লিখন পদ্ধতি আবিষ্কার হওয়ার আগ থেকেই মানুষ গল্প শুনতে ভালোবাসে। নানী-দাদির কাছে শুয়ে রাজকন্যা, রাক্ষস, দ্বৈত-দানবের গল্প শোনেনি এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া মুসকিল। সময় গড়িয়ে চলছে সেই সাথে পরিবর্তন হচ্ছে রুচি। বিজ্ঞানের এই যুগে শিশু-কিশোরদের রুচির যেমন পরিবর্তন হয়েছে তেমনি পাল্টে গেছে গল্পের ধারাও। রূপকথার গল্পের পরিবর্তে বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী বা সায়েন্স ফিকশন শোনা বা পড়ার প্রতি আগ্রহ জন্মেছে নতুন প্রজন্মের। রূপকথার সাথে বিজ্ঞান মিশ্রিত করে মৌলিক কিছু সৃষ্টির সন্ধানে মেতে উঠেছে লেখক সমাজ।
আশরাফ পিন্টু বর্তমান সময়ের সময় সচেতন লেখক। বিজ্ঞান ও যুক্তি নির্ভর শিশু-কিশোরদের জন্য তিনি রচনা করেছেনÑ জেলে ও জেলিয়েন বইটি। এই বইয়ের গল্পগুলো রূপকথার আদলে মৌলিক চিন্তা-চেতনা নিয়ে রচিত। কিছু গল্পের প্রথমাংশে মূল রূপকথার কাঠামো বা অংশবিশেষ থাকলেও পরিণতি ঘটেছে সায়েন্সফিকশনে; যা, লেখকের নিজস্ব এবং অভিনব চিন্তা-চেতনার প্রতিফলন।
জেলে ও জেলিয়েন বইটিতে ৬টি গল্প রয়েছে। প্রতিটি গল্পই ভিন্ন স্বাদের। প্রতিটি গল্পেই কোন না কোন ভাবে একজন এলিয়েনের আগমন ঘটেছে।
তবে উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো সব গল্পের এলিয়েনগুলো দেখতে এক রকম নয়। কখনো এলিয়েন দেখতে সাপের মতো তবে তার হাত-পা-ডানা আছে, কখনো এলিয়েন মাছের মতো, কখনো পঙ্খিরাজ ঘোড়ার মতো, কখনো পাখির মতো, কখনো রোবটের মতো আবার কখনো পরীর মতো।
গতানুগতিক ধারার বাইরে এসে লেখক এলিয়েনের দৃশ্য এঁকেছেন। প্রতিটি গল্পে আছে ‘হ্যাপি এন্ডিং’, যা শিশু-কিশোররা পছন্দ করে।
তবে গল্পের শেষ অংশগুলো তাড়াহুড়ো করে শেষ করা হয়েছে, হঠাৎ করে শেষ হওয়াতে মনে কিছুটা অপূর্ণতা থেকে যায়। লেখককে অনুরোধ করছি এই ব্যাপারে লক্ষ্য রাখতে।
মানব বনসাই শব্দটা একেবারে নতুন লেগেছে। পরী যখন এলিয়েন গল্পে এই শব্দটি লেখক ব্যবহার করেছেন যেখানে দুষ্ট লোকদের ধরে ধরে গবেষণাগারে মানব বনসাই করা হয়। গাছের মতো মানুষও বনসাই হবে এটা চিন্তা করেই খানিকটা ধাক্কা খেয়েছি, তবে শাস্তি হিসেবে এটা হবে অভিনব পদ্ধতি।
জেলে ও জেলিয়েন বইটি ভিন্ন ধরণের একটি বই। কিশোর মন কল্পনার ঘুড়ি উড়িয়ে বিভিন্ন ধরনের এলিয়েনের দেখা পাবে। কখনো এলিয়েন নিয়ে যাবে ভিন গ্রহে আবার কখনো এলিয়েন নেমে আসবে মাটির পৃথিবীতে। তবে যেহেতু রূপকথা থেকে সাইন্সফিকশন সেহেতু আরেকটু বিজ্ঞানভিত্তিক বর্ণনা হলে আরো ভালো লাগত।
পরিশেষে লেখকের সর্বাঙ্গিক কল্যাণ কামনা করছি যেন ভবিষ্যতে আরো ভালো ভালো বই পাঠকের হাতে তুলে দিতে পারেন। হ
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা