৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ শাওয়াল ১৪৪৫
`


শাহজাদপুরে এটিএম বুথের গার্ডকে হত্যা, পল্লবীতে যুবকের লাশ

-


রাজধানীর শাহজাদপুরে এটিএম বুথে ডাকাতি করতে গিয়ে সিকিউরিটি গার্ডকে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। পল্লবীতে পূর্ব শুত্রুতার জেরে বাসের হেলপারকে ডেকে এনে কুপিয়ে হত্যার পর লাশ পুকুরের পানিতে ফেলে দেয়া হয়েছে। অপর দিকে রাজধানীর হাতিরঝিল থেকে ভাসমান অবস্থায় এক যুবকের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এলিফ্যান্ট রোডে মদপানে এক তরুণের মৃত্যু হয়েছে।
পুলিশ, হাসপাতাল ও পারিবারিক সূত্র জানায়, গত ১০ এপ্রিল গুলশান থানাধীন শাহজাদপুরে একটি ভবনের নিচে মধুমতি ব্যাংকের এটিএম বুথে ডাকাতি করতে যায় কয়েকজন ডাকাত। তারা প্রথমে ভেতরে প্রবেশ করলে সিকিউরিটি গার্ড মাহমুদ হাসান ধারণা করেছিলেন ব্যাংকের গ্রাহক টাকা তুলতে গেছেন। কিন্তু একসাথে কয়েকজন ভেতরে যাওয়ায় গার্ডও ভেতরে প্রবেশ করেন। এ সময় তিনি দেখেন দুর্বৃত্তরা মেশিনের নিচে টাকা থাকার বক্স ভাঙ্গার চেষ্টা করছে। পরে সিকিরিউটি গার্ড মাহমুদ হাসান তাদের বাধা দেয়ার চেষ্টা করলে দুর্বৃত্তরা তাকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যা করে। তবে মাহমুদের চিৎকার ও ধস্তাধস্তিতে আশপাশের লোকজন টের পাওয়ায় ডাকাতরা টাকা না নিয়ে পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে পুলিশ মাহমুদ হাসান লাশ উদ্ধার করে।

গুলশান থানার ওসি মো: মাজহারুল ইসলাম জানান, এটিএম বুথে ভাঙচুর চালিয়ে বুথ থেকে টাকা হাতিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে দুর্বৃত্তরা। কিন্তু তারা এটিএম বুথ থেকে টাকা নিতে পারেনি। বাধা দিলে দুর্বৃত্তরা গার্ডকে কুপিয়ে হত্যা করে। বুধবার ভোর ৫টা থেকে ৫টা ২০ মিনিটের মধ্যে এ হত্যার ঘটনা ঘটায়। সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে আসামি গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে বলেও জানান তিনি। নিহত মাহমুদ হাসান সায়েদাবাদের আজমপুরে কাঁচাবাজার সংলগ্ন সিএনজি পাম্পের পাশে পরিবার নিয়ে একটি ভাড়া বাসায় বসবাস করতেন। তার গ্রামের বাড়ি ঝিনাইদহের শৈলকুপা থানার পার্বতীপুরে।
এদিকে বাড্ডা এলাকা থেকে মোবাইলে পল্লবী এলাকায় ডেকে এনে পাভেল খান (২৮) নামে এক যুবককে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। পরে তার লাশ পুকুরের পানিতে ভাসিয়ে দেয়া হয়। গত রোববার রাতে পল্লবী থানাধীন স্বপ্ননগর আবাসিক এলাকার পেছনে পুকুর পাড়ে এই ঘটনা ঘটে।
পুলিশ জানায়, পাভেল একটি বাসের হেলপার ছিল। থাকতেন বাড্ডা এলাকার একটি বাসায়। বাড্ডা থানায় তার বিরুদ্ধে কয়েকটি মামলা রয়েছে। রোববার বিকেলে কে বা কারা তাকে মোবাইলে পল্লবী এলাকায় ডেকে নিয়ে আসে। এরপর রাতে ওই পুকুরপাড়ের কাছে নিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যার পর লাশ পুকুরের পানিতে ফেলে দেয়। রাতেই আশপাশের লোকজন পুকুরে লাশ ভাসতে দেখে থানায় খবর দেয়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাশ উদ্ধার করে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়।
পুলিশের ধারণা পূর্ব শুত্রুতার জেরে পাভেলকে তার পরিচিতজনরাই ডেকে এনে হত্যা করে থাকতে পারে। তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে অসংখ্য আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। পল্লবী থানার এসআই আতিকুর রহমান জানান, প্রাথমিকভাবে ঘটনার সাথে জড়িতদের শনাক্ত করা হয়েছে। আশা করা হচ্ছে খুব শিগগিরই তাদের গ্রেফতার করে হত্যার কারণ জানা যাবে। নিততের গ্রামের বাড়ি নেত্রকোনা জেলার আলুকদিয়া। তার বাবার নাম শায়েস্তা খান।
হাতিরঝিলে যুবকের ভাসমান লাশ উদ্ধার

এলিফ্যান্ট রোডে মদপানে শিক্ষার্থীর মৃত্যু
এদিকে রাজধানীর হাতিরঝিল থেকে ভাসমান অবস্থায় ফয়েজ কাদের চৌধুরী (২৩) নামে এক যুবকের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রামপুরা ব্রিজ এলাকার লেক থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। ফয়েজ ৬২১/১ উত্তর শাহজাহানপুর এলাকার ফজলুল কাদের চৌধুরীর ছেলে।
হাতিরঝিল থানার ওসি শাহ মো: আওলাদ হোসেন বলেন, ফয়েজ কাদের চৌধুরী মানসিক ভারসাম্যহীন ছিলেন। রোববার রাতে তার পরিবারের সাথে রাগ করে উত্তর শাহজাহানপুরের বাসা থেকে বের হয়ে যান। সোমবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে হাতিরঝিলে ভাসমান অবস্থায় তার লাশ দেখতে পেয়ে পথচারীরা পুলিশে খবর দেয়। পরে সাড়ে ১১টার দিকে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, তিনি আত্মহত্যা করেছেন। এদিকে এলিফ্যান্ট রোডের একটি বাসায় মো: মাহি রাশীদ দীপ্ত (১৭) নামে এক শিক্ষার্থীর মদ্যপানে মৃত্যু হয়েছে। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের রেজিস্টার খাতায় লেখা হয়েছে, মদ্যপানে দীপ্ত মারা গেছে। শনিবার সকাল ৮টার দিকে নিউমার্কেট থানার এলিফ্যান্ট রোডের একটি বাসায় এই ঘটনা ঘটে। পরে অসুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করে দীপ্তকে ঢামেক হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
দীপ্তর বাবা মোহাম্মদ মামুন বলেন, তার ছেলে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে বমি শুরু হয়। আগে শ্বাসকষ্ট থাকায় তাকে ইনহেলার দিলেও কাজ হয়নি। পরে তাকে ঢামেক হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক জানান তার ছেলে আর বেঁচে নেই। তবে সে মদপান করেছে কি না সে বিষয়ে কিছু বলতে পারেননি। দীপ্তর বাবা আরো জানান, তার একমাত্র ছেলে ও-লেভেলের ছাত্র ছিল। তাদের বাড়ি নোয়াখালী জেলার বেগমগঞ্জ উপজেলা এলাকায়। ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক মো: বাচ্চু মিয়া বলেন, আমরা জানতে পেরেছি, সে মদ্যপানে মারা গেছে এবং হাসপাতালের রেজিস্টার খাতায় সেটাই লেখা আছে।

 


আরো সংবাদ



premium cement