সংসারের অশান্তি দুর করতে ও পারিবারিক কলহের জের ধরে নিজের স্ত্রীকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যার পর নিজেও আত্নহত্যার চেষ্টা করেছে এক পুলিশের এএসআই মামুন(৪৫) বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। পুলিশের স্ত্রী শিল্পী আক্তার(৩২) মারা গেলেও স্থানীয় লোকজন গুরুতর অবস্থায় পুলিশের এই এএসআই মামুনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেছে। ঘটনার পর এলাকায় আতংক ছড়িয়ে পরেছে। সোমবার বিকেলে টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলা সদরের বাওয়ার কুমারজানি পুর্বপাড়া গ্রামে অমানবিক ও চাঞ্চল্যকর এ ঘটনাটি ঘটেছে। পুলিশ ঘাতক মামুনের পিতা আবুল কাশেম(৫৫) ও তার মাতা অযুফা বেগম(৫০) আটক করেছে বলে জানা গেছে।
জানা গেছে, মির্জাপুর উপজেলার লতিফপুর ইউনিয়নের যুগিরকোপা গ্রামের শামসুদ্দিন সিকদারের মেয়ে শিল্পী আক্তার(৩২) এর সঙ্গে একই উপজেলার বাওয়ার কুমারজানি পুর্বপাড়া গ্রামের কাশের মিয়ার ছেলে মামুন মিয়ার সঙ্গে শিল্পীর বিয়ে হয়। শিল্পীর ভাই খায়রুল, দুলাল, সুরুজ, মুস্তফা ও শহিদ অভিযোগ করেন, শিল্পীকে বিয়ের পুর্বেও এএসআই মামুন আরও দুইটি বিয়ে করেছিল। প্রথম স্ত্রীকে মামুন লাথি মেরে হত্যা করে পরে আরও একটি বিয়ে করে। দুইটি বিয়ের তথ্য গোপন করে পুনরায় শিল্পীকে বিয়ে করে। বিয়ের পর থেকেই মামুন তার স্ত্রী শিল্পীকে নানাভাবে অত্যাচার নির্যাতন করে আসছিল বলে শিল্পীর পরিবার এবং স্থানীয় লোকজন অভিযোগ করেছে। শিল্পীর পরিবার অত্যন্ত দরিদ্র হওয়ায় মামুনের অত্যাচার নির্যাতনের প্রতিবাদ করার সাহস পেত না। মামুন প্রথমে পুলিশের কনস্টবল থাকলেও পরে পদন্মতি পেয়ে এএসআই(উপ সহকারী পুলিশ কর্মকর্তা) হয়েছে। সে বর্তমানে গাজীপুর জেলায় শিল্পাঞ্চল(ইন্ডাসট্রিয়াল) পুলিশে কর্মরত।
শিল্পীর পরিবার জানায়, কয়েক দিন পুর্বে মামুন ছুটি নিয়ে বাড়ি আসে। বাড়িতে এসেই নানা অযুহাতে স্ত্রী শিল্পীর উপর অত্যাচারের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। সোমবার স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়ার এক পর্যায়ে মামুন ধারালো অস্ত্র দিয়ে স্ত্রী শিল্পীকে এলোপাথারি মাথায় ও শরীরের বিভিন্ন অংশে কুপিয়ে হত্যার পর নিজেও শরীরে কুপিয়ে আত্নহত্যার চেষ্টা করে। আশপাশের লোকজন ঘটনা জানতে পেরে প্রথমে শিল্পীকে গুরুতর অবস্থায় উদ্ধার করে মির্জাপুর কুমুদিনী হাসপাতালে ভর্তি করলে হাসপাতালের চিকিৎসকগন তাকে মৃত ঘোষণা করে।
অপর দিকে ঘাতক মামুনও এখন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বলে পুলিশ ও হাসপাতাল সুত্র জানিয়েছে। ঘটনার পর পুলিশ মামুনের পিতা আবুল কাশেম ও মাতা অযুফা বেগমকে আটক করেছে। শিল্পীর অসহায় পরিবার এবং স্থানীয় লোকজন ঘাতক এএসআই মামুনকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী জানিয়েছে।
এ ব্যাপারে মির্জাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এ কে এম মিজানুল হক মিজানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, পারিবারিক কলহের জের ধরেই সম্ভবত এ হত্যার ঘটনা ঘটেছে। তদন্ত ছাড়া এই মুহুর্তে সঠিক কিছু বলা যাচ্ছে না। গৃহবধু শিল্পীর লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য পাঠানো হচ্ছে। মামুনও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। মামলার পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।