২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`

করোনায় আরো ৩৫ মৃত্যু

-

দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে এক দিনে আরও ৩৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছেন তিন হাজার ৯ জন। এ দিন সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত তিন হাজার ৯ জনকে নিয়ে দেশে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে দুই লাখ ৩২ হাজার ১৯৪ জন হলো। আর গত এক দিনে মারা যাওয়া ৩৫ জনকে নিয়ে দেশে করোনাভাইরাসে মৃতের মোট সংখ্যা দাঁড়াল তিন হাজার ৩৫ জনে।
বাসা ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আরও দুই হাজার ৮৭৮ জন রোগী সুস্থ হয়ে উঠেছেন গত এক দিনে। তাতে সুস্থ রোগীর মোট সংখ্যা দাঁড়াল এক লাখ ৩০ হাজার ২৯২ জন। শনাক্ত বিবেচনায় ২৪ ঘণ্টায় সুস্থতার হার ৫৬ দশমিক ১১ শতাংশ এবং মৃত্যুর হার এক দশমিক ৩১ শতাংশ।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা: নাসিমা সুলতানা গতকাল বুধবার নিয়মিত অনলাইন বুলেটিনে দেশে করোনাভাইরাস পরিস্থিতির এই সবশেষ তথ্য তুলে ধরেন।
বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়ে ৮ মার্চ। তা দুই লাখ পেরিয়ে যায় ১৮ জুলাই। এর মধ্যে ২ জুলাই চার হাজার ১৯ জন কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়, যা এক দিনের সর্বোচ্চ শনাক্ত। সংক্রমণ শনাক্তের ১০ দিন পর ১৮ মার্চ দেশে প্রথম মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য অধিদফতর। মঙ্গলবার সেই সংখ্যা তিন হাজার স্পর্শ করে। এর মধ্যে ৩০ জুন এক দিনেই ৬৪ জনের মৃত্যুর খবর জানানো হয় বুলেটিনে, যা এক দিনের সর্বোচ্চ মৃত্যু।
ড. নাসিমা সুলতানা বলেন, গত এক দিনে যারা মারা গেছেন তাদের ৩০ জন পুরুষ, পাঁচজন নারী। ২৯ জন হাসপাতালে এবং ছয়জন বাড়িতে মারা গেছেন। এই ৩৫ জনের মধ্যে একজনের বয়স ছিল ৮০ বছরের বেশি। এ ছাড়া সাতজনের বয়স ৭১ থেকে ৮০ বছরের মধ্যে, ১২ জনের বয়স ৬১ থেকে ৭০ বছরের মধ্যে, সাতজনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে, ছয়জনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে, একজনের বয়স ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে এবং একজনের বয়স ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে ছিল।
তাদের ১৪ জন ঢাকা বিভাগের, আটজন চট্টগ্রাম বিভাগের, চারজন বরিশাল বিভাগের, একজন ময়মনসিংহ বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন। এ ছাড়া খুলনা, সিলেট, রাজশাহী ও রংপুর বিভাগে দুইজন করে মারা গেছেন।
নাসিমা সুলতানা জানান, এ পর্যন্ত মারা যাওয়া তিন হাজার ৯ জনের মধ্যে দুই হাজার ৩৮৮ জন পুরুষ এবং ৬৪৭ জন নারী। তাদের মধ্যে এক হাজার ৩৯৪ জনের বয়স ছিল ৬০ বছরের বেশি। এ ছাড়া ৮৭৬ জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে, ৪৩১ জনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে, ২০১ জনের বয়স ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে, ৮৫ জনের বয়স ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে, ৩০ জনের বয়স ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে এবং ১৮ জনের বয়স ১০ বছরের কম ছিল।
এক হাজার ৪৫৮ জন ঢাকা বিভাগের, ৭৩৯ জন চট্টগ্রাম বিভাগের, ১৭৯ জন রাজশাহী বিভাগের, ২১৪ জন খুলনা বিভাগের, ১১৯ জন বরিশাল বিভাগের, ১৪৬ জন সিলেট বিভাগের, ১১৫ জন রংপুর বিভাগের এবং ৬৫ জন ময়মনসিংহ বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন।
নাসিমা সুলতানা জানান, চাঁদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নমুনা পরীক্ষার নতুন একটি ল্যাব যুক্ত হয়েছে। এ ছাড়া কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজে একটি পিসিআর মেশিন বসানো হয়েছে।
বুলেটিনে জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় ১৪ হাজার ২৫৩টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। এর মধ্যে সারা দেশে ৮২টি ল্যাবে ১৪ হাজার ১২৭টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এ পর্যন্ত মোট নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ১১ লাখ ৫১ হাজার ২৫৮টি।
২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ২১ দশমিক ৩০ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৫৬ দশমিক ১১ শতাংশ এবং মৃত্যুর হার এক দশমিক ৩১ শতাংশ।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক আরও জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে রাখা হয়েছে ৮২৭ জনকে। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ১৮ হাজার ৬৬৯ জন। আইসোলেশন থেকে ২৪ ঘণ্টায় এক হাজার ১৪৬ জন এবং এখন পর্যন্ত ৩০ হাজার ৬৪৭ জন ছাড় পেয়েছেন। এখন পর্যন্ত আইসোলেশন করা হয়েছে ৪৯ হাজার ৩১৬ জনকে।
প্রাতিষ্ঠানিক ও হোম কোয়ারেন্টিন মিলে ২৪ ঘণ্টায় কোয়ারেন্টিন করা হয়েছে এক হাজার ৯৫৫ জনকে। এখন পর্যন্ত কোয়ারেন্টিন করা হয়েছে চার লাখ ৩১ হাজার ৯৪৪ জনকে। কোয়ারেন্টিন থেকে গত ২৪ ঘণ্টায় দুই হাজার ৫৭০ জন এবং এখন পর্যন্ত তিন লাখ ৭৪ হাজার ৭০০ জন ছাড় পেয়েছেন। বর্তমানে মোট কোয়ারেন্টিনে আছেন ৫৭ হাজার ২৪৪ জন।
চট্টগ্রামে আরও ১১৭ জনের দেহে সংক্রমণ
চট্টগ্রাম ব্যুরো জানায়, চট্টগ্রামে গত ২৪ ঘণ্টায় এক হাজার আটজনের নমুনায় আরও ১১৭ জনের দেহে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ পাওয়া গেছে। আক্রান্তদের মধ্যে ৮৮ জন নগরের ও ২৯ জন বিভিন্ন উপজেলার। এখন পর্যন্ত চট্টগ্রামে ১৪ হাজার ৯৩ জনের মধ্যে করোনা শনাক্ত হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রামে করোনায় মৃত্যু হয়নি। গতকাল বুধবার চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্র এসব তথ্য নিশ্চিত করেছে। সূত্র জানায়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ল্যাবে ১৫২ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ২৪ জনের করোনা পজিটিভ পাওয়া যায়। এর মধ্যে ১২ জন নগরের ও ১২ জন উপজেলার। বিআইটিআইডিতে ৩৯৯ জনের নমুনা পরীক্ষায় ১৪ জনের দেহে করোনার জীবাণু পাওয়া গেছে। এর মধ্যে আটজন নগরের ও ছয়জন উপজেলা পর্যায়ের বাসিন্দা। চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ ল্যাবে ১৫২ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ২৯ জনের করোনা মিলেছে। এর মধ্যে ২৪ জন নগরের ও পাঁচজন উপজেলার বাসিন্দা। চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি বিশ্ববিদ্যালয় ল্যাবে ১৫১ জনের নমুনা পরীক্ষায় নগরের ছয়জন ও উপজেলার চারজনের দেহে করোনার জীবাণু মিলেছে। কক্সবাজার মেডিক্যাল কলেজ ল্যাবে চট্টগ্রামের ১২ জনের নমুনা পরীক্ষায় একজনের দেহে করোনার জীবাণু পাওয়া গেছে। বেসরকারি ইম্পেরিয়াল হাসপাতাল ল্যাবে ৭৮ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৩০ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। শেভরণ ল্যাবে ৬৪ জনের নমুনা পরীক্ষায় ২১ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে।
চবি ভিসির স্বামীর মৃত্যু : করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ভিসি প্রফেসর ড. শিরীণ আখতারের স্বামী মুক্তিযোদ্ধা মেজর (অব:) লতিফুল আলম চৌধুরী (৭১)। গত মঙ্গলবার রাত দেড়টার দিকে চট্টগ্রাম সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালের (সিএমএইচ) আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। এর আগে গত ১১ জুলাই নমুনা পরীক্ষার ফলাফলে ভিসি শিরীণ আখতার, তার স্বামী মো: লতিফুল আলম চৌধুরী, মেয়ে এবং তিন নাতনিসহ পরিবারের সাত সদস্যের করোনা শনাক্ত হয়। পরে ১৩ জুলাই রাতে ভিসি, তার স্বামী ও মেয়ে রিফাত মোস্তফা সিএমএইচে ভর্তি হন।
রাজশাহী বিভাগে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে ১৬৭
রাজশাহী ব্যুরো জানায়, করোনাভাইরাসে রাজশাহী বিভাগে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে ১৬৭ জনে দাঁড়িয়েছে। সর্বশেষ মঙ্গলবার বিভাগের নওগাঁ ও বগুড়ায় একজন করে কোভিড-১৯ রোগীর মৃত্যু হয়েছে। গতকাল বুধবার দুপুরে বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা: গোপেন্দ্রনাথ আচার্য্য সাংবাদিকদের এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, রাজশাহী বিভাগের মধ্যে বগুড়ায় সর্বোচ্চ ১০২ জনের মৃত্যু হয়েছে করোনায়। এ ছাড়া রাজশাহীতে ২৩ জন, চাঁপাইনবাবগঞ্জে পাঁচজন, নওগাঁয় ১৫ জন, নাটোরে একজন, জয়পুরহাটে দুইজন, সিরাজগঞ্জে ১১ জন এবং পাবনায় ৯ জন মারা গেছেন। মঙ্গলবার বিভাগে নতুন ২৯৬ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছেন। আর সুস্থ হয়েছেন ২৯০ জন। এ পর্যন্ত বিভাগে ১২ হাজার ৩৩৫ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছেন। সুস্থ হয়েছেন ছয় হাজার ৪৮২ জন।
খুলনা আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক এমপি মৃত্যু
খুলনা ব্যুরো জানায়, সাবেক সংসদ সদস্য ও খুলনা জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট শেখ নুরুল হক (৭৮) করোনা চিকিৎসা নিতে ঢাকায় গিয়ে সেখানেই গতকাল বুধবার ইন্তেকাল করেছেন। তিনি খুলনা-৬ (কয়রা-পাইকগাছা) আসনে ১৯৯৬ ও ২০১৪ সালে জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। তার পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, গত ৯ জুলাই নূরুল হকের করোনা শনাক্ত হয়। পরদিন তাকে খুলনা করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। অবস্থা সঙ্কটাপন্ন হওয়ায় চিকিৎসকরা তাকে ঢাকায় পাঠানোর পরামর্শ দেন। ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ২৩ জুলাই তার করোনা নেগেটিভ আসে। তবে শারীরিকভাবে প্রচণ্ড দুর্বল থাকায় তিনি কোমায় চলে যান। এ অবস্থায় বুধবার বেলা সোয়া ২টার দিকে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তার কিডনি, ডায়াবেটিকস ও হার্টের সমস্যা ছিল।
কুমেক হাসপাতালে উপসর্গ নিয়ে ছয়জনের মৃত্যু
কুমিল্লা সংবাদদাতা জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ (কুমেক) হাসপাতালে করোনা উপসর্গ নিয়ে মৃত্যু হয়েছে আরও ছয়জনের। তাদের মধ্যে তিনজন পুরুষ ও তিনজন নারী। গতকাল বুধবার কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা: সাজেদা খাতুন এ তথ্য জানান। মৃত ব্যক্তিরা হলেন- কুমিল্লার সদর উপজেলার তালতলা এলাকার মৃত আলী মিয়ার ছেলে জুলফিকার আলী টিটু (৪৬), ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বিজয়নগর উপজেলার মোমেনের ছেলে ফুল মিয়া (৬৫), কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার ওমর আলীর মেয়ে আতরন্নেছা (৭৭), কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলার আবদুল জলিলের মেয়ে শাহানারা বেগম (৫৫), কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলার কাদিরপুর এলাকার আবদুল মতিনের ছেলে মো: শাহাজাহান (৫৫) ও কুমিল্লার ক্যান্টনমেন্ট এলাকার জহিরুল ইসলামের মেয়ে তাসলিমা বেগম (৪০)। এ পর্যন্ত মেডিক্যালের করোনা ইউনিটে পজিটিভ ও উপসর্গে মারা গেছেন ২৭৫ জন।
টাঙ্গাইলে চারজনের মৃত্যু, নতুন আক্রান্ত ৪১
টাঙ্গাই সংবাদদাতা জানান, টাঙ্গাইলে করোনায় আরও চারজনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে দেলদুয়ারে দুইজন, টাঙ্গাইল সদরে একজন ও ভূঞাপুরে একজন। এ নিয়ে জেলায় মৃত্যু হলো ২৯ জনের। নতুুন করে আরও ৪১ জন এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। বুধবার পর্যন্ত জেলায় মোট আক্রান্ত হলেন এক হাজার ৫৫৬ জন। এর মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ৮৬৬ জন। হাসপাতালে ভর্তি আছেন ৮৫ জন। টাঙ্গাইল সিভিল সার্জন অফিস থেকে জানানো হয়, নতুুন আক্রান্তদের মধ্যে টাঙ্গাইল সদরে সর্বোচ্চ ২৮ জন, সখিপুরে একজন, মির্জাপুরে দুইজন, কালিহাতীতে একজন, ঘাটাইলে চারজন, মধুপুরে চারজন ও ধনবাড়িতে একজন। করোনায় আক্রান্ত হয়ে যারা মারা গেছেন তাদের মধ্যে টাঙ্গাইল সদরে সর্বোচ্চ ১০ জন, মির্জাপুরে ছয়জন, ঘাটাইলে দুইজন, ধনবাড়িতে দুইজন, দেলদুয়ারে তিনজন, ভূঞাপুরে দুইজন, সখিপুর, মধুপুর, নাগরপুর ও বাসাইলে একজন করে রয়েছেন। বিভিন্ন উপজেলায় আক্রান্তদের মধ্যে টাঙ্গাইল সদরে সর্বোচ্চ ৫৬৭ জন, মির্জাপুরে ৩৬৮ জন, ভূঞাপুরে ৬২ জন, ঘাটাইলে ৫৭ জন, নাগরপুরে ৫২ জন, মধুপুরে ১০৬ জন, সখিপুরে ৬৬ জন, গোপালপুরে ৫৫ জন, দেলদুয়ারে ৬৪ জন, ধনবাড়িতে ৪১ জন, কালিহাতীতে ৭৮ জন এবং বাসাইলে ৪১ জন।
সাতক্ষীরায় করোনায় ও উপসর্গ নিয়ে দুইজনের মৃত্যু
সাতক্ষীরা সংবাদদাতা জানান, করোনায় ও উপসর্গ নিয়ে সাতক্ষীরা মেডিক্যাল কলেজ (সামেক) হাসপাতালে দুইজনের মৃত্যু হয়েছে। এ দিকে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আরও ৯ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে জেলায় ২৯ জুলাই পর্যন্ত মোট ৬৮২ জন করোনায় আক্রান্ত হলেন। তাদের মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ৩৫৮ জন। মারা গেছেন ২২ জন। মৃত ব্যক্তিরা হলেন- করোনার উপসর্গ জ্বর ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার পানিয়া গ্রামের আহছান আলীর ছেলে কৃষক আকবর আলী (৬০) ও একই উপজেলার তেঁতুলিয়া গ্রামের শহর আলীর ছেলে করোনায় আক্রান্ত আফসার উদ্দিন (৬০)।
বগুড়ায় আরও ৬১ জন আক্রান্ত
বগুড়া অফিস জানায়, বগুড়ায় নতুন করে আরও ৬১ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এ নিয়ে জেলায় মোট আক্রান্ত হয়েছে চার হাজার ৬৮৭ জন। নতুন করে সুস্থ হয়েছেন ১০৮ জন। এ নিয়ে মোট সুস্থ হয়েছেন তিন হাজার ১০৪ জন। বগুড়া সিভিল সার্জন অফিসের মেডিক্যাল অফিসার ডা: ফারজানুল ইসলাম জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন একজনের মৃত্যু নিয়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ১০২ জনে। জেলায় এখন করোনা রোগী চিকিৎসাধীন আছে এক হাজার ৪৮১ জন।
নোয়াখালী সংবাদদাতা জানান, নোয়াখালীতে ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৩১ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ১২৯ জন। এ নিয়ে নোয়াখালী জেলায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা তিন হাজার ৫৬ জন। তাদের মধ্যে ৬২ জনের মৃত্যু হয়েছে। আক্রান্তদের মধ্যে সুস্থ হয়েছেন দুই হাজার ২৩৮ জন। নতুন করে আক্রান্তদের মধ্যে রয়েছে নোয়াখালী সদর উপজেলায় ১১ জন, সুবর্ণচরে পাঁচজন, বেগমগঞ্জে চারজন, সোনাইমুড়ীতে একজন, চাটখিলে একজন, সেনবাগে দুইজন, কোম্পানিগঞ্জে তিনজন ও কবিরহাটে চারজন।
মাগুরার জেলা প্রশাসক আক্রান্ত
মাগুরা সংবাদদাতা জানান, করোনা আক্রান্ত হলেন মাগুরার জেলা প্রশাসক ড. আশরাফুল আলম। এ ছাড়া নতুন করে ২৪ জনসহ মাগুরায় ৪২০ জন করোনা আক্রান্ত হলেন। মাগুরার সিভিল সার্জন ডা: প্রদীপ কুমার সাহা জানান, জেলা প্রশাসক ড. আশরাফুল আলমের গত দুই দিন আগে সামান্য জ¦র আসায় তার নমুনা সংগ্রহ করে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ^বিদ্যালয়ের জিনোম সেন্টারে পাঠানো হয় বুধবার তার করোনা পজিটিভ রিপোর্ট আসে। তবে তিনি শারীরিকভাবে সুস্থ আছেন। বর্তমানে তিনি হোম কোয়ারেন্টিনে আছেন।
চাঁদপুর সংবাদদাতা জানান, চাঁদপুরে নতুন আরও ৫৯ জনের করোনা পজিটিভ রিপোর্ট এসেছে। নতুন আক্রান্তদের মধ্যে চাঁদপুর সদর ও শাহরাস্তিতে উপসর্গে মৃত দুইজনও রয়েছেন। এ নিয়ে জেলায় করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে এক হাজার ৭৫৪ জন। মৃতের সংখ্যা বেড়ে হলো ৭৪ জন। এ পর্যন্ত করোনামুক্ত হয়েছেন এক হাজার ৭৪ জন। চাঁদপুরের সিভিল সার্জন সাখাওয়াত উল্লাহ জানান, নতুন আক্রান্তদের মধ্যে চাঁদপুর সদরে ২৫ জন, হাইমচরে দুইজন, মতলব উত্তরে চারজন, মতলব দক্ষিণে চারজন, ফরিদগঞ্জে ৯ জন, হাজীগঞ্জে সাতজন ও শাহরাস্তিতে আটজন রয়েছেন।
শেরপুর সংবাদদাতা জানান, শেরপুরে গতকাল নতুন করে আরও ৯ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছেন। তাদের মধ্যে শেরপুর জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি এ কে এম মোসাদ্দেক ফেরদৌসীসহ শেরপুর সদর উপজেলার আটজন এবং নকলা উপজেলায় একজন। এ নিয়ে জেলায় ৩০৮ জন করোনায় আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে। তাদের মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ২৭১ জন ও মারা গেছেন পাঁচজন।
নীলফামারী সংবাদদাতা জানান, নীলফামারীতে এক চিকিৎসকসহ নতুন করে জেলায় ১২ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। মঙ্গলবার রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করে সিভিল সার্জন রণজিৎ কুমার বর্মণ জানান, এ নিয়ে জেলায় করোনা রোগীর সংখ্যা দাঁড়াল ৬৪৩ জনে। জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্র মতে, নতুন ১২ জনের মধ্যে রয়েছে নীলফামারী সদর আধুনিক হাসপাতালের এক চিকিৎসকসহ ১০ জন ও জলঢাকা উপজেলায় দুইজন। নীলফামারী জেলায় মোট আক্রান্ত ৬৪৩ জনের মধ্যে এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ৫৭২ জন।
কুলাউড়ায় এক ব্যক্তির মৃত্যু
কুলাউড়া (মৌলভীবাজার) সংবাদদাতা জানান, মোলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার ব্রাহ্মণবাজার ইউনিয়নের মৌলভীগাঁও গ্রামের বাসিন্দা আব্দুছ ছবুর (৭০) করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মঙ্গলবার বিকেলে সিলেট শামসুদ্দিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেছেন। পরিবারে লোকজন বিষয়টি গোপন করে রাত ৯টায় তড়িঘড়ি করে স্থানীয় কবরস্থানে তার লাশ দাফন করেন। দাফনের পর স্থানীয় লোকজন জানতে পারেন মৃত ব্যক্তির করোনা পজিটিভ ছিল।
কেশবপুর (যশোর) সংবাদদাতা জানান, যশোরের কেশবপুর উপজেলায় গত মঙ্গলবার সাতজনের দেহে করোনায় আক্রান্তের রিপোর্ট পজিটিভ পাওয়া গেছে। এর মধ্যে পৌরসভার মধ্যে উপজেলা সদরে বসবাসকারী একজন, মধুসড়কের একজন, হাসপাতাল সড়কের এক দম্পতি, অফিস পাড়ার একজন, মধ্যকূল গ্রামের একজন ও ভেরচী পুলিশ ফাঁড়ির একজন আক্রান্ত হয়েছেন বলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে।
কাউখালী (পিরোজপুর) সংবাদদাতা জানান, কাউখালীতে নতুন করে আরও চারজন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। কাউখালী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: হাবিবুর রহমান জানান, গত রোববার কাউখালী থেকে ১৬টি নমুনা পরীক্ষার জন্য বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ল্যাবে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হলে সেখান থেকে মঙ্গলবার রাতে চারজনের করোনা পজিটিভ রিপোর্ট আসে। এ নিয়ে উপজেলায় মোট ৬১ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে। তাদের মধ্যে ২৬ জন সুস্থ হয়েছেন।

 


আরো সংবাদ



premium cement