২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`

অস্ত্র মামলায় সাহেদের বিরুদ্ধে চার্জশিট

-

করোনা নিয়ে প্রতারণা ও জালিয়াতির অভিযোগে গ্রেফতার রিজেন্ট হাসপাতালের মালিক সাহেদকে অভিযুক্ত করে অস্ত্র মামলায় চার্জশিট দাখিল করেছে পুলিশ।
গতকাল বিকেলে ঢাকার সিএমএম আদালতে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের ইন্সপেক্টর মো: শায়রুল এই চার্জশিট দাখিল করেন। এ দিকে মামলার তদন্তের জন্য সাহেদকে গতকাল সাতক্ষীরা নিয়ে গেছে র্যাব।
মামলার তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, তদন্তকালে রাজধানীর উত্তরায় সাহেদের আস্তানা থেকে আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধারের ঘটনায় মামলা দায়ের হয়। সেই মামলায় সাহেদকে অভিযুক্ত করে গতকাল চার্জশিট প্রদান করা হয়েছে।
গত ১৫ জুলাই ভোরে সাতক্ষীরার দেবহাটা সীমান্ত থেকে গ্রেফতার করা হয় সাহেদকে। পরদিন করোনা পরীক্ষার নামে ভুয়া রিপোর্টসহ বিভিন্ন প্রতারণার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় সাহেদের ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। রিমান্ডে থাকা সাহেদকে নিয়ে ১৮ জুলাই রাতে উত্তরায় অভিযান চালিয়ে অস্ত্র ও মাদক উদ্ধার করে গোয়েন্দা পুলিশ। পরে তার বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে মামলা দায়ের করা হয়। এ দিকে দেবহাটা উপজেলা থেকে অস্ত্র ও গুলিসহ গ্রেফতারের ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলার তদন্তের জন্য সাহেদকে সাতক্ষীরায় নেয়া হয়েছে। গতকাল বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে র্যাবের একটি টিম সাহেদকে নিয়ে সাতক্ষীরার দেবহাটার উদ্দেশ্যে রওনা হয়। দেবহাটা থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে দায়ের করা মামলায় ১০ দিনের রিমান্ডে রয়েছেন সাহেদ। র্যাব-৬ এর সাতক্ষীরা ক্যাম্পের কমান্ডার সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার বজলুর রশিদ বলেন, দেবহাটা থানায় দায়ের করা মামলায় সাহেদ এখন রিমান্ডে রয়েছেন। মামলার তদন্তের জন্য তদন্ত কর্মকর্তা সাহেদকে যেখান থেকে গ্রেফতার করা হয়েছিল সেখানে নিয়ে গেছেন। তদন্তকাজ শেষ হলে তাকে র্যাব-৬ খুলনা কার্যালয়ে নেয়া হবে।
গত ১৫ জুলাই দেবহাটা উপজেলার শাখরা কোমরপুর সীমান্তের লবঙ্গ নদীর ওপর নির্মিত বেইলি সেতুর নিচ থেকে সাহেদকে বোরকা পরিহিত অবস্থায় গ্রেফতার করে র্যাব। এ সময় তার কাছ থেকে একটি পিস্তল ও তিন রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়। ওই দিনই র্যাব-৬ এর সিপিসি-১ এর ডিএডি নজরুল ইসলাম বাদি হয়ে বিশেষ ক্ষমতা আইনে সাহেদের বিরুদ্ধে দেবহাটা থানায় একটি মামলা করেন। এ মামলার প্রধান আসামি সাহেদ।
সাতক্ষীরা সংবাদদাতা জানান, সাতক্ষীরার দেবহাটা থানার মামলায় ১০ দিন রিমান্ডের চতুর্থ দিনে বৃহস্পতিবার বিকেলে রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান মো: সাহেদ ওরফে সাহেদ করিমকে খুলনার র্যাব কার্যালয় থেকে তার গ্রেফতারস্থল সীমান্তবর্তী দেবহাটার শাখরা-কোমরপুর এলাকায় নিয়ে যাওয়া যায়। তাকে লাবণ্যবতী নদীতে নির্মিত বেইলি ব্রিজের উপর মিনিট দশেক রাখা হয়। পরে তাকে আবারো খুলনায় র্যাব-৬-এর সদর দফতরে নিয়ে যাওয়া হয়।
তবে তদন্তের স্বার্থে রিমান্ডের প্রাপ্ত তথ্য না জানানো হলেও দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে, সাহেদ করিম মাঝে মাঝে খুব ক্ষ্যাপাটে আচরণ করছেন। আবার কখনো কখনো ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করছেন। তবে গ্রেফতার হওয়ার আগে সাতক্ষীরায় তার অবস্থান ও অস্ত্রসহ বিভিন্ন বিষয়ে তিনি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন।
এ বিষয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা র্যাব-৬ সাতক্ষীরা ক্যাম্পের এসআই রেজাউল ইসলাম জানান, গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে, তবে অধিকতর তদন্তের স্বার্থে তা এখনই প্রকাশ করা সমীচীন হবে না।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, দেবহাটা উপজেলার কোমরপুর সীমান্তে অস্ত্র ও গুলিসহ গ্রেফতার হওয়া রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান সাহেদ করিমকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গত রোববার ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন সাতক্ষীরার আমলি আদালত-৩-এর বিচারক (ভার্চুয়াল) রাজীব রায়। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা খুলনা র্যাব-৬-এর সাতক্ষীরা ক্যাম্পের উপপরিদর্শক রেজাউল করিমের করা ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন শুনানি শেষে এ আদেশ দেন বিচারক। পরের দিন সোমবারই তাকে ঢাকা থেকে খুলনা র্যাব কার্যালয়ে নিয়ে আসা হয়।
প্রসঙ্গত, গত ১৫ জুলাই বুধবার ভোরে সাতক্ষীরার দেবহাটা উপজেলার কোমরপুর সীমান্তের লাবণ্যবতী নদীর উপর নির্মিত ব্রেইলি ব্রিজের নিচ থেকে সাহেদকে বোরকা পরিহিত অবস্থায় গ্রেফতার করে র্যাব। এ সময় তার কাছ থেকে একটি পিস্তল ও তিন রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়। এরপর তাকে হেলিকপ্টারে করে ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয়। ওই দিন রাতে র্যাব-৬-এর সিপিসি-১-এর ডিএডি নজরুল ইসলাম বাদি হয়ে ১৯৭৮ সালের আর্মস অ্যাক্টের ১৯-এ উপধারা এবং ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনের ২৫-এর বি/এ ধারায় দেবহাটা থানায় একটি মামলা (৫ নম্বর) দায়ের করেন। মামলায় সাহেদ করিমসহ তিনজনকে আসামি করা হয়।


আরো সংবাদ



premium cement