২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`


সুপ্রিম কোর্ট বার নির্বাচনের ফল ঘোষণা না হওয়ায় সাবেক সভাপতিদের উদ্বেগ

-

আইনজীবীদের শীর্ষ সংগঠন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির ২০২২-২৩ সালের নির্বাচনের ভোটগ্রহণের ১২ দিন পরও ভোটের ফল ঘোষণা করা হয়নি। এর আগে এমন ঘটনা কখনো ঘটেনি। এমন ঘটনায় সুপ্রিম কোর্ট বারের সাবেক সভাপতি ও প্রবীণ আইনজীবীরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। সুপ্রিম কোর্ট বারের সম্মান ও মর্যাদা রক্ষায় এ বিষয়ে দ্রুত সমাধান চান সমিতির সাবেক সভাপতিরা।

জানা গেছে, সুপ্রিম কোর্ট বারের ভোটগ্রহণের ফল ঘোষণার আগে নির্বাচন উপকমিটির আহ্বায়কের পদত্যাগ এবং ফলাফল ঘোষণায় অচলাবস্থার সৃষ্টি হওয়ায় উদ্বিগ্ন সমিতির সাবেক সভাপতি প্রবীণ আইনজীবী ড. কামাল হোসেন, ব্যারিস্টার এম আমীর-উল ইসলাম, অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন, ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন, হাবিবুল ইসলাম ভূইয়া, এ জে মোহাম্মদ আলী, জয়নুল আবেদীন, সাবেক সভাপতি ও অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন প্রমুখ। তারা প্রত্যেকে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তারা এর চান শান্তিপূর্ণ সমাধান।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সুপ্রিম কোর্ট বারের সাবেক সভাপতি সিনিয়র আইনবিদ ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন বলেন, আমরা চিন্তিত-উদ্বিগ্ন। এটা আমাদের জন্য দুর্ভাগ্য ও লজ্জাকর। আইনজীবীদের মধ্যে পার্টি পলিটিকস ঢুকে যাওয়ার কারণে এমনটি হয়েছে। আমি ড. কামাল হোসেনের সাথে কথা বলেছি। এখন ডেড লক ভাঙা কঠিন। তারা তো পার্টি পলিটিকস করে। তা না হলে আমরা সমাধান করে ফেলতে পারতাম। আমরা সিনিয়ররা মনে করি মিলেমিশে থাকা দরকার। আমরা উদ্বিগ্ন ও লজ্জিত। আমাদের সবাই মিলে কাজ করতে হবে। চেষ্টা করছি।

এ বিষয়ে সাবেক সভাপতি জয়নুল আবেদীন বলেন, সুপ্রিম কোর্ট বারের ইতিহাসে কখনো এমনটি হয়নি। এটা দুঃখজনক। আমরা সবাই এই ঘটনায় উদ্বিগ্ন। বারের সুনাম কোনোভাবে নষ্ট করা যাবে না। সাবেক সভাপতিসহ সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। আমরা সবাই একটা সম্মানজনক সমাধান চাই। তিনি বলেন, নির্বাচন উপকমিটির আহ্বায়ক পদত্যাগপত্র দিলেও তার পদত্যাগ গৃহীত হয়নি। ফল ঘোষণা না হওয়া পর্যন্ত তিনিই আহ্বায়ক।

গত ১৫ ও ১৬ মার্চ এ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ করা হয় এবং ১৭ মার্চ রাতে ভোট গণনা করা হয়। ওই দিন রাত ১২টার দিকে ভোট গণনা শেষ হয়। গণনা শেষে দেখা যায়, সভাপতিসহ ছয়টি পদে আওয়ামী লীগ সমর্থিত সাদা প্যানেল ও সম্পাদকসহ আটটি পদে বিএনপি সমর্থিত নীল প্যানেল বিজয়ের পথে। সম্পাদক পদে নীল প্যানেলের ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল আওয়ামী লীগের প্রার্থী থেকে স্বল্প ভোটের ব্যবধানে বিজয়ের পথে ছিলেন। এ অবস্থায় নির্বাচন উপকমিটি আনুষ্ঠানিক ফল ঘোষণার প্রস্তুতি নিলে সম্পাদক পদে ভোট আবার গণনার দাবি তোলেন আওয়ামী লীগপন্থী আইনজীবীরা। সম্পাদক পদে ভোট পুনঃগণনার দাবি নিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে হইচই ও হট্টগোল হয়। এ প্রেক্ষাপটে নির্বাচন পরিচালনা সাব-কমিটির আহ্বায়কের এ. ওয়াই মশিউজ্জামান পদত্যাগ করায় আর ফলাফল ঘোষণা হয়নি।

এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্ট বারের সম্পাদক ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল গতকাল বলেন, নির্বাচন উপকমিটির আহ্বায়কের সাথে এ ব্যাপারে আমার যোগাযোগ হয়েছে। এ ব্যাপারে সুপ্রিম কোর্ট বারের সাবেক সভাপতিরা উদ্বিগ্ন। উদ্ভূত পরিস্থিতির একটা শান্তিপূর্ণ সমাধান দরকার। তারা প্রত্যাশা করেন নির্বাচন উপকমিটির এ. ওয়াই মশিউজ্জামানসহ অন্য সদস্যরা নির্বাচনের বাকি কার্যক্রম সম্পন্ন করবেন। সুপ্রিম কোর্ট বারের সম্মান যাতে ক্ষুণœ না হয় সে ব্যাপারে তারা সচেষ্ট। সাবেক সভাপতিরা এ ব্যাপারে উদ্বিগ্ন, তারা এ বিষয়ে সমাধানের জন্য কাজ করছেন। তারা এর চান শান্তিপূর্ণ সমাধান।

নির্বাচনে পাঁচ হাজার ৯৮২ জন আইনজীবী ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। এ নির্বাচনে ১৪ পদে প্রার্থী হিসেবে ছিলেন ৩৩ জন। সিনিয়র অ্যাডভোকেট এ. ওয়াই মসিউজ্জামানের নেতৃত্বে সাত সদস্যের উপকমিটি নির্বাচন পরিচালনা করেন।


আরো সংবাদ



premium cement