও গবেষক অধ্যাপক জহুরুল কাইয়ুম বিচারক হিসেবে দায়িত্ব্ পালন করেন।
গণশুনানিতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ডা: এনামুর রহমান এমপি। বিশেষ অতিথি ছিলেন জাতীয় সংসদের হুইপ মাহবুব আরা বেগম গিনি এমপি, গাইবান্ধা জেলা প্রশাসক মো: অলিউর রহমান, পুলিশ সুপার মো: কামাল হোসেন।
গণউন্নয়ন কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী প্রধান এম. আবদুস্ সালামের সভাপতিত্বে এবং সাউথ এশিয়ান ক্লাইমেট চেঞ্জ জার্নালিস্ট ফোরামের নির্বাহী সভাপতি কেরামত উল্লাহ বিপ্লব গণশুনানি সঞ্চালনা করেন।

শুনানি শেষে রায় প্রদান করেন বিচারক প্যানেলের সদস্যরা। এরপর জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে ক্ষতিগ্রস্ত ১২জন নারী-পুরুষকে ‘জলবায়ু যোদ্ধা’ পদক প্রদান করা হয়। পদক বিতরণ শেষে অতিথিরা বক্তব্য দেন।
বক্তারা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে বাংলাদেশের সমুদ্র উপকূলীয় অঞ্চলগুলোসহ নদ-নদী অববাহিকায় চর-দ্বীপচরের মানুষ ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছে। গত তিন দশকে সামুদ্রিক ঘুর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস ও নদী ভাঙনে বিপর্যস্ত এসব জনপদের মানুষ।
গ্রীন হাউস প্রতিক্রিয়ায় বিশ্বব্যাপী তাপমাত্রা বৃদ্ধিতে একদিকে যেমন- সমুদ্রপৃষ্ঠের তলদেশ উঁচু হয়ে যাচ্ছে অন্যদিকে নদ-নদীর নাব্যতা হারিয়ে গতিপথে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন এসেছে। ফলে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে সমুদ্রের পানি উপকূলীয় এলাকায় উপচে পড়ছে। বছর বছর বন্যা, নদী ভাঙ্গনসহ ঘন ঘন প্রাকৃতিক দুর্যোগে লাখ লাখ মানুষ সহায় সম্বল হারিয়ে সর্বস্বান্ত হচ্ছে। ক্ষতিপূরণ আদায়ে উন্নত বিশ্বকে সরকারের চাপ আরো বাড়ানোর পরামর্শ দেন বক্তারা।


আরো সংবাদ



premium cement