২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`

রামগড়ে ফারুক হত্যামামলার মূল আসামি আটক

রামগড়ে ফারুক হত্যামামলার মূল আসামি মৃদুল কান্তি ত্রিপুরা ওরফে আকাশ -

খাগড়াছড়ির রামগড়ে হত্যার ২০ দিন পর বহুল আলোচিত ফারুক হত্যা মামলার মূল আসামিকে আটক করেছে রামগড় থানা পুলিশ। গত ১১ জুলাই রামগড় পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ড কালাডেবা এলাকায় চাঞ্চল্যকর এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। হত্যা মামলার আসামী উপেন্দ্র ত্রিপুরার ছেলে মৃদুল কান্তি ত্রিপুরা (১৮) ওরপে আকাশকে কালাডেবা বাজার থেকে আটক করেছে রামগড় থানা পুলিশ।

আসামী আটকের পর রামগড় থানা পুলিশ এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানান, রামগড় ১১ জুলাই রাত সাড়ে ১০টার দিকে স্থানীয় কালাডেবা বাজার থেকে ভিকটিম ফারুক বৃষ্টির কারণে মাথায় ছাতা দিয়ে পায়ে হেঁটে একা একা নিজ বাড়িতে যাওয়ার সময় বর্ণিত আসামি সাথে রাস্তায় দেখা হয়।

উল্লেখ্য যে হত্যার ঘটনার কয়েকদিন আগে আসামি মৃদুল কান্তি ত্রিপুরা কালাডেবা কাউন্সিলর সড়কের রাস্তার ব্রিজের উপর সন্ধ্যায় বসে দুই পা মেলিয়া মোবাইল ফোনে কথা বলছিল এই সময় ওমর ফারুক এর পায়ের সাথে তার পায়ের ধাক্কা লাগে। এ সময় আমামি মৃদুল সরি কাকা বললেও ফারুক উত্তেজিত হয়ে আসামি মৃদুলের গালে সজোরে থাপ্পড় মারে বেয়াক্কেল বলে গালমন্দ করে। বর্ণিত কারণে আসামি মৃদুল মানসিকভাবে ক্রোধান্বিত হয়ে পরে সে সুযোগ খুঁজতে থাকে ফারুককে উচিত শিক্ষা দেয়ার জন্যে।

এরই ধারাবাহিকতায় ঘটনার দিন ওমর ফারুক কালাডেবা বাজার থেকে রাত সাড়ে ১০টায় বাড়ি যাওয়ার উদ্দেশে রওনা হলে ওই সময় আসামি মৃদূল বাজার হতে অনুসরণ করে ভিকটিমের আগে সে কাউন্সিলের সড়কের ব্রিজের উপর অবস্থান নেয়। এবং একটি কাঠের চেলি সংগ্রহ করে আগেই সেখানে অপেক্ষা করতে থাকে। অনুমানিক ৫ মিনিট পরে ফারুক গুটি গুটি বৃষ্টির মধ্যে মাথায় ছাতা দিয়ে হেড ফোনে মোবাইলে কথা বলা অবস্থায় বর্ণিত ব্রিজ পার হলে আসামি মৃদুল ফারুকের পিছু নেয় কিছুক্ষণের মধ্যে ভিকটিম ফারুক আলোচ‍্য মামলার ঘটনাস্থল বর্ণিত সড়কের আইয়ুব আলি ভুঁইয়ার পারিবারিক কবস্থানের কাছে পৌঁছলে সজোরে আঘাত করে গুরুতর রক্তাক্ত জখম করে ফারুককে অসচেতন করে তার হাতের শাওমি মোবাইল সেট নিয়ে পালিয়ে যায়। বর্ণিত আঘাতে ফারুকের মাথায় মারাত্মক জখম হয়ে অজ্ঞান অবস্থায় পড়ে থাকে। পরবর্তীতে অতিরিক্ত রক্ত ক্ষরণে হাসপাতালে নেয়ার পথে সে মৃত্যুবরণ করে।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘ ২০দিন পর অক্লান্ত পরিশ্রমে নিরবিচ্ছিন্ন তদন্তে প্রাপ্ত সাক্ষ্য প্রমাণে এবং পুলিশ সুপারগণের সঠিক দিকনির্দেশনায় ১ জুলাই বর্ণিত আসামিকে কালাডেবা থেকে গ্রেফতার করা হয়। আসামির কাছে ভিকটিম ফারুকের ব্যবহারকৃত মোবাইল ফোনটি উদ্ধার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে বর্ণিত আসামি অত্র মামলার ঘটনার সত‍্যতা স্বীকার করে পুলিশের কাছে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রধান করেছে।

এদিকে ফারুক হত্যার আসামি আটক হওয়ার খবর শুনে আসামির সর্বচ্চো শাস্তির দাবিতে এলাকায় উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। নিহত ফারুকের চাচাতো ভাই রিয়াদ জানান, সকালে ঘটনার আরো অধিকতর সুষ্ঠু তদন্তের দাবিতে মানববন্ধন করার কথা থাকলেও পুলিশের আশ্বাসে মানববন্ধন থেকে সরে আসে এলাকাবাসী।

রামগড় থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ শামছুজ্জামান বলেন, তার নেতৃত্বে গত ২০ দিনের পুলিশের অক্লান্ত পরিশ্রমে খাগড়াছড়ি পুলিশ সুপার আবদুল আজিজ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রামগড় সার্কেল সৈয়দ মোহাম্মদ ফরহাদ এর তত্ত্বাবধানে পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মনির হোসেন এর সহায়তা এসআই অজয় চক্রবর্তী আধুনিক তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার করে রামগড় কালাডেবা বাজার থেকে আসামি মৃদুল কান্তি ত্রিপুরাকে আটক করতে সক্ষম হয়। তিনি আরও জানান আসামির বিরুদ্ধে রামগড় থানায় গত ১১ জু্লাই ৩০২/৩৪ প্যানেল কোডে মামলা হয়েছে। মামলাটি তদন্তধীন রয়েছে। তিনি আরো জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামি মৃদুল কান্তি ত্রিপুরা আকাশ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বিজ্ঞ আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।

সাংবাদিকদের সাথে কথার প্রসঙ্গে রামগড় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ শামসুজ্জামান আরো জানান, পবিত্র ঈদের দিনে সম্পূর্ণ ক্লু হীন চাঞ্চল্যকর হত্যার আসামি আটকের খবর ঈদের আনন্দকে আরো বহুগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে।


আরো সংবাদ



premium cement