২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫
`
খেজুর বিষয়ে প্রতিমন্ত্রীর ক্ষমা প্রার্থনা

নজরদারিতে ঢাকার হোলসেল মার্কেট

-

নির্ধারিত মূল্য বা ফিক্সড প্রাইজ শপ থেকে পণ্য কেনাকাটার পরামর্শ দিয়েছেন বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু। ‘ফিক্সড প্রাইজ’ শপে কাঁচাবাজারের চেয়ে কম দামে পণ্য পাওয়া যাচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, আমার নিজের কাছেও অবাক লেগেছে যে, যারা মধ্যবিত্ত বা উচ্চবিত্ত তাদের জন্য সুপার মার্কেট। সুপার শপগুলো কমিটেড তারা চিনি, তেল, ডাল ফিক্সড প্রাইজে বিক্রি করবে। আমার নির্দিষ্ট মূল্যে তারা বিক্রি করছে। সুপার শপের অন্যান্য ইনসেনটিভ নেন, প্রত্যেকটা রোজার পণ্য সুপার শপগুলোতে ফিক্সড প্রাইজ। সুপার শপ বলব না, ফিক্সড প্রাইজ শপগুলোতে তুলনামূলকভাবে কাঁচাবাজারগুলোর চেয়ে দাম কম। তবে আমি চাই এর চেয়ে কম দামে কাঁচাবাজারে বিক্রি হোক। কারণ সেখানে এসির খরচ নেই।
গতকাল বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে বিশ্ব ভোক্তা অধিকার দিবস উপলক্ষে সংবাদ সম্মেলনে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, আমাদের লক্ষ্য সাধারণ মানুষের স্বার্থ রক্ষা করা। ঢাকার প্রত্যেকটা হোলসেল মার্কেট এখন আমাদের নজরদারিতে। পাইকারি বিক্রেতাদেরও একটি নিয়ন্ত্রণের মধ্যে আনা হবে। তারা যেন ভাউচারগুলো দেয় যে, কত দামে তারা রিটেইলারের কাছে বা খুচরা বিক্রেতার কাছে বিক্রি করছে। আমরা যখন যাই খুচরা বিক্রেতাদের কাছে, তখন এটি পাই না। কারণ তারা পাইকারি বাজারের আড়তদার থেকে নয়, পাইকারি বাজারের রাস্তা থেকে কিনছে। এটা আমি হাইলাইট করার চেষ্টা করেছি।
প্রতিমন্ত্রী জানান, ভোক্তা অধিদফতরের কাজ উপজেলা পর্যায়ে চলে গেছে। আমাদের নিয়ন্ত্রণে যে উদ্যোগগুলো সেগুলো নিয়ে ভোক্তা অধিদফতর কাজ করছে। একই সাথে সাপ্লাই চেইনের মনিটরিংয়ে একটি সফটওয়্যার ডেভেলপ করার চেষ্টা চলছে। যাতে আমরা সাপ্লাই চেইনটা মনিটরিং করতে পারি। এটা আমরা শুক্রবার উদ্বোধন করব। এতে করে সাপ্লাই চেইন মনিটরিং করা সম্ভব হবে, কোথা থেকে কিভাবে পণ্য যাচ্ছে। কৃষক বেগুনের দাম পাচ্ছে ১০ টাকা। সেটি ঢাকায় এসে কত টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বিপণন একটি আইনের আওতায় আছে, সেটি কৃষি মন্ত্রণালয়ের সাথে কাজ করে আমরা শক্তিশালী করব। চালের ব্যাপারে তেমন অস্থিরতা নেই, যেহেতু কোনো নিউজ নেই। টিটু বলেন, সুপার মার্কেট অ্যাসোসিয়েশন আমাকে একটি চিঠি দিয়েছে যে, রোজার মধ্যে কোন প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম কত কমে বিক্রি করবে। এটা একটি উদাহরণ হতে পারে। আপনাদের (মিডিয়া) বলব পণ্যের দাম সেটি হাইলাইট করতে, যেখানে পণ্যের দাম ফিক্সড করে দেয়া আছে। মানুষের মুখের প্রাইজটা না নিয়ে যেটা ট্যাগে লাগানো আছে, সুপার মার্কেটে যেগুলো থাকে, সেটি হাইলাইট করলে মানুষও জানবে সুপার মার্কেটে তো এইটা (দাম), তাহলে কাঁচাবাজারে গিয়ে কেন এটা কিনব? সুপার মার্কেটে যদি ২৯ টাকায় আলু থাকে তাহলে কেন আমি ৩৫ টাকায় দামাদামি করব।’
খেজুর নিয়ে ক্ষমা প্রার্থনা : ‘নির্মাণের খেজুর’-এর দাম ঠিক করে দিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচনার মুখে পড়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এ পরিপ্রেক্ষিতে ‘নিম্নমানের খেজুর’-এর নাম সংশোধন করে ‘সাধারণ মানের খেজুর’ উল্লেখ করে নতুন চিঠি দিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। একই সাথে ভুলের কারণে ক্ষমা চেয়েছেন বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু।
গতকাল সচিবালয়ে বিশ্ব ভোক্তা অধিকার দিবস উপলক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে ভুলের জন্য ক্ষমা চান তিনি। এ সময় ‘অতিসাধারণ/নিম্নমানের খেজুর’-এর নাম ‘সাধারণ মানের খেজুর’ করে নতুন চিঠি সাংবাদিকদের সরবরাহ করা হয়।
প্রসঙ্গত, গত ১১ মার্চ খেজুরের দাম নির্ধারণ করে দেশের ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই সভাপতি ও বাংলাদেশ ফ্রেশ ফ্রুটস ইম্পোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন সভাপতির কাছে চিঠি পাঠিয়েছিল বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। ওই চিঠিতে প্রতি কেজি ‘অতিসাধারণ/নিম্নমানের খেজুর’-এর দাম ১৫০-১৬৫ টাকা এবং বহুল ব্যবহৃত জাইদি খেজুর-এর দাম ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে বলে জানানো হয়।
এ দিকে সরকার কর্তৃক ‘অতিসাধারণ/নিম্নমানের খেজুর’-এর দাম নির্ধারণ করে দেয়া নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচনার ঝড় ওঠে। বলা হয়, তাহলে কি সরকারই নিম্নমানের খেজুর আমদানিকে উৎসাহিত করছে।
সংবাদ সম্মেলনে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘কয়েকদিন ধরে সোস্যাল মিডিয়ায় খুব ট্রলিং হচ্ছে, আমাদের ছোট একটা, ছোট না আমি বলব যে বড়ই ভুল, আমাদের ভাষাটা ঠিক হওয়া দরকার ছিল। আমাদের ভুলত্রুটি যখন আমরা দ্রুত কাজ করতে যাই...আমরা চেয়েছিলাম প্রথম রমজানেই নোটিশটি দিয়ে দিতে। এক সপ্তাহ আগে ব্যবসায়ীদের বলেছিলাম যে, স্ব-উদ্যোগী হয়ে দাম নির্ধারণ করে দিতে। যেহেতু তারা গরিমসি করছিল, আমরা চাচ্ছিলাম প্রথম রমজান থেকে ... তাই তাড়াহুড়ায় আমাদের ভুল হয়ে গেছে। সাধারণ মানের জায়গায় শব্দটা একটু ই-হয়ে গিয়েছিল। সে জন্য আমি বিনীতভাবে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি। পরবর্তী সময়ে সেটা সংশোধন করে দিয়েছি, কিন্তু সেটি হাইলাইটেড হয়নি।’ প্রসঙ্গক্রমে তিনি আরো বলেন, বাজার পরিস্থিতি উন্নত করার যে চেষ্টা এবং ভোক্তার অধিকার রক্ষায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর যেভাবে কাজ করে যাচ্ছে, বিভিন্ন মহল থেকে আমরা এ বিষয়ে অনেক সাধুবাদ পেয়েছি। আমরা এ কাজটা কন্টিনিউ করতে চাই। এরমধ্যে আমাদের ছোটখাটো ভুল হয়, সেটিকে হাইলাইট না করে আমি সবসময় বলি এফোর্টগুলোকে যদি একটু হাইলাইট করা হয়, যে সমস্যাগুলো আছে সেগুলো আমাকে বলা হয় তাহলে চলে যাবে।


আরো সংবাদ



premium cement