২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`

সহকারী জজ নিয়োগ পরীক্ষায় মেয়েদের বাজিমাত

-

১৪তম বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস (বিজেএস) সহকারী জজ পরীক্ষার মেধাতালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। এতে প্রথম, দ্বিতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম স্থান অর্জন করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) আইন বিভাগের চার শিক্ষার্থী। এদিকে সহকারী জজ হিসেবে ১০২তম হয়ে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী নিশি আক্তার।
জানা গেছে, পরীক্ষায় প্রথম হয়েছেন রাবির আইন বিভাগের ৩৯ ব্যাচের শিক্ষার্থী সুমাইয়া নাসরিন শামা, দ্বিতীয় জান্নাতুন নাঈম মিতু, চতুর্থ ঈশরাত জাহান আশা ও একই বিভাগের ৩৭ ব্যাচের আতিয়ারা খাতুন হয়েছেন পঞ্চম।
গত বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশন সচিবালয়ের ওয়েবসাইটে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক শরীফ এ এম রেজা জাকের স্বাক্ষরিত চূড়ান্ত ফলাফলে তারা মনোনীত। এতে মোট ১০২ জনকে মনোনীত করা হয়।
বিজেএস পরীক্ষায় মেধাতালিকা দ্বিতীয় হওয়ার বিষয়ে জান্নাতুন নাঈম মিতু বলেন, আমার এই ফলাফলের জন্য পরিবার ও শিক্ষকদের অবদান সবচেয়ে বেশি। আমি প্রথম বর্ষ থেকে একাডেমিক পড়াশোনায় মনোযোগী ছিলাম। ডিপার্টমেন্টে রেজাল্টও ভালো ছিল আমার। বন্ধুৃরাও আমাকে উৎসাহ দিত। তারা বলত ডিপার্টমেন্টের মতো জুডিশিয়ারিতে আমি ভালো করতে পারব। অবশেষে আল্লাহর রহমতে এই পরীক্ষায় আমি দ্বিতীয় হয়েছি।
এ বিষয়ে আইন বিভাগের সভাপতি প্রফেসর হাসিবুল আলম প্রধান বলেন, ‘আজকের দিনটি আমাদের আইন বিভাগের জন্য অশেষ এক আনন্দ ও গর্বের দিন। ১৪তম বিজেএস পরীক্ষায় (সহকারী জজ) পরীক্ষায় প্রথম, দ্বিতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম স্থান অর্জন করেছে আমাদের শিক্ষার্থীরা। এই ফলাফল প্রমাণ করে রাবির আইন বিভাগই সেরা। আমাদের বিভাগের বিভিন্ন ব্যাচ থেকে আরো অনেকেই সহকারী জজ হিসেবে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছে সবাইকে অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানাই।’
প্রথম কুবি শিক্ষার্থী হিসেবে জজ হয়েছেন স্নাতকে প্রথম হওয়া নিশি
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) প্রথমবারের মতো সহকারী জজ হিসেবে ১০২তম হয়ে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন আইন বিভাগের ২০১৫-১৬ সেশনের শিক্ষার্থী নিশি আক্তার। বর্তমানে তিনি কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিভাগের স্নাতকোত্তরে পড়াশোনা করছেন। জীবনের সব পরীক্ষায় প্রথম হওয়া নিশি স্নাতকে ৩.৭৩ সিজিপিএ নিয়ে বিভাগে প্রথম শ্রেণীতে প্রথম হন।
নিশি আক্তারের বাড়ি লক্ষীপুরের কলমনগর উপজেলায়। তিন বোন চার ভাইয়ের মধ্যে তিনি ষষ্ঠ। বাবা আবদুল মালেক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক এবং মা আয়েশা বেগম গৃহিণী।
শিক্ষক পিতার মেয়ে নিশি ২০১২ সালে তোরাবগঞ্জ উচ্চবিদ্যালয় মানবিক বিভাগ থেকে গোল্ডেন এ প্লাস পেয়ে এসএসসিতে উত্তীর্ণ হন। এরপর ২০১৪ সালে নোয়াখালী সরকারি কলেজ থেকে এইচএসসিতেও এ প্লাস পান। পরবর্তীতে কোনো ধরনের কোচিং না করেই কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পান।
নয়া দিগন্তের সাথে একান্ত সাক্ষাৎকারে নিশি আক্তার বলেন, আমার সফলতার পেছনে আমার বাবা-মায়ের অনেক অনুপ্রেরণা ছিল। আমি ছোট বেলা থেকেই জীবনে সফল হওয়ার স্বপ্ন দেখতাম। পরিশ্রম আর চেষ্টা আমাকে এত দূর নিয়ে এসেছে। আমি আমার শিক্ষক, আত্মীয়স্বজন এবং বন্ধুদেরকে ধন্যবাদ জানাই যারা আমাকে চলার পথে সহযোগিতা করেছে।
উল্লেখ্য, ২০২১ সালের জানুয়ারিতে সহকারী জজ পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশন। বিজ্ঞপ্তি অনুসারে ১৪তম সহকারী জজ পদে তিন দফা পরীক্ষার মাধ্যমে উত্তীর্ণ ১০২ জনকে মনোনীত করা হয়। যার ফলাফল গতকাল বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশন সচিবালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে।

 


আরো সংবাদ



premium cement