২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`

কষ্টে আছেন খেটেখাওয়া মানুষ

-

কাজ নেই; উপার্জনও নেই। এভাবেই চলছে তাদের দিন। কারো কাছে হাত পাতবেন তারও সুযোগ নেই। খেয়ে-না-খেয়ে দিন যাচ্ছে। এই হচ্ছে খেটেখাওয়া দিনমজুর আর ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের অবস্থা। এরা এখন কর্মহীন হয়ে পড়েছেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভয়ে অনেক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী দোকান গুটিয়ে বাসায় বসে আছেন।
মোহাম্মদ শরিফ। রাজধানীর ডেমরা এলাকায় রাজমিস্ত্রির কাজ করেন। লকডাউনের কারণে হাতে কোনো কাজ নেই তার। আর দিনমজুর বলে কথা। কাজ না থাকলে পারিশ্রমিকও নেই। আগের কোনো জমানো টাকাও নেই। এখন ধার করে আর টুকটাক কিছু কাজ করে কোনোভাবে চারজনের সংসার টিকে আছে। শরিফ জানান, রাতে আশপাশের ডোবা নালায় মাছ ধরতে যান। বৃষ্টির দিনে কিছু মাছ পাওয়া যায়। আপাতত এভাবে চলার চেষ্টা করছেন। একই অবস্থা শরিফের সহযোগী হাসানেরও। কাজ করলে তারা টাকা পান। আর কাজ না থাকলে তাদের রোজগারও নেই; যে কারণে সে দিনটি কাটে অর্ধাহারে-অনাহারে।
রাজধানীর নয়াবাজারে চালের আড়তে কুলিগিরি করে সংসার চালাতেন কবির। এখন আগের মতো কেনা-বেচাও নেই। আড়তে চাল আসছে না আগের মতো; যে কারণে উপার্জন একেবারেই কমে গেছে কবিরের। কবির জানান, এভাবে আর ক’দিন থাকলে না খেয়ে থাকতে হবে। রাজধানীর মানিকনগরে ভ্যানে করে কলার ব্যবসা করেন আবদুস সোবহান। গতকাল তিনি জানান, ব্যবসা এখন বন্ধ। মাঝে মধ্যে কলার ভ্যান নিয়ে রাস্তায় নামলেও পুলিশ দেখলেই দৌড়ে পালাতে হয়। পুলিশ স্থায়ীভাবে কোথাও বসতে দেয় না; যে কারণে তাদের কেনা-বেচাও নেই। সিদ্দিকুর রহমান নামের অপর এক মাছ বিক্রেতা বলেন, পুলিশের সাথে ইঁদুর-বিড়াল খেলে কিছু কেনা-বেচা করতে হয়। পুলিশ যখন আসে তখন দৌড়ে পালাতে হয়, আবার পুলিশ চলে গেলে বিক্রি শুরু করেন। সিদ্দিকুর জানান, এভাবে কতক্ষণ সম্ভব। বাধ্য হয়ে কয়েক দিন দোকান বন্ধ রেখেছেন। কিন্তু সংসার চলবে কিভাবে? অনেক সময় পুলিশের চড়থাপ্পড় খেয়ে দোকানে কেনা-বেচা করেন।
রাজধানীর মতিঝিলে বিভিন্ন অফিস-প্রতিষ্ঠানে দুপুরের খাবার সরবরাহ করতেন শিবলী। এই খাবার সরবরাহ করেই তার সংসার চলত। প্রায় ৫০ জনকে খাবার সরবরাহ করে দিনে ৬০০-৭০০ টাকা উপার্জন হয়। ওই দিয়ে তার সংসার চলে যায়। অফিসগুলো বন্ধ থাকায় খাবার সরবরাহের কর্মটি আপাতত বন্ধ; যে কারণে টেনেটুনে তার সংসার চলছে এখন। আলী আকবর নামের এক রিকশাচালক গতকাল বলেন, তিনি মতিঝিল এলাকায় ফুটপাথে হকারি করতেন। দোকান এখন বন্ধ। বাধ্য হয়ে রিকশা চালাচ্ছেন। রিকশা চালানো আপাতত নিরাপদ। তিনি বলেন, রিকশা চালিয়ে কত দিন সংসার চলবে, তা বলতে পারছেন না। এভাবে অনেকেই আছেন যারা নিদারুণ কষ্টে এখন রিকশা চালাচ্ছেন। আবার কেউ কেউ পুঁজি ভেঙে খাচ্ছেন। আবার অনেকের দিন কাটছে খেয়ে-না-খেয়ে। জানালেন আলী আকবর।


আরো সংবাদ



premium cement