২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫
`

কারা হেফাজতে আইনজীবীর মৃত্যুর ব্যাখ্যা চান হাইকোর্ট

-

পঞ্চগড় জেলা কারাগারে (কারা হেফাজতে) থাকাবস্থায় আইনজীবী পলাশকুমার রায় আগুনে মৃত্যুর ঘটনা ও কারাগারের অব্যবস্থাপনার বিষয়ে স্বরাষ্ট্র সচিব ও আইজি প্রিজনকে লিখিত ব্যাখ্যা দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। আগামী ১৫ অক্টোবরের মধ্যে ব্যাখ্যা দিতে বলেছেন আদালত। একই সাথে আগামী ১৫ অক্টোবর এ বিষয়ে শুনানির জন্য রাখা হয়েছে। গতকাল বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি মোহাম্মদ বদরুজ্জামান সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
অব্যবস্থাপনার বিষয়ে বিস্ময় প্রকাশ করে আদালত বলেছেন, তাৎক্ষণিক অগ্নিদগ্ধ আইনজীবীকে হাসপাতালে নেওয়া উচিত ছিল। তাকে বাঁচানোর চেষ্টা করা যেত। সেখানে ভর্তির জন্য দাফতরিক আনুষ্ঠানিকতায় চলে গেল ২৪ ঘণ্টা।
আইনজীবী পলাশকুমার রায়ের মৃত্যুর ঘটনায় বিচারিক তদন্ত প্রতিবেদনে অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনার চিত্র উঠে এসেছে। ঘটনার দিন সহজলভ্যতার দরুন গ্যাস লাইটার থেকে গায়ে আগুন দেন আইনজীবী পলাশ। তাকে বাঁচাতে গাফিলতি ছিল কারাগার সংশ্লিষ্টদের। হাসপাতালে ভর্তি করতে দাফতরিক আনুষ্ঠানিকতা শেষ করতেই লেগে যায় ২৪ ঘণ্টা। এসব অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনার বিষয়ে আগামী ১৫ অক্টোবরের মধ্যে ব্যাখ্যা দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
গত ৬ মে আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ সাইয়েদুল হক সুমন জনস্বার্থে একটি রিট দায়ের করেন। ওই রিটে শুনানি শেষে পঞ্চগড়ে কারা হেফাজতে আইনজীবী পলাশকুমার রায়ের অগ্নিদগ্ধ হয়ে মৃত্যুর ঘটনার বিচারিক তদন্তের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।
এর আগে কারাগারে আইনজীবী পলাশকুমার রায়কে পরিকল্পিতভাবে পুড়িয়ে হত্যার অভিযোগ করেন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন। তিনি ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি জানান।
উল্লেখ্য গত ২৫ মার্চ দুপুরে পঞ্চগড় জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে কোহিনুর কেমিক্যাল কোম্পানির দায়ের করা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে অনশন শুরু করেন আইনজীবী পলাশকুমার রায়।
রাস্তা বন্ধ করে হ্যান্ডমাইকে মানববন্ধন থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে কটূক্তি, প্রশাসন ও পুলিশ সম্পর্কে অশালীন বক্তব্য দেয়ার অভিযোগে স্থানীয়রা তাকে পুলিশে সোপর্দ করে। ওই দিন বিকেলে প্রধানমন্ত্রীকে কটূক্তি করার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে সদর থানায় মামলা দায়ের করা হয়। এরপর সেদিনই তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।
গত ২৬ এপ্রিল বিকেলে ঢাকা পাঠানোর কথা ছিল আইনজীবী পলাশকে। কিন্তু ওই দিন সকালে হঠাৎ হাসপাতালের বাইরে থাকা একটি টয়লেট থেকে অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় দৌড়ে বের হন তিনি। এ সময় কারারক্ষীরা তাকে উদ্ধার করে এবং শরীরের আগুন নেভায়। আগুনে তার শরীরের ৪৭ শতাংশ পুড়ে যায়। রংপুর মেডিক্যাল কলেজ (রমেক) হাসপাতাল থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য পরদিনই তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়। পরে গত ৩০ এপ্রিল দুপুরে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।


আরো সংবাদ



premium cement