২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫
`


নারায়ণগঞ্জে ৩০০ শয্যা হাসপাতালের ৫ কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে দুর্নীতির তদন্ত শুরু

-

নারায়ণগঞ্জ ৩০০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালের পাঁচ কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে সরকারি বিল ভাউচারের টাকা আত্মসাৎ, ব্লাড ব্যাংকের অর্থ লোপাট, সরকারি মালামাল বাইরে বিক্রি, রোস্টারের নামে প্রতি মাসে অর্থ লুটে নেয়াসহ বিভিন্ন প্রকার অনিয়ম ও দুর্নীতির তদন্ত শুরু করেছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। এই অভিযোগে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়। আগামীকাল সোমবার তদন্ত কমিটি এ নিয়ে বৈঠকে বসছে।
অভিযুক্ত পাঁচ কর্মচারী হলেন- হাসপাতালের হিসাবরক্ষক আহসান হাবিব, ব্লাড ব্যাংক ইনচার্জ আব্দুল আজিজ, স্টোরকিপার আতিকুর রহমান, ওয়ার্ডমাস্টার শেখ আনসার আলী ও অফিস সহায়ক জয়নাল। এই ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটির সভাপতি জেলা সিভিল সার্জন ডা: আবুল ফজল মুহম্মদ মুশিউর রহমান। এ ছাড়া কমিটিতে অপর দুই সদস্য হলেন- সিভিল সার্জন অফিসের সিনিয়র স্বাস্থ্য শিক্ষা অফিসার মো: আসিফ মাহমুদ, মেডিক্যাল অফিসার ডা: এ কে এম মেহেদী হাসান।
নারায়ণগঞ্জ ৩০০ শয্যা হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা: আবুল বাসার বলেন, অভিযুক্ত কর্মচারীদের বিরুদ্ধে স্বাস্থ্য অধিদফতর তদন্ত করছে। কমিটি ১৮ মার্চ এই বিষয়টি নিয়ে বসবে বলেও জানিয়েছে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হলে ব্যবস্থা নিবে অধিদফতর।
জানতে চাইলে জেলা সিভিল সার্জন ডা: আবুল ফজল মুহম্মদ মুশিউর রহমান বলেন, এই বিষয়টি নিয়ে গঠিত তদন্ত কমিটি কাজ শুরু করেছে। দ্রতই এই বিষয়ে তদন্ত শেষে প্রতিবেদন দেয়া হবে।
এ দিকে, অনিয়ম ও টাকা আত্মসাতের অভিযোগে অভিযুক্তদের মধ্যে তিনজন নারায়ণগঞ্জ ৩০০ শয্যা হাসপাতালের আলোচিত ‘পিএ সিদ্দিক’-এর আত্মীয়। দুইজন সিদ্দিকের ভাই এবং অপরজন ভায়রা। পিএ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে ছিল ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ। হাসপাতালের চিকিৎসক ও কর্মকর্তারাও এই কর্মচারীর দাপটে ছিলেন তটস্থ। পিএ সিদ্দিকের দুর্নীতি নিয়ে মুখ খুলেছিলেন নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য ও হাসপাতালটির ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি সেলিম ওসমানও। তিনি প্রকাশ্যে একাধিক অনুষ্ঠানে সিদ্দিকের অনিয়ম ও দুর্নীতি নিয়ে কথা বলেন।
২০২০ সালের ৩ জুলাই এক সভায় সেলিম ওসমান এমপি অভিযোগ করেন, ‘গত ৫ বছর ধরে আমি এই হাসপাতাল নিয়ে কাজ করছি। এত বড় চুরি আমার জীবনেও আমি দেখিনি। কখন টেন্ডার হয়, কখন সাপ্লাই হয় আমরা কেউ জানি না। এসব দুর্নীতির পেছনে তত্ত্বাবধায়কের পিএসহ কয়েকজন জড়িত। এখানে ১০০ টাকার মাল ১৫০০ টাকা ধরা হয়। বাকি টাকা লুটপাট হয়েছে। তারা এই শহরে গাড়ি-বাড়ির মালিক, একাধিক ক্লিনিকের শেয়ার হোল্ডার। একজন দুর্নীতিবাজকে চিহ্নিত করলাম, তার নাম পিএ সিদ্দিক। তাকে বদলি করে দেয়া হলো রাজশাহী। বদলি করে কি তাকে বাঁচিয়ে দেয়া হলো? এখানে উপস্থিত জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার আছেন প্রয়োজনে দুদকের মাধ্যমে তদন্ত করে বের করা হোক। এসব লুটেরাদের কাছ থেকে জনগণের টাকা ফেরত আনতে হবে।’


আরো সংবাদ



premium cement