০৯ মে ২০২৪, ২৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`


সড়ক পরিবহন আইন শিথিল করায় দুর্ঘটনা বেড়েছে : ইলিয়াস কাঞ্চন

-

পরিবহন চালক বিশেষ করে ট্রাক, কাভার্ডভ্যান ও পিকআপ চালকদের বেপরোয়া মনোভাব সাম্প্রতিক সময়ে সড়ক দুর্ঘটনা বৃদ্ধির অন্যতম কারণ বলে উল্লেখ করেছেন নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা) এর চেয়ারম্যান ইলিয়াস কাঞ্চন। তিনি মনে করেন, পরিবহন চালকদের অন্যায্য দাবির মুখে নতুন সড়ক পরিবহন আইন শিথিল করায় চালকদের মধ্যে বেপরোয়া মনোভাব তৈরি হয়েছে। একই সাথে লাইসেন্স ও গাড়ির ফিটনেসের ব্যাপারে তাদের ছাড় দেয়ায় আগে সড়কে যত মামলা হতো, যত টাকা জরিমানা হয়েছে, নতুন আইন প্রয়োগ করার পরে মামলা ও জরিমানা কমে গেছে। এর ফলে সড়কে শৃঙ্খলা ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। এসব কারণে সড়ক দুর্ঘটনাও বেড়ে গেছে। গতকাল শনিবার নিসচার প্রচার সম্পাদক এ কে এম ওবায়দুর রহমানের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
গণমাধ্যমে পাঠানো ওই বিজ্ঞপ্তিতে ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, গত জানুয়ারি থেকে দুর্ঘটনাগুলো বিশ্লেষণ করে জানা গেছে, যেসব গাড়ি সড়কে দুর্ঘটনা ঘটাচ্ছে সেগুলোর মধ্যে ট্রাক, কাভার্ভভ্যান, পিকআপ ও ভাড়ায়চালিত মাইক্রোবাস বেশি। ইদানীং মোটরসাইকেল দুর্ঘটনাও আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েছে। সড়ককে দুর্ঘটনামুক্ত করতে জনপ্রতিনিধিদের বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ এবং এ ক্ষেত্রে রাজনৈতিক অঙ্গীকারের প্রতি জোর দিয়ে কিছু সুপারিশও তুলে ধরেন তিনি।
ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, ‘আমি মনে করি, সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ে যারা কাজ করে যেমন বিআরটিএ ও ট্রাফিক পুলিশ তাদের মধ্যেও অজ্ঞতা আছে। তাদের দক্ষতা, জানা ও আন্তরিকতার ঘাটতি আছে। তাদের মধ্যে দুর্নীতি আছে। পরিবহন সেক্টরে নেতৃত্ব দেয়া চালক ও মালিকরা নিজেদের স্বার্থ ছাড়া জনগণ ও দেশের মানুষের কথা ভাবে না। তাদের এ জায়গা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। তা না হলে দেশে সড়ক দুর্ঘটনা কখনো কমানো সম্ভব হবে না।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের উন্নয়নের জন্য যারা দেশকে নের্তৃত্ব দিচ্ছেন সড়ককে দুর্ঘটনামুক্ত করতে তাদের রাজনৈতিক অঙ্গীকার অবশ্যই থাকতে হবে। এ বিষয়ে অঙ্গীকার আমরা বহু শুনেছি, শুনতে শুনতে ক্লান্ত হয়ে গেছি। এবার সত্যিকারের অঙ্গীকার দেখতে চাই। এবার সত্যিকারের দরদি হতে হবে, শুধু মুখে দরদ দেখালে চলবে না। কার্যক্ষেত্রে প্রমাণ দিতে হবে। এভাবে সবাই মিলে যদি কাজ করি তাহলে দেশে সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হবে এবং নতুন সড়ক পরিবহন আইন কার্যকর হবে। এ ছাড়া সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণ করা কোনোভাবেই সম্ভব নয়।’
তিনি বলেন, মোটরসাইকেল, সাইকেল থেকে শুরু করে যত ধরনের যানবাহন সড়কে চলে সব চালককে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে প্রশিক্ষণের আওতায় আনতে হবে। এ সেক্টরে সরকারকে বরাদ্দ দিতে হবে। সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণে যে সংস্থাগুলো কাজ করে যেমন বিআরটিএ, ট্রাফিক পুলিশ তাদের দক্ষতা বৃদ্ধি করতে হবে।
ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, ‘সড়ক দুর্ঘটনা কমাতে জনসচেতনতা বাড়ানোর জন্য প্রত্যেক এলাকার ইউপি সদস্য, চেয়ারম্যান, পৌর মেয়র, উপজেলা চেয়ারম্যান ও সংসদ সদস্যদের উদ্যোগ নেয়া দরকার। রাষ্ট্রের জন্য, অর্থনীতির জন্য এটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
তিনি বলেন, এ বছর জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবসের সেøাগান ছিল ‘জীবনের আগে জীবিকা নয়, সড়ক দুর্ঘটনা আর নয়’ এই সেøাগানটা আসলে কাগজে-কলমে, বাস্তবে এর কার্যক্রম নেই। রাজনৈতিক ছত্রচ্ছায়ায় হাজার হাজার লাখ লাখ অবৈধ গাড়ি রাস্তায় চলছে এবং প্রতিদিন দুর্ঘটনা ঘটাচ্ছে। তিনি বলেন, সাধারণ মানুষ বিশেষ করে পথচারীদের রাস্তায় চলাচলের নিয়ম শেখার, জানার ও মানার বিষয় আছে। নতুন আইনে পথচারীদের চলাচলের নিয়ম বলা আছে, সেটা কঠোরভাবে প্রয়োগ করতে হবে। শুধু মুখে বলে পথচারীদের সাবধান করা সম্ভব নয়। বিজ্ঞপ্তি।

 


আরো সংবাদ



premium cement