২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`

ভারত থেকে আসা পানির তোঁড়ে ১৫ গ্রাম প্লাবিত

ভারত থেকে আসা পানির তোঁড়ে ১৫ গ্রাম প্লাবিত - ছবি : নয়া দিগন্ত

দেশে তিন দিনের ভারী বর্ষণ ও সীমান্তের ওপার থেকে ধেয়েঁ আসা পাহাড়ি ঢলের পানির তোড়ে ফেনীর মুহুরী নদীর নয়স্থানে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে বেঙে গেছে। এতে করে সীমান্তবর্তী ফেনীর পরশুরাম ও ফুলগাজীর ১৫টি গ্রাম বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে।

ফাটল দেখা দেওয়ায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের আরও বেশ কয়েকটি স্থানে ভাঙন দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। অপরদিকে, ভারতের উজানে অব্যাহত ভারী বর্ষণের কারণে মুহুরী নদীর দু’পাড় ভাসিয়ে সোমবার ভোর থেকে ছাগলনাইয়া উপজেলার ফসলি মাঠসহ নিন্মাঞ্চলে হু হু করে ঢুকছে বানের পানি। এতে তলিয়ে যাচ্ছে বিস্তৃণ এলাকা।

করোনাভাইরাস সংক্রমণের উদ্বেগ-উৎকন্ঠার মধ্যে মুহুরী নদীর বাঁধ ভেঙে লোকালয়ে পানি ঢোকার কারণে তীরবর্তী মানুষদের মাঝে উদ্বেগ উৎকণ্ঠা বেড়ে চলেছে। ফসলি জমি, রাস্তা-ঘাট, অসংখ্য পুকুরের মাছ ভাসিয়ে নেয়ার ঘটনায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন মুহুরী, কহুয়ার তীরবর্তী ছাগলনাইয়া, পরশুরাম ও ফুলগাজী উপজেলার কয়েক লাখ মানুষ।

সোমবার দুপুর ১২টার দিকে মুহুরী নদীর পানি বিপদ সীমার ৬০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার কথা জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী জহির উদ্দিন। তিনি জানান, এ পর্যন্ত বাঁধ ভেঙে ১৫টি গ্রাম ঢলের পানিতে প্লাবিত হয়েছে।

জানা গেছে, রোববার সন্ধ্যার দিকে মুহুরী নদীর তীরবর্তী ফুলগাজী সদর অংশের উত্তর দৌলতপুর ও কিসমত ঘনিয়া মোড়া গ্রামে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের কয়েকটি স্থানে ভাঙন দেখা দেয়। এতে ইউনিয়নের ঘনিয়া মোড়া, কিসমত ঘনিয়া মোড়া, পুর্ব ঘনিয়া মোড়া, উত্তর দৌলতপুর, বৈরাগপুর, সাহাপাড়া, উত্তর বরইয়াসহ অন্তত সাতটি গ্রাম পানিতে তলিয়ে গেছে। 

এছাড়া ফুলগাজী বাজারের পশ্চিম অংশে শ্রীপুর এলাকায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাধের ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়ে ফুলগাজী উপজেলা সদরের মূল সড়কও তলিয়ে গেছে। এতে কয়েকশ’ পরিবার পানি বন্দি হয়ে পড়েছে।

পরশুরাম উপজেলার দুর্গাপুর, দক্ষিণ শালধর, কহুয়া, ভোড়াবাড়িয়ায় বাঁধে ভাঙন দেখা দিয়েছে। এতে দুর্গাপুর, রতনপুর, দক্ষিণ শালধর, মালিপুর, পাগলীরকুল, ধনীকুণ্ডা, মধ্যম ধরিকুণ্ডা, রাজষপুর, উত্তর শালধর ও নোয়াপুর গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। 

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, প্রতি বছরই বর্ষা মৌসুমে ভারত থেকে আসা পাহাড়ি ঢলের পানির তোঁড়ে পরশুরাম, ফুলগাজী ও ছাগলনাইয়া উপজেলায় মহুরী, কহুয়া নদীর বাঁধ ভেঙে তলিয়ে যায় গ্রামের পর গ্রাম। সম্পদ ও ফসলহানিতে ক্ষতিগ্রস্থ হয় লাখ লাখ তীরবর্তী মানুষ। বিভিন্ন সময় বাঁধ মেরামতের কাজ হলেও বর্ষার শুরুতেই বাঁধে ভাঙনের ঘটনা যেন তিন উপজেলার তীরবর্তী মানুষের নিয়তিতে পরিণত হয়েছে। স্থানীয়রা মহুরী নদীর বাধকে তাদের দুঃখ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। তাদের অভিযোগ, দায়সারা বাধ মেরামতের কারণেই তিন উপজেলার লাখ লাখ মানুষ আর্থিক ও মানসিকভাবে প্রতিবছরই ক্ষতিগ্রস্থ হয়। অনেকে ভবিষ্যতে মুহুরী নদীর বাঁধ মেরামতের কাজ বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর তদারকিতে করানোর দাবি তুলেছেন।


আরো সংবাদ



premium cement