২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`

শরণখোলায় সম্পত্তি নিয়ে বিবাদে চাষিসহ আহত ৩

মো: ইয়াকুব আলী হাওলাদার (৪৫) - ছবি : নয়া দিগন্ত

বাগেরহাটের শরণখোলায় সম্পত্তি নিয়ে বিরোধের জের ধরে মো: ইয়াকুব আলী হাওলাদার (৪৫) নামের এক কৃষককে কুপিয়ে জখম করার অভিযোগ উঠেছে। এ সময় ওই কৃষকের সাথে থাকা তার ছেলে মো: রুমান হাওলাদার (২৩) ও ভাইয়ের ছেলে মো: মিরাজ হাওলাদারকে (২২) পিটিয়ে আহত করেছেন প্রতিপক্ষরা। ঘটনাটি ঘটেছে ২৮ জুলাই (সোমবার) সকালে উপজেলার রায়েন্দা ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের উত্তর রাজাপুর গ্রামে।

স্থানীয়রা জানান, উত্তর রাজাপুর গ্রামের বাসিন্দা মো: রুহুল আমিন হাওলাদারের মালিকানাধীন ৭নং দক্ষিণ রাজাপুর মৌজার এস এ-১২৩ নং খতিয়ানের ১১৮, ১১৯ ও ১২০ নং দাগের ৬ বিঘা জমি চলতি বছরে চাষাবাদ করার জন্য নগদ টাকায় চুক্তি করেন কৃষক ইয়াকুব আলী। সম্প্রতি উক্ত জমি চাষাবাদ শুরু করলে তাতে বাঁধা দেন ধানসাগর ইউনিয়নের রতিয়া রাজাপুর গ্রামের বাসিন্দা মো: আ: সামাদ হাওলাদারের ছেলে সাবেক প্রবাসী মো: মনির হোসেন হাওলাদার ও তার প্রতিবেশি আ: রব ধলু হাওলাদারের ছেলে মো: জাহাঙ্গীর হাওলাদার। 

এ নিয়ে মিরাজ ও জাহাঙ্গীরের মধ্যে কয়েক দিন আগে সামান্য বাক বিতাণ্ডা হয়। ওই ঘটনার জের ধরে প্রবাসী মো: মনির হোসেন, তার ভাই মো: নেহারুল হোসেন ও তাদের সহযোগী মো: জাহাঙ্গীর হোসেন একজোট হয়ে পূর্ব শক্রতার জের মেটাতে উপজেলার সিংবাড়ীসহ বিভিন্ন এলাকা হতে ৮/১০টি মোটরসাইকেল যোগে ভাড়া করা ১৫/২০ জন লোক নিয়ে ইয়াকুবের বাড়ির সামনে জড়ো হন। এ সময় জাহাঙ্গীরের নেতৃত্বে শাহ-জামাল (৩৫), প্রদীপ কুমার (৪০), নেহারুল (৩৫), মনির (২৮), আলী রাজ (২২), খলিল হাওলাদার (৫২) ও  সরোয়ার হোসেনসহ (৩৮) ১৫/২০ জনের একটি দল  নিজেদের  বিচ্ছু বাহিনী পরিচয় দিয়ে  ধারালো অস্ত্র, লোহার রড় ও লাঠি সোটা নিয়ে  ইয়াকুবের ছেলে রুমান হাওলাদার ও ভাইপো মিরাজ হাওলাদারকে এলোপাতাড়ি মারপিট শুরু করেন।

ওই সময় তাদের চিৎকার শুনে ইয়াকুবসহ স্থানীয়রা এগিয়ে আসলে প্রবাসী মনিরের ভাড়া করা লোক  শাহ-জামাল ছুরি দিয়ে  ইসাহাকের মাথায় আঘাত করেন। এতে জ্ঞান হারিয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন ওই কৃষক।

স্থানীয়রা মুঠোফোনে বিষয়টি শরণখোলা থানা পুলিশকে অবহিত করলে প্রবাসী মনির, নেহারুল ও জাহাঙ্গীরসহ তাদের ভাড়া করা লোকজন পালিয়ে যায়।

এ ব্যাপারে ইয়াকুব আলী বলেন, হামলাকারীরা আমার নিকট থেকে কোরবানীর গরু ক্রয়ের নগদ ৬৫ হাজার টাকাসহ আমার ছেলে ও ভাইপোর সাথে থাকা ২টি, মোবাইল ও ৩টি স্বর্ণের চেইন ছিনিয়ে নিয়েছে। এছাড়া শরণখোলা হাসপাতালে ভর্তি হতে গেলে জাহাঙ্গীর ও মনিরের লোকজন আমাদের বাধা দেয়ায় বাধ্য হয়ে স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা নিতে নিয়েছি।

ইউপি সদস্য মো: জাকির হোসেন বলেন, ঘটনার খবর পয়ে স্থানীয় লোকজন জড়ো হয়ে মারপিট না ঠেকালে জমি বিবাদ নিয়ে হত্যাকাণ্ড সংঘঠিত হওয়ার আশংঙ্কা ছিল। এছাড়া হামলার খবর পুলিশকে জানানোর ফলে বড় ধরনের দুর্ঘটনা হতে রক্ষা পেয়েছেন উভয় পক্ষ।

প্রবাসী মনির হোসেনের সহযোগী মো: জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, আমরা কাউকে মারপিট করিনি। স্থানীয় ইউপি মেম্বারের ইন্ধনে ইয়াকুব ও তার ছেলেরা অন্যায়ভাবে আমাকে মারধর করেছেন। ওই কৃষকের অভিযোগ সম্পুর্ন মিথ্যা। আমি এখন হাসপাতালে আছি।

শরণখোলা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এসকে আব্দুল্লাহ আল-সাইয়েদ জানান, বিষয়টি শুনে তাৎক্ষনিক ঘটনাস্থলে পুলিশের একটি দল পাঠিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। আহতদের পক্ষ থেকে অভিযোগ পেলে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।


আরো সংবাদ



premium cement