২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`

দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি বিভিন্ন সংগঠনের

-

সিলেট এমসি কলেজে তরুণী গৃহবধূ ও খাগড়াছড়িতে চাকমা প্রতিবন্ধী নারীকে গণধর্ষণের ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে অবিলম্বে দোষীদের গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছে বিভিন্ন সংগঠন।
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী : সিলেটের মরণচাঁদ (এমসি) কলেজে এক গৃহবধূকে গণধর্ষণের ঘটনা জাতির বিবেককে নাড়া দিয়েছে উল্লেখ করে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেছেন, অবিলম্বে ঘটনার সাথে জড়িত সবাইকে গ্রেফতার ও শাস্তির আওতায় আনতে হবে। গতকাল এক বিবৃতিতে তিনি এ দাবি জানান। কলেজ ছাত্রাবাস বন্ধ থাকা সত্ত্বেও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা কিভাবে সেখানে অবস্থান করছে এমন প্রশ্ন করে তিনি বলেন, এ ঘটনায় কলেজ কর্তৃপক্ষ ও প্রশাসন দায় এড়াতে পারে না। তাদেরও বিচারের আওতায় আনতে হবে।
জামায়াতে ইসলামী : বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার গতকাল এক বিবৃতিতে বলেন, ন্যক্কারজনক এ ঘটনা গোটা জাতির জন্য লজ্জাজনক। এ বর্বরোচিত ঘটনার নিন্দা, প্রতিবাদ ও ধিক্কার জানাই। এ ঘটনা প্রমাণ করে দেশে মানুষের স্বাধীনভাবে চলাফেরা ও জীবনের নিরাপত্তা বলতে কিছুই নেই। একইভাবে ২০১৬ সালের ৩ অক্টোবর শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ নেতা বদরুল সিলেট সরকারি মহিলা কলেজের ছাত্রী খাদিজা আক্তার নার্গিসকে প্রকাশ্য দিবালোকে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে মারাত্মকভাবে আহত করেছিল। যার বিচার এখনো হয়নি। গত মার্চ মাস থেকে সরকারি ঘোষণার মাধ্যমে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও ছাত্রাবাস বন্ধ থাকলেও এমসি কলেজ হোস্টেলে ছাত্রলীগের কর্মীরা কিভাবে অবস্থান করছেÑ এটি কারো বোধগম্য নয়। ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে স্থানীয় লোকদের হোস্টেলে অবস্থান করে মাদক সেবন ও সন্ত্রাসী কার্মকাণ্ডের অভিযোগ থাকলেও অজ্ঞাত কারণে প্রশাসন তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। এমসি কলেজে গণধর্ষণের ঘটনার সাথে জড়িতদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়ার জন্য আমি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।
খেলাফত মজলিস : গণধর্ষণের ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে অবিলম্বে জড়িত ছাত্রলীগ নেতাদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে খেলাফত মজলিস। গতকাল যৌথ বিবৃতিতে খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মোহাম্মদ ইসহাক ও মহাসচিব ড. আহমদ আবদুল কাদের বলেছেন, এমসি কলেজ ক্যাম্পাসে বেড়াতে যাওয়া স্বামীকে বেঁধে স্ত্রীকে ধরে ছাত্রাবাসে নিয়ে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা যে পাশবিক নির্যাতন চালিয়েছে তা ক্ষমতাসীন দলের ছাত্র সংগঠনের বর্বরোচিত কর্মকাণ্ডের সর্বশেষ বহিঃপ্রকাশ। এর আগেও ছাত্রলীগের নামধারী সন্ত্রাসীরা বিভিন্ন ক্যাম্পাসে নান ধরনের অপকর্মের ঘটনা ঘটিয়েছিল; কিন্তু সরকারের প্রচ্ছন্ন মদদে সবাই পার পেয়ে গেছে। যে কারণে তারা আরো হিংস্র হয়ে উঠেছে। এরা ছাত্রাঙ্গনসহ বিভিন্ন স্থানে পৈশাচিকতা চালিয়ে যাচ্ছে। মানুষের নিরাপত্তা ও ইজ্জতের জন্য হুমকি ছাত্রলীগের সব অপতৎপরতা বন্ধ করতে হবে।
জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম : সিলেটের এমসি কলেজে স্বামীর কাছ থেকে স্ত্রীকে কেড়ে নিয়ে এবং খাগড়াছড়িতে চাকমা প্রতিবন্ধী নারীকে গণধর্ষণের নিষ্ঠুর ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী। এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, আমরা গভীর উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করে আসছি যে, গণধর্ষণের এমন বর্বরতম ঘটনার প্রায় সব ক্ষেত্রেই দেখা গেছে, ধর্ষকদের দলীয় পরিচয় ও রাজনৈতিক আশ্রয় আছে এবং যেকোনো ধরনের অপরাধ করে পার পেয়ে যাওয়ার একটা অলিখিত নিশ্চয়তাও তাদের মনে কাজ করে থাকে। যেকোনো সভ্য সমাজের জন্য এটা ভয়াবহ উদ্বেগের বিষয়। তিনি আরো বলেন, ২০১২ সালের ডিসেম্বরে বিশ্বজিৎ দাসকে দিনদুপুরে কুপিয়ে হত্যার সুস্পষ্ট আলামত ও প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও আসামিদের খালাস পেয়ে যাওয়া কিংবা একের পর এক সাজাপ্রাপ্ত প্রভাবশালী খুনিদের রাষ্ট্রীয়ভাবে সাজা মওকুফ করে মুক্ত করার যে ভয়ঙ্কর সংস্কৃতি আওয়ামী লীগ চালু করেছে, তার ফলে একের পর এক হত্যা, গণধর্ষণ, সন্ত্রাস এবং সামাজিক নৈরাজ্য সৃষ্টির পথ খুলে গেছে। আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী গভীর হতাশা ব্যক্ত করে বলেন, সাধারণ মানুষের আইনি নিরাপত্তা, বিচার পাওয়ার নিশ্চয়তা ও সামাজিক সুরক্ষার কোনো কিছুই এখন আর অবশিষ্ট নেই। এভাবে একটি রাষ্ট্র চলতে পারে না।
জাসদ : জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু এমপি ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার এমপি এক বিবৃতিতে পার্বত্য চটগ্রামের খাগড়াছড়িতে প্রতিবন্ধী নারী এবং সিলেট এমসি কলেজ হোস্টেলে এক নারীকে দলবদ্ধভাবে ধর্ষণের ঘটনার সাথে যুক্ত নরপিশাচদের অবিলম্বে গ্রেফতার ও তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন। তারা বলেন, ধর্ষকদের মুখ না দেখে দল না দেখে জঘন্য অপরাধী হিসাবে দেখা এবং বিচারে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির পাশাপাশি সামাজিকভাবেও বর্জন করতে হবে।

 


আরো সংবাদ



premium cement