২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`

‘ভাসানচরে স্থানান্তর অপরিহার্য হয়ে উঠেছিল’

-

কক্সবাজার থেকে রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে স্থানান্তর অপরিহার্য হয়ে উঠেছিল বলে জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয়ের মতে, স্থানান্তরের ক্ষেত্রে সরকার প্রথম থেকেই বেশ পরিষ্কার ও স্বচ্ছ প্রক্রিয়া অনুসরণ করেছে। স্বেচ্ছায় নেয়া সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে প্রথম পর্যায়ে এক হাজার ছয় শতাধিক রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে স্থানান্তর করা হয়েছে।
গতকাল দেয়া এক বিবৃতিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ কথা জানিয়েছে। এতে বলা হয়েছে, কক্সবাজার ক্যাম্পগুলোর ওপর মাত্রাতিরিক্ত চাপ, ভূমিধসের আশঙ্কা ও অনাকাক্সিক্ষত কিছু ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে সরকার ধাপে ধাপে এক লাখ রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে সরিয়ে নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কক্সবাজারের ক্যাম্পগুলোতে ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গা গাদাগাদি করে অস্থায়ীভাবে রয়েছে। ক্যাম্পগুলোতে প্রতি বছর কয়েক হাজার নতুন শিশু জন্মাচ্ছে। হতাশাগ্রস্ত রোহিঙ্গাদের দীর্ঘমেয়াদি অবস্থানের কারণে নিরাপত্তা পরিস্থিতি খারাপের দিকে যাচ্ছে। এ অবস্থা সরকারকে বিকল্প চিন্তাভাবনা করতে বাধ্য করে। পরিকল্পনা অনুযায়ী সরকার নিজম্ব অর্থায়নে ৩৫ কোটি ডলার (দুই হাজার ৯৬১ কোটি টাকা) বিনিয়োগে ভাসানচরকে বসবাসের উপযোগী করে গড়ে তুলেছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, স্থানান্তরের আগে রোহিঙ্গা প্রতিনিধিদের ভাসানচর ঘুরে দেখিয়ে সুযোগ-সুবিধা সম্পর্কে অবহিত করা হয়, যাতে তারা সঠিক তথ্যের ভিত্তিতে স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত নিতে পারে। বেশ কিছু এনজিও এবং সাংবাদিকদেরও চরটি ঘুরিয়ে দেখানো হয়। ভাসানচরের সুযোগ-সুবিধা সম্পর্কে তারা সবাই সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। জাতিসঙ্ঘসহ সংশ্লিষ্ট অংশীদারদের সাথে বেশ কয়েক দফা আলোচনা হয়েছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ও জাতিসঙ্ঘ অচিরেই স্থানান্তর প্রক্রিয়ায় সম্পৃক্ত হবে বলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আশা করে।
এতে বলা হয়, রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে প্রত্যাবাসন সরকারের একমাত্র অগ্রাধিকার। কক্সবাজার থেকে রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে স্থানান্তর প্রত্যাবাসনের বিস্তৃত পরিকল্পনারই অংশ। ভাসানচরে রোহিঙ্গারা দক্ষতা উন্নয়ন ও জীবিকার সুযোগ পাবে। এটি তাদের মিয়ানমার সমাজে পুনঃত্রকত্রীকরণে সহায়ক হবে। রাখাইন রাজ্যের মতোই রোহিঙ্গারা ভাসানচরে মাছ ধরা, কৃষিকাজ, গবাদিপশু পালন প্রভৃতি কাজে নিজেদের সম্পৃক্ত করতে পারবে।
বিবৃতিতে বলা হয়, রোহিঙ্গারা মিয়ানমারের নাগরিক এবং তাদের অবশ্যই নিজ দেশে ফিরে যেতে হবে। মিয়ানমারের বাস্তুচ্যুত এসব মানুষকে নিরাপদ অস্থায়ী আশ্রয়ের জন্য সরকার সম্ভব সবকিছু করছে। প্রত্যাবাসনই রোহিঙ্গা সঙ্কট সমাধানের একমাত্র টেকসই পথ। আর এ জন্য জাতিসঙ্ঘসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে তাদের দায়িত্বের অংশ হিসেবে মিয়ানমারের সাথে বাস্তবসম্মতভাবে কাজ করতে হবে। প্রত্যাবাসনের অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টিতে মানবাধিকার গ্রুপগুলোও ভূমিকা রাখতে পারে।


আরো সংবাদ



premium cement