২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`

নিজেকে সৎ ও নিষ্ঠাবান বলে দাবি করলেন স্বাস্থ্যের সাবেক ডিজি

-

স্বাস্থ্য অধিদফতরের সাবেক মহাপরিচালক (ডিজি) অধ্যাপক ডা: মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গতকাল সকাল ১০টা থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত টানা ৫ ঘণ্টা তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন দুদক পরিচালক মীর মো: জয়নুল আবেদীন শিবলীর নেতৃত্বাধীন টিম। এ সময় তিনি নিজেকে সৎ ও নিষ্ঠাবান বলে দাবি করেছেন।
জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আবুল কালাম আজাদ দুদকের প্রধান কার্যালয়ের সামনে উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, ‘দুদক আমাকে করোনা দুর্যোগের সময় সিএমএসডির (কেন্দ্রীয় ঔষধাগার) কেনাকাটায় অনিয়মের বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য অনুরোধ করেছে। আমি তাদের অনুরোধে হাজির হয়েছে। এই কেনাকাটায় অধিদফতরের মহাপরিচালক হিসেবে আমার কিছু করার থাকে না। তারা তাদের মতো করে কেনাকাটা করেছে। তিনি বলেন, দুদকের কর্মকর্তারা আমার কাছে যেসব তথ্য জানতে চেয়েছেন আমি তার সব জবাব দিয়েছি।’
জিজ্ঞাসাসাদের বিষয়ে দুদক সচিব মুহাম্মদ দিলওয়ার বখত সাংবাদিকদের বলেন, ‘করোনা মহামারীর কালে স্বাস্থ্য সুরক্ষাসামগ্রী কেনাকাটায় অনিয়মের বিষয়ে অনুসন্ধান কর্মকর্তা স্বাস্থ্য অধিদফতরের সাবেক আবুল কালাম আজাদ, উপপরিচালক মো: ইউনুস আলী ও গবেষণা কর্মকর্তা ডা: মো: দিদারুল ইসলামকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন। অনুসন্ধান কর্মকর্তা তাদের কাছ থেকে কী তথ্য পেয়েছেন, সেটি অনুসন্ধানের স্বার্থে প্রকাশ করা যাচ্ছে না।
এ দিকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আবুল কালাম আজাদ তার আগে থেকে লিখে আনা একটি বক্তব্য সাংবাদিকদের পড়ে শোনান। ওই বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘আমি একজন কঠোর পরিশ্রমী, নিষ্ঠাবান, সৎ ও মেধাবী কর্মকর্তা হিসেবে সারাজীবন কাজ করেছি। আমি একজন অহঙ্কারমুক্ত সরল এবং সজ্জন ব্যক্তি। জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে আমার পর্যাপ্ত জ্ঞান অভিজ্ঞতা ও কর্মদক্ষতা আছে। করোনার মতো মহাদুর্যোগে যাতে লাখ লাখ মানুষের জীবনহানি না ঘটে সে জন্য আমার জ্ঞান, অভিজ্ঞতা বিবেকবোধ ও সদিচ্ছা থেকে নিজের জীবনকে তুচ্ছ বলে মনে করে কাজ করেছি। আমি নিজে করোনায় আক্রান্ত হয়ে ২০ দিন চিকিৎসাধীন থেকে বলা যায় মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এসেছি। সুস্থ হয়ে পরদিনই কাজে যোগ দিয়েছে।
আবুল কালাম আজাদ বলেন, করোনাকালীন বিভিন্ন স্বাস্থ্যসামগ্রী কেনার বিষয়ে অভিযোগ ওঠায় দুর্নীতি দমন কমিশন তদন্ত করছে। সাবেক মহাপরিচালক হিসেবে আমি কি জানি তার জন্য দুদকের তদন্ত কর্মকর্তা আজ আমাকে আসার জন্য অনুরোধ করেছিলেন। আমি যা জানি তা তাদের বিস্তারিত বলেছি। তদন্তাধীন বিষয় সম্পর্কে এ মুহূর্তে আমার পক্ষে এর বেশি কিছু আপনাদের বলা সম্ভব নয়।
তিনি আরো বলেন, আপনারা সবাই জানেন যে আমি ২০১৬ সাল থেকে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছিলাম। আমি লক্ষ করছিলাম যে, আমাকে নিয়ে অপপ্রচারের অপচেষ্টা শুরু হয়েছে। পদ আঁকড়ে রাখা আমার কাছে সম্মানের বিষয় নয়। তাই বিবেক তাড়িত হয়ে গত ২১ জুলাই স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক হিসেবে স্বেচ্ছায় অব্যাহতি দিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করি।
তিনি আরো বলেন, সুস্পষ্টভাবে বলতে চাই যে কেউ অপরাধ করলে তার কঠোর শাস্তি হোক এটি আমি চাই। এ বিষয়ে তদন্তে আমি প্রয়োজনীয় সব সহযোগিতা করে যাবো। স্বাস্থ্য অধিদফতরের সাবেক মহাপরিচালক (ডিজি) অধ্যাপক ডা: মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদসহ ৫ কর্মকর্তাকে ‘জরুরি’ তলব করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
গত ৬ আগস্ট দুদক পরিচালক মীর মো: জয়নুল আবেদীন শিবলী স্বাক্ষরিত চিঠিতে আবুল কালাম আজাদকে আগামী ১২ আগস্ট এবং আরেক পরিচালক শেখ মো: ফানাফিল্যা স্বাক্ষরিত চিঠিতে তাকে ১৩ আগস্ট কমিশনে হাজির হতে বলা হয়েছে।


আরো সংবাদ



premium cement