৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ শাওয়াল ১৪৪৫
`


সবাইকে মুসলিম বানানো দায়িত্ব নয়

-

আল্লাহর মূল লক্ষ্য, দুনিয়ার সবাইকে মুসলিম বানানো নয়। যদি তা-ই হতো, তা হলে তিনি কি আগে থেকেই আটটি জান্নাত আর সাতটি দোজখ সৃষ্টি করে রাখতেন? তা ছাড়া আল্লাহ এবং তার রাসূল সা: পবিত্র কুরআন-সুন্নাহর কোথাও বলেননি যে, দুনিয়ার সবাইকে ইসলামে দীক্ষিত করতেই হবে। তবে মুসলিম-অমুসলিম নির্বিশেষে সবার কাছে তাওহিদ বা আল্লাহর একত্ববাদের দাওয়াত দিতেই হবে, কেউ গ্রহণ করুক বা না করুক, এটিই আল্লাহর উদ্দেশ্য। এ জন্যই কাফির-মুশরিক ও নাস্তিক দূরে থাক, মুসলিম হয়েও যদি কেউ প্রকৃত তাওহিদপন্থী না হয় অর্থাৎ শিরকযুক্ত ঈমান নিয়ে মারা যায়, তা হলে আল্লাহ তাকে কখনোই ক্ষমা করবেন না। আল্লাহ বলেনÑ আল্লাহ তাঁর সাথে শরিক করার অপরাধ অবশ্যই ক্ষমা করবেন না, কিন্তু তিনি যাকে ইচ্ছা এর চেয়ে কম (অপরাধ) ক্ষমা করে দেন।’ (সূরা আন নিসা-৪৮)
যে ব্যক্তি আল্লাহর সাথে কাউকে শরিক করেছে; আল্লাহ তার ওপর জান্নাত হারাম করে দিয়েছেন। তার পরিণতি হবে জাহান্নাম। এসব জালিমের জন্য কোনো সাহায্যকারী নেই।’ (সূরা আল মায়িদাহ-৭২)
এ ব্যাপারে মহানবীর সা: সুস্পষ্ট বাণী হচ্ছেÑ হজরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা: থেকে বর্ণিতÑ রাসূলুল্লাহ সা: বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি শিরক করা অবস্থায় মারা যাবে, সে জাহান্নামে প্রবেশ করবে।’ (বুখারি ও মুসলিম)।
তাই যেসব মুসলিম স্বাভাবিক পন্থায় হোক কিংবা জোর করে হোক, দুনিয়ার সব বিধর্মীকেই মুসলিম বানাতে চায়, তারা ইসলাম সম্পর্কে যেমন অজ্ঞ, তেমনই আল্লাহর ইচ্ছার ব্যাপারে ভুল ব্যাখ্যাকারী। কারণ আল্লাহ সেটা চান না বলে কোনো নবী-রাসূল বা মুসলিমদের কখনো তেমনটি করতে বলেননি। আবার আল্লাহ ইসলামের ব্যাপারে কোনো জোরজবরদস্তিও যেমন চান না, তেমনই মুসলিম-অমুলিমদের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানটাও চান। তবে মানুষকে প্রতিনিধি হিসেবে সৃষ্টির পর দুনিয়ায় পাঠানোর ক্ষেত্রে আল্লাহর মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে, দুনিয়ায় একমাত্র দ্বীন ইসলামকেই থাকতে হবে সব ধর্ম ও আদর্শের ওপর বিজয়ী এবং মুসলিমরাই হবে আল্লাহর প্রতিনিধিত্বকারী শাসক। তাই আল্লাহ পবিত্র কুরআনে ঘোষণা করেছেনÑ
সেই ব্যক্তির চেয়ে বড় জালেম আর কে হবে, যে আল্লাহর বিরুদ্ধে মিথ্যা বানিয়ে বলে। অথচ তাকে শুধু ইসলামের (আল্লাহর আনুগত্য করার) দিকে আহ্বান করা হচ্ছে। আল্লাহ এমন জালেমদের হিদায়াত দেন না। এরা তাদের মুখের ফুঁ দিয়ে আল্লাহর নূরকে নিভিয়ে দিতে চায়। অথচ আল্লাহর ফায়সালা হলো তিনি তার নূরকে পূর্ণরূপে বিকশিত করবেন। কাফেররা তা যতই অপছন্দ করুক না কেন। তিনিই সেই মহান সত্তা যিনি তাঁর রাসূলকে হিদায়াত এবং ‘দ্বীনে হক’ দিয়ে পাঠিয়েছেন যাতে তিনি এ দ্বীনকে অন্য সব দ্বীনের (ধর্ম-আদর্শের) ওপর বিজয়ী করেন, তা মুশরিকদের কাছে যতই অসহনীয় হোক না কেন।’ (সূরা আস-সফ : ৭-৯)
‘তোমরা মনমরা হয়ো না, দুঃখ করো না, তোমরাই বিজয়ী হবে, যদি তোমরা মুমিন হয়ে থাকো।’ (সূরা আলে-ইমরান-১৩৯)
দ্বীনের ব্যাপারে কোনো জোর-জবরদস্তি নেই। ভ্রান্তমত ও পথ থেকে সঠিক মত ও পথকে ছাঁটাই করে আলাদা করে দেয়া হয়েছে। এখন যে কেউ তাগুতকে (ইসলামবিরুদ্ধ শক্তি) অস্বীকার করে আল্লাহর ওপর ঈমান আনে, সে এমন একটি মজবুত অবলম্বন আঁকড়ে ধরে, যা কখনো ছিন্ন হয় না। আর আল্লøাহ (যাকে সে অবলম্বন হিসেবে আঁকড়ে ধরেছে) সব কিছু শোনেন ও জানেন।’
আহলি কিতাব বা মুশরিকদের মধ্য থেকে যারা সত্যের দাওয়াত গ্রহণে অস্বীকৃতি জানিয়েছে তারা কখনোই তোমাদের রবের পক্ষ থেকে তোমাদের ওপর কোনো কল্যাণ নাজিল হওয়া পছন্দ করে না। কিন্তু আল্লাহ যাকে চান নিজের রহমত দানের জন্য বাছাই করে নেন এবং তিনি বড়ই অনুগ্রহশীল।’ (সূরা আল-বাকারাহ-১০৫)
জমিন ও আসমানের বাদশাহ আল্লাহ। আর যে দিন কিয়ামতের সময় এসে উপস্থিত হবে, সে দিন বাতিলপন্থীরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। সে সময় তোমরা প্রত্যেক গোষ্ঠীকে নতজানু দেখতে পাবে।
প্রত্যেক গোষ্ঠীকে এসে তার আমলনামা দেখার জন্য আহ্বান জানানো হবে। তাদের বলা হবে, তোমরা যেসব কাজ করে এসেছ, তোমাদের তার প্রতিদান দেয়া হবে। এটি তোমাদের করা আমলনামা, যা তোমাদের বিরুদ্ধে ঠিক ঠিক সাক্ষ্য দিচ্ছে। তোমরা যা-ই করতে, আমি তাই লিপিবদ্ধ করাতাম। যারা ঈমান এনেছিল এবং সৎকাজ করেছিল, তাদের রব তাদের তাঁর রহমতের মধ্যে প্রবেশ করাবেন। এটা সুস্পষ্ট সাফল্য। আর যারা কুফরি করেছিল, তাদের বলা হবে আমার আয়াতগুলো কি তোমাদের শুনানো হতো না? কিন্তু তোমরা অহঙ্কার করেছিলে এবং অপরাধী হয়ে গিয়েছিলে।’ (আল-জাসিয়া-২৭)
অতএব পবিত্র কুরআন ও সুন্নাহর প্রকৃত শিক্ষা বা মর্মকথা বোঝার ক্ষেত্রে যারা অপব্যাখ্যা ও বিভ্রান্তির মধ্যেই পড়ে রয়েছে, তারাই মূলত জঙ্গিবাদ এবং জোরজবরদস্তিমূলক ইসলাম কায়েমের সমর্থক, যা আল্লাহর সন্তুষ্টি পথ নয়। অথচ আল্লাহর সন্তুষ্টির নিয়ত ব্যতীত অর্থাৎ আল্লাহ-রাসূলের প্রদর্শিত নিয়মপদ্ধতি অনুসরণ না করলে, তা আল্লাহর কাছে কখনোই গ্রহণযোগ্য হবে না। এ জন্যই রাসূলের সুস্পষ্ট বাণী হচ্ছেÑ
আলকামাহ ইবনে ওয়াক্কাস আল-লায়সি বর্ণনা করেন, আমি ওমর ইবনুল খাত্তাবকে রা: মিম্বারের ওপর দাঁড়িয়ে বলতে শুনেছি, তিনি বলেনÑ আমি আল্লাহর রাসূলকে সা: বলতে শুনেছিÑ ‘নিশ্চয়ই সব কাজ নিয়তের ওপর নির্ভরশীল। আর নিশ্চয়ই প্রত্যেক ব্যক্তি নিয়ত অনুযায়ী প্রতিফল পাবে। তাই যার হিজরত হবে ইহকাল লাভের অথবা কোনো মহিলাকে বিয়ে করার উদ্দেশে; তার হিজরত সে উদ্দেশেই হবে, যে জন্য সে হিজরত করেছে।’ (বুখারি, মুসলিম, আবু দাউদ, নাসায়ি)

 


আরো সংবাদ



premium cement
৪৩ ডিগ্রিও ছাড়িয়ে গেল পাবনার তাপমাত্রা আবুল কাশেম ও শাহনাজ পারভীনের ইন্তেকালে ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ জামায়াতের শোক বান্দরবানে উপজেলা নির্বাচনের আগ মুহূর্তে সরে দাঁড়ালেন আ’লীগের প্রার্থী যশোরে ইজিবাইকচালকের বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার পদত্যাগ করুন দেশের মানুষকে বাঁচান : সরকার‌কে ফারুক ‘জয়বাংলা ব্লাড স্কিম’ রাবি ছাত্রলীগের সিট দখলের নতুন কৌশল ইসরাইলি পণ্য বয়কট : মালয়েশিয়ায় কেএফসির শতাধিক আউটলেট বন্ধ গাজায় বিধ্বস্ত ভবনগুলোর নিচে চাপা পড়েছে ১০ হাজারের বেশি লাশ সব রেকর্ড ভেঙে চুয়াডাঙ্গার তাপমাত্রা ৪৩.৭ ডিগ্রি বিরাজমান তাপপ্রবাহ আগামীকাল কিছু জায়গায় প্রশমিত হতে পারে পহেলা মে নয়াপল্টনে শ্রমিক সমাবেশ করবে বিএনপি

সকল