২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`
গণপরিবহনে লাগামহীন ভাড়া বৃদ্ধি

শৃঙ্খলা ফেরানো জরুরি

-

গণপরিবহনের ভাড়া বৃদ্ধি নিয়ে সারা দেশে চরম নৈরাজ্য দেখা দিয়েছে। সরকারের সাথে পরিবহন নেতাদের সমঝোতার পরপরই গত রোববার ভাড়া আদায়ে চরম বিশৃঙ্খলা দেখা যায়। মূলত বাড়ানো হয়েছে ডিজেলের দাম। শতকরা হিসাবে তা ২৩ শতাংশ বেড়েছে। অন্য দিকে সরকারের সাথে চুক্তি অনুযায়ী পরিবহনের ভাড়া বাড়ানো হয়েছে ২৬ থেকে ৪০ শতাংশের মতো। জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার হারের চেয়ে ভাড়া বাড়ার হার অনেক বেশি। বাস্তব ক্ষেত্রে যাত্রীদের কাছ থেকে ভাড়া নেয়ার সময় তা আরো বেড়ে গেল। আবার বহু গণপরিবহন ডিজেলে চলে না। গ্যাসসহ অন্যান্য জ্বালানি দিয়ে চলা পরিবহনে ভাড়া বাড়ার কোনো কারণ নেই। রাস্তায় নেমে যাত্রীকে পকেট থেকে অনেক বেশি ভাড়াই দিতে হচ্ছে। সাধারণ মানুষ বাড়তি পণ্যমূল্যের চাপে আগে থেকেই দিশেহারা। তার ওপর যানবাহনের ভাড়ার মাত্রাতিরিক্ত বৃদ্ধি পরিস্থিতিকে অনেক কঠিন করে তুলছে।
পরিবহন সেক্টরে নিয়ন্ত্রণহীন নৈরাজ্য চলে সর্বদাই। এবার ভাড়া বৃদ্ধির পর দেখা গেল, কোথাও শৃঙ্খলা নেই। যদিও প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশি তারা নিতে পারে না। ঢাকার রাস্তায় বিভিন্ন ধরনের গণপরিবহন চলে। এগুলোর মধ্যে ‘সিটিং সার্ভিস’ বাস রয়েছে। বিভিন্ন জায়গায় চেকপোস্ট বসিয়ে তারা ভাড়া আদায় করে থাকে। ভাড়া বাড়ানোর ক্ষেত্রে দূরত্বকে তারা বিবেচনায় নেয় না। আগে যেখানে একটি চেকে ১০ টাকা ভাড়া ছিল, এবার তারা সেটি বাড়িয়ে ১৫ টাকা করেছে। এই ক্ষেত্রে ভাড়া প্রকৃতপক্ষে ৫০ শতাংশ বাড়ানো হলো। ঢাকার রাস্তায় যাত্রীরা এখন এসবের খুব একটা প্রতিবাদ করতে পারে না। সরকার যেমন তার সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেয় তেমন বিভিন্ন কর্তৃপক্ষও সাধারণ মানুষের ওপর প্রভাবশালী হয়ে উঠেছে। মেনে নেয়া ছাড়া জনসাধারণের যেন বিকল্প কোনো পথ নেই। রাজধানীতে মিনিবাসসহ গণপরিবহনের আরো নানা ধরন রয়েছে। এসব পরিবহনে ভাড়া বাড়ানোর নির্ধারিত নিয়ম মানা হয়নি বলে খবর পাওয়া গেছে। দূরপাল্লার বাস ও লঞ্চের ভাড়াও এবার লাগামহীন বাড়ানো হয়েছে। কেউ সরকারের সাথে করা চুক্তি মানেনি। যতটুকু খবর জানা যাচ্ছে, সরকার নির্ধারিত ২৮ শতাংশ থেকে বহু বেশি হারে বাসগুলো ভাড়া বাড়িয়েছে। বিভিন্ন রুটে দূরপাল্লার বাসের ভাড়া আগে থেকে বেশি ছিল। তার ওপরই ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ ভাড়া বাড়িয়ে দেয়া হলো।
লঞ্চের ক্ষেত্রে ভাড়া বৃদ্ধির হার একই ধরনের, চল্লিশ থেকে ৫০ শতাংশ। তারা নিজেদের ইচ্ছেমতো আগে থেকে ভাড়া নির্ধারিত করেছে। এবারো তারা ভাড়া বাড়ানোর ক্ষেত্রে লাগামহীন। প্রত্যেকটি পরিবহন নিজেদের ইচ্ছেমতো ভাড়া বাড়িয়েছে।
সড়ক পরিবহন আইন রয়েছে। সেই আইনে সুনির্দিষ্ট রয়েছে যে, মালিক, চালক, কন্ডাক্টর কেউ নির্ধারিত ভাড়ার অতিরিক্ত দাবি বা আদায় করতে পারবে না। আইন অমান্য করলে সর্বোচ্চ এক মাসের কারাদণ্ড বা ১০ হাজার টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করা হবে। আমরা প্রায় লক্ষ করি, ট্রাফিক পুলিশ গাড়ি চালকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে। অনেকসময়ই যাত্রী সাধারণের বোঝার উপায় নেই, কী জন্য চালককে মামলা দেয়া হলো বা জরিমানা করা হলো। তবে এটা কখনো জানা যায় না যে, অতিরিক্ত ভাড়া নেয়ার জন্য পরিবহন কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হলো। অর্থাৎ জনসাধারণের পক্ষে কেউ নেই।
গণপরিবহনে শুধু ভাড়া বৃদ্ধি নয়, আরো নানা অসঙ্গতি রয়েছে। সেগুলোকে একটি শৃঙ্খলায় আনার প্রয়োজন হলেও সেটি হয়নি। এই খাত নিয়ে কেবল রাজনীতি হয়। অনেকে ফায়দা লোটে। তবে এবারের অযৌক্তিক ভাড়া বাড়ার বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে দেখা উচিত। সরকারের পক্ষ থেকে একটি মনিটরিং সেল থাকা দরকার। বাড়তি তেলের দামের কারণে যতটুকু ভাড়া বেশি প্রাপ্য কেবল ততটুকুই বাড়তি হিসেবে আরোপিত হোক। সরকারের সাথে পরিবহন মালিকদের চুক্তিটি যথাযথভাবে যাতে পালন করা হয় সে জন্য সরকারকে আন্তরিকভাবে উদ্যোগী হতে হবে। আরো লাগামহীন ভাড়া বাড়লে তার প্রভাব অন্যসব পণ্যের ওপর বাড়তি হারে পড়বে। এতে কেবল বাড়তি দাম নয়, মূল্যস্ফীতিও ঘটতে পারে। তা জনজীবনকে আরো দুঃসহ করে তুলতে পারে।


আরো সংবাদ



premium cement
কলকাতার রাস্তায় চাকরি হারানো শিক্ষকরা শিল্পী-সাংবাদিক দ্বন্দ্ব নিয়ে এলো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত যশোর কারাগারে হাজতিদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, ব্যাপক আতঙ্ক চিকিৎসার জন্য ঢাকা ছাড়লেন বিএনপি নেতা আমীর খসরু কুষ্টিয়াতে মসজিদ কমিটি নিয়ে সংঘর্ষে আহত ৫ চেয়ারম্যান তপন ও অজিত মেম্বারকে ধরিয়ে দিতে পারলে পুরস্কার ঘোষণা নারায়ণগঞ্জে ২৪ ঘণ্টায় ১৪ ডাকাত সদস্য গ্রেফতার রাজশাহীতে মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রি ছাড়াল যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশী শ্রমিকদের ভিসা সহজ করার আহ্বান প্রবাসী প্রতিমন্ত্রীর চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিদ্বন্দ্বী না হয়ে অংশীদার হওয়া উচিত : শি জিনপিং ওকাব সভাপতি নজরুল ইসলাম, সম্পাদক জুলহাস আলম

সকল