২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫
`

ভারতীয় ধরনের করোনাভাইরাস দেশে শনাক্ত

-

বাংলাদেশেও এবার পাওয়া গেল ভারতীয় ডাবল মিউট্যান্টের করোনাভাইরাস। যশোর এলাকার আটজন করোনা আক্রান্ত ব্যক্তির নমুনার জিনোম সিকোয়েন্স করে ছয়জনের মধ্যেই ভারতীয় মিউট্যান্ট অথবা এর কাছাকাছি মিউট্যান্ট পাওয়া গেছে। এই ছয়জনের মধ্যে দু’জনের নমুনায় হুবহু ভারতীয় মিউট্যান্টের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে এবং অবশিষ্ট চারজনের নমুনায় ভারতীয় মিউট্যান্টের কাছাকাছি করোনাভাইরাস পাওয়া গেছে। যাদের নমুনায় ভারতীয় মিউট্যান্ট ও কাছাকাছি মিউট্যান্ট পাওয়া গেছে তারা সবাই যশোরের লোক হলেও এদের কেউই কয়েক দিন আগে যশোর হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যাওয়া করোনা আক্রান্ত ছিল না বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা: নাসিমা সুলতানা।
স্বাস্থ্য অধিদফতরে গতকাল শনিবার আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা জানান, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং রোগ তত্ত্ব রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর) পৃথকভাবে ওই আটজনের জিনোম সিকোয়েন্স করে। তিনি জানান, এই দুইটি প্রতিষ্ঠানের জিনোম সিকোয়েন্সে একই ধরনের ফল পাওয়া গেছে। দুইটি প্রতিষ্ঠানই করোনা আক্রান্ত আটজনের নমুনার মধ্যে দুইটির মধ্যে হুবহু ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট পেয়েছে।
অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা বলেন, যে ছয়জনের জিনোম সিকোয়েন্স করে করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট পাওয়া গেছে তাদের সবাইকে আইসোলেশন এবং নজরদারিতে রাখা হয়েছে, চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। এই ছয়জনের স্বাস্থ্যের অবস্থা কি জানতে চাইলে তিনি বলেন, এরা ভালোই আছেন, স্বাভাবিক আছেন। তারা খুব বেশি খারাপ অবস্থায় নেই।
তারা সবাই যশোরের লোকজন। তার মানে সীমান্তের ওদিকে আরো এ ধরনের ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত লোকজন পাওয়া যেতে পারে। নাসিমা সুলতানা বলেন, আরো বেশি করে জিনোম সিকোয়েন্স না করলে তা বলা যাবে না। অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা বলেন, ভারতীয় ডাবল ভ্যারিয়েন্ট ভাইরাসের সংক্রমণ ক্ষমতা অনেক বেশি। ফলে আমাদের আরো বেশি সতর্ক থাকতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে মেনে চলতে হবে।
প্রসঙ্গত, করোনাভাইরাস তথা যেকোনো ভাইরাসই ক্রমাগত নিজের মধ্যে পরিবর্তন এনে অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে চেষ্টা করে। পরিবর্তিত ভাইরাসগুলো বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই খুব ক্ষতিকর হয় না। করোনাভাইরাসের বেলায়ও এমনই ঘটছে। তবে কিছু কিছু পরিবর্তন খুবই সংক্রামক এবং ক্ষতিকর। এর মধ্যে দক্ষিণ আফ্রিকান ভ্যারিয়েন্ট, ইউকে ভ্যারিয়েন্ট, ব্রাজিলিয়ান ভ্যারিয়েন্ট এবং সর্বশেষ ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট অন্যতম। এই ভ্যারিয়েন্টগুলো খুবই সংক্রামক। ডাবল ভ্যারিয়েন্টের কারণে ভারতে এখন প্রতিদিন তিন লক্ষাধিক মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে এবং চার হাজারের বেশি মানুষ মারা যাচ্ছে। করোনাভাইরাসের ভারতীয় ভ্যারিয়েন্টের বৈজ্ঞানিক নাম বি.১.৬১৭। এই ভ্যারিয়েন্টটি ভারতে প্রথম শনাক্ত হয় গত বছরের অক্টোবর মাসে।
এই ভ্যারিয়েন্টের কারণেই ভারতে প্রতিদিনই করোনাভাইরাস সংক্রমণ ও মৃত্যুর নতুন রেকর্ড হচ্ছে। গত মার্চ মাসে করোনাভাইরাসের এই ডাবল মিউট্যান্ট ভ্যারিয়েন্ট সংক্রমণের কারণেই ভারতে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ অনেক বেশি প্রাণঘাতী হয়েছে। সংক্রমণ ও মৃত্যুর অতীত রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা বলেন, স্বাস্থ্য সচেতন না হলে, মাস্ক না পরলে এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় না রাখলে যেকোনো সময় আমরাও এই ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত হতে পারি।


আরো সংবাদ



premium cement