২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`
১২ বছরের শিশুর ওপর ভাই হত্যার দায়

স্বীকারোক্তি জোর করে আদায় দুঃখজনক : হাইকোর্ট

-

ছোট ভাই হত্যায় ১২ বছরের শিশু বড় ভাইয়ের কাছ থেকে জোরপূর্বক স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী আদায়ের ঘটনায় উষ্মা প্রকাশ করেছেন হাইকোর্ট। আদালত বলেছেন, যদি এমন ঘটনা ঘটে থাকে এবং এটি যদি সত্য হয়, তাহলে সেটি আমাদের দেশের জন্য দুঃখজনক। গতকাল সোমবার বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন ও বিচারপতি মো: আতাউর রহমানের ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ এক আবেদনের শুনানিকালে এ মন্তব্য করেন। পরে আদালত আগামী ২৯ জুন মামলার পরবর্তী শুনানি ও আদেশের জন্য দিন নির্ধারণ করেন।
আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী শিশির মনির। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ড. বশির উল্লাহ।
শুনানিতে আইনজীবী শিশির মনির বলেন, ‘একজন বাবা তার এক সন্তানকে হারালেন, ওই সন্তান হত্যার অভিযোগে বড় ছেলে যার বয়স ১২ বছর, তাকে করা হলো আসামি। উল্টো বাড়িঘরও ছাড়তে হয়েছে তাদের বাবা-মাকে।’ ঘটনাটিকে অমানবিক বলেও উল্লেখ করেন এই আইনজীবী।
আইনজীবী আদালতকে আরো বলেন, ১২ বছরের একটি শিশুকে নির্যাতন করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী নিয়ে নেয়া হলো। বিষয়টি শিশু আদালতের সামনে এলো, অথচ আইন থাকার পরও কোনো পদক্ষেপ নেই। এ কারণে বিষয়টি দেখভালের জন্য আমরা উচ্চ আদালতের কাছে এসেছি। যেন ঘটনার সঠিক তদন্ত হয়ে সুষ্ঠু বিচার সম্পন্ন হয়।
এ সময় আদালত বলেন, যদি এমন ঘটনা ঘটে থাকে এবং এটি যদি সত্য হয়, তাহলে সেটি আমাদের দেশের জন্য দুঃখজনক। আমরা এখনও জানি না কী ঘটেছে। এ সময় রাষ্ট্রপক্ষকে বিষয়টি গুরুত্বের সাথে নেয়ার কথা বলেন আদালত। পরে আদালত আগামী ২৯ জুন মামলার পরবর্তী শুনানির দিন নির্ধারণ করেন।
এর আগে ‘পুলিশের ভুলে ১২ বছরের শিশুর ঘাড়ে ছোট ভাই হত্যার দায়’ শিরোনামে একটি জাতীয় পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হয়। ওই সংবাদ যুক্ত করে হাইকোর্টে আবেদন করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী শিশির মনির।
পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৫ সাল থেকে ছোট ভাইকে হত্যার দায় নিয়ে ঘুরতে হচ্ছে ১২ বছর বয়সী বড় ভাইকে। ওই বছরের ২৫ আগস্ট বগুড়ার কাটাখালী গ্রামের একটি পাটক্ষেত থেকে উদ্ধার করা হয় মহিদুল ইসলামের ছেলে সোহাগের লাশ। এরপর জিজ্ঞাসাবাদের কথা বলে পুলিশ বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে যায় বড় ভাইকে। জোর করে তার কাছ থেকে হত্যার স্বীকারোক্তিও নেয়া হয়। এ মামলায় এখন বাড়িছাড়া পুরো পরিবার। এ দিকে সন্তান হত্যা এবং আরেক সন্তানের বিরুদ্ধে দায়ের করা মিথ্যা মামলার অভিযোগ থেকে রক্ষা করতে দ্বারে দ্বারে ঘুরে কোনো সহায়তা না পেয়ে পরিবারটি এখন দিশেহারা।


আরো সংবাদ



premium cement