০৮ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১, ২৮ শাওয়াল ১৪৪৫
`


সীমান্ত এলাকাকে আবার অশান্ত করছে মিয়ানমার

-

রোহিঙ্গা গণহত্যার জন্য জাতিসঙ্ঘের সর্বোচ্চ আদালতে বিচারের মুখোমুখি হতে হয়েছে মিয়ানমারকে। অভিযোগ রয়েছে, মিয়ানমারের বিরুদ্ধে রাখাইন রাজ্যে বসবাসরত রোহিঙ্গা মুসলমানদের নির্বিচারে হত্যা, ধর্ষণ এবং তাদের আবাসস্থল ধ্বংস করা হয়েছে।
রাখাইনসহ সীমান্ত অঞ্চলকে আবার অশান্ত করে তুলছে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী। যা এ অঞ্চলের ভূরাজনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর বলে মনে করেন স্থানীয় সচেতন মহল। ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট রাখাইনে নিরাপত্তা বাহিনীর বেশ কিছু স্থাপনায় বিদ্রোহীদের হামলার পর রোহিঙ্গাদের গ্রামে গ্রামে শুরু হয় সেনাবাহিনীর অভিযান। সেই সাথে শুরু হয় বাংলাদেশ সীমান্তের দিকে রোহিঙ্গাদের ঢল। প্রায় এগারো লাখের মতো রোহিঙ্গা প্রাণ বাঁচাতে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। তাদের কথায় উঠে আসে নির্বিচারে হত্যা, ধর্ষণ, গণধর্ষণ, জ্বালাও-পোড়াওয়ের ভয়াবহ বিবরণ। যাকে জাতিগত নির্মূল অভিযান বলে জাতিসঙ্ঘ। রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের গ্রাম যেখানে ছিল সেখানে এখন সরকারি এবং সেনাবাহিনীদের জন্য ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। এ ছাড়া সেখানে পুলিশের ঘাঁটিও তৈরি করেছে মিয়ানমার সরকার। উখিয়া রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন সংগ্রাম কমিটির অন্যতম সদস্য সাংবাদিক নুর মোহাম্মদ সিকদার বলেন, নির্যাতনের মুখে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা মিয়ানমারের ১১ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা নাগরিক শুধু বাংলাদেশের জন্য নয়, এ অঞ্চলের নিরাপত্তার জন্যও হুমকিস্বরূপ। শুধু মানবিক কারণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছেন। হাজার হাজার রোহিঙ্গাদের প্রাণ বাঁচিয়েছেন।
২০১৭ সালে রোহিঙ্গাদের বিতাড়নের পরে রাখাইনে আরাকানিদের বিরুদ্ধে অপারেশন শুরু করেছে মিয়ানমার বাহিনী। গত কয়েক মাসে অন্তত ২০টি গ্রাম জ্বালিয়ে দিয়েছে তারা। এক লাখেরও বেশি আরাকানি বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী গৃহহারা হয়েছে।
মিয়ানমারে আগামী নভেম্বরে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। এ পরিস্থিতিতে রাখাইন অশান্ত হলে বাংলাদেশ ও ভারতের সীমান্তবর্তী প্রদেশগুলো এবং মিয়ানমারের অভ্যন্তরেও সমস্যা আরো প্রকট হবে।
এ বিষয়ে প্রত্যাবাসন সংগ্রাম কমিটির মহাসচিব এম গফুর উদ্দিন চৌধুরী বলেন, মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী এই অঞ্চলকে অস্থিতিশীল করে তুলছে। এর ফলে পাশের দেশগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তিনি বলেন, ‘মিয়ানমারে এখন গণতন্ত্রের মাধ্যমে ধ্বংসলীলা চালানো হচ্ছে। দীর্ঘদিন দমন-পীড়ন করে ২০১৭ সালে রোহিঙ্গাদের একটি বড় অংশকে তারা বলপূর্বক বাংলাদেশের দিকে ঠেলে দেয়। ফলে সেখানে শূন্যস্থান দখল করে আরাকানিরা। তিনি বলেন, ‘এখন মিয়ানমার বাহিনী আরাকানিদের বিরুদ্ধে অপারেশন চালাচ্ছে যা পরিস্থিতিকে আরো ঘোলাটে করবে।’ মিয়ানমার বাহিনীর উদ্দেশ্য ছিল আরাকানি ও রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর সংখ্যার মধ্যে ভারসাম্য তৈরি করা। এ কারণে তারা কয়েক লাখ রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশে বিতাড়ন করে কিন্তু এটি একটি ভয়ঙ্কর কৌশল। কারণ এর ফলে ওই এলাকার অর্থনীতি ও রাজনীতি উভয়ই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানান তিনি। তিনি বলেন, রাখাইনে ধান চাষ, মাছ উৎপাদনসহ আরো সেসব কৃষিকাজ রোহিঙ্গারা করত এখন যেখানে এই অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড না থাকার কারণে মিয়ানমার অর্থনৈতিক সমস্যায় পড়েছে।
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বিশেষ করে জাতিসঙ্ঘকে আরো বেশি তৎপর হওয়ার আহ্বান জানিয়ে গফুর এই মহাসচিব বলেন, ‘জাতিসঙ্ঘকে আরো বেশি স্বচ্ছ ও জবাবদিহি হতে হবে।
মিয়ানমারের বৌদ্ধরা যদি বাংলাদেশে পালিয়ে আসে তবে এখানে অবস্থিত রোহিঙ্গাদের সাথে তাদের জাতিগত দাঙ্গা হওয়ার আশঙ্কা আছে। কারণ ২০১২ ও ২০১৭ সালে আরাকানিরা রোহিঙ্গাদের অত্যাচার করেছে।’ নতুনভাবে মিয়ানমারের মানুষ বাংলাদেশে আসলে এটি নিরাপত্তার জন্য বড় হুমকি হবে বলে তিনি মনে করেন।


আরো সংবাদ



premium cement
প্রতিবেশী রাষ্ট্রকে খুশি রাখাই এ সরকারের পররাষ্ট্রনীতি : মির্জা ফখরুল ঢাকায় পৌঁছেছেন ভারতের পররাষ্ট্রসচিব ফিলিস্তিনপন্থী পোস্টে ‘লাইক’ দেয়ায় চাকরিচ্যুত ভারতীয় শিক্ষিকা গাজার আল-শিফা হাসপাতালে তৃতীয় গণকবর : ৪৯ লাশ উদ্ধার র‌্যাঙ্কিংয়ে উন্নতি হৃদয়-তাসকিন-মাহেদির ঠাকুরগাঁওয়ে জাল ভোট দেয়ার সময় যুবক আটক রোহিঙ্গাদের দ্রুত প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি মানবিক আবেদন কুবিতে উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে তদন্ত কমিটি গঠন ডলারের দাম একদিনেই কেন ৭ টাকা বাড়ানো হলো? হাইকোর্ট বিভাগের আইনজীবীদের ১৫তম ব্যাচের নতুন কমিটি বন্দরে ২ পোলিং এজেন্ট আটক, যুবকের কারাদণ্ড

সকল