২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`

ফিলিস্তিনের পাশে মুসলিম উম্মাহর দাঁড়ানো উচিত : প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে ওআইসির সদস্যভুক্ত ৭ দেশের হাইকমিশনার ও রাষ্ট্রদূতরা : পিআইডি -


প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মুসলিম উম্মাহকে সম্মিলিতভাবে ফিলিস্তিনিদের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন। ঢাকায় অবস্থানরত সাতটি ওআইসি সদস্য রাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত ও হাইকমিশনাররা গতাল সকালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে তার সাথে যৌথ সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে গেলে প্রধানমন্ত্রী এই আহ্বান জানান।


সাত বিদেশী কূটনীতিক হলেন- আলজেরিয়ার রাষ্ট্রদূত রাবাহ লারবি, মালয়েশিয়ার হাইকমিশনার হাজনাহ মো: হাশিম, মালদ্বীপের হাইকমিশনার শিরুজিমাথ সমীর, ওমানের রাষ্ট্রদূত আবদুল গাফফার বিন আবদুল করিম আল-বুলুশি, ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূত ইউসেফ এসওয়াই রামাদান, সৌদি আরবের রাষ্ট্রদূত এশা ইউসেফ এশা আলদুহাইলান এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাষ্ট্রদূত আবদুল্লাহ আলী আবদুল্লাহ খাসেফ আলহামৌদি।
বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর স্পিচ রাইটার মো: নজরুল ইসলাম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ফিলিস্তিনকে সমর্থন করেছিলেন এবং তিনি ফিলিস্তিনিদের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। প্রধানমন্ত্রীর উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়, মুসলিম উম্মাহর সম্মিলিতভাবে ফিলিস্তিনিদের পাশে দাঁড়ানো উচিত।


বিদেশী কূটনীতিকরা বাংলাদেশের বিগত ১৪ বছরের উন্নয়ন ও স্থিতিশীলতার জন্য প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করেন বিশেষ করে কোভিড-১৯ মহামারী সফলভাবে মোকাবেলায়। তারা বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের মানুষ ভালো আছে এবং সুখে আছে। তাই মুসলিম উম্মাহর সদস্য হিসেবে তারা (দূত) খুশি ও গর্বিত।
ওআইসির কূটনীতিকরা উল্লেখ করেন, প্রায় ৭০ লাখ বাংলাদেশী মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে কাজ করছেন এবং তারা ওই সব দেশের অর্থনীতিতে বিরাট অবদান রাখছেন। তারা আশাবাদ ব্যক্ত করেন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের অগ্রগতি অব্যাহত থাকবে এবং আগামী সাধারণ নির্বাচনে শেখ হাসিনার সাফল্য কামনা করেন।


এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, নতুন আইন প্রণয়নের মাধ্যমে একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়েছে এবং তিনি চান নির্বাচন সুষ্ঠু হবে। শেখ হাসিনা বলেন, জনগণ তাকে ভোট দিলে তিনি আবার ক্ষমতায় আসবেন, অন্যথায় নয়। কারণ তিনি জনগণের ক্ষমতায় বিশ্বাসী। প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি নিজের জন্য নয় বরং দেশ ও জনগণের জন্য কাজ করছেন। তিনি আরো বলেন, দেশের মানুষের আর্থসামাজিক উন্নয়ন করাই তার লক্ষ্য।


প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার সব গৃহহীন ও ভূমিহীন মানুষের জন্য ঘর নিশ্চিত করতে কাজ করছে। ‘এখন চূড়ান্ত পর্যায়ে প্রায় ৪০ হাজার বাড়ি নির্মাণ করা হচ্ছে। এই ৪০ হাজার আবাস বিতরণের পর কেউ গৃহহীন ও ভূমিহীন থাকবে না’, তিনি যোগ করেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক সম্পর্কবিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. গওহর রিজভী, অ্যাম্বাসেডর অ্যাট লার্জ মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো: তোফাজ্জল হোসেন মিয়া উপস্থিত ছিলেন।


পঞ্চদশ সংশোধনী দেশের গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করেছে : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী দেশের গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করেছে এবং অবৈধভাবে রাষ্ট্রক্ষমতা দখলের পথ বন্ধ করে কারা ক্ষমতায় যাবে, তার সিদ্ধান্ত নিতে জনগণকে ক্ষমতা দিয়েছে। তিনি বলেন, ‘সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী আনার ফলে এবং দীর্ঘ দিন ধরে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখার কারণে দেশে স্থিতিশীলতা বিরাজ করছে। তাই এখন কোনো অনির্বাচিত ব্যক্তি অবৈধভাবে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করতে পারছে না।’


প্রধানমন্ত্রী গতকাল তার কার্যালয়ে রংপুর সিটি করপোরেশনের নবনির্বাচিত মেয়র ও এর ওয়ার্ড কাউন্সিলরসহ সংরক্ষিত নারী আসনের কাউন্সিলরদের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন। শেখ হাসিনা বলেন, দেশের সংবিধান লঙ্ঘন করে ‘মার্শাল ল’ জারি করে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখলকে সর্বোচ্চ আদালত অবৈধ ঘোষণা করেছে। যার ফলে বাংলাদেশের মানুষের ভোটের অধিকার, গণতান্ত্রিক অধিকার নিশ্চিত হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী নবনির্বাচিত রংপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফাকে শপথবাক্য পাঠ করান এবং নবনির্বাচিত কাউন্সিলরদের শপথবাক্য পাঠ করান এলজিআরডি ও সমবায়মন্ত্রী মো: তাজুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন এলজিআরডি ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য এবং অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব মুহাম্মদ ইব্রাহিম।


গত ২৭ ডিসেম্বর রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে জাতীয় পার্টি সমর্থিত প্রার্থী মোস্তফা টানা দ্বিতীয়বারের মতো মেয়র পদে জয়ী হন। প্রধানমন্ত্রী তার ভাষণে সব নির্বাচিত মেয়র ও কাউন্সিলরদের অভিনন্দন জানিয়ে তাদের নিবেদিত প্রাণ হয়ে দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানান।
তার সরকারের ভূমিহীন-গৃহহীনকে ঘর করে দেয়ার কর্মসূচি বাস্তবায়নের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ভূমিহীন-গৃহহীন মানুষকে ঘর করে দেয়ার সময় কে কোন দলের তা দেখিনি। মানুষকে মানুষ হিসেবেই দেখেছি। মুজিবের এ বাংলায় একটি মানুষও গৃহহীন-ভূমিহীন থাকবে না, তা তার সরকার নিশ্চিত করবে।


আরো সংবাদ



premium cement