২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`

কাউখালীর নদী মোহনায় ইলিশের আকাল

কাউখালীর নদী মোহনায় ইলিশের আকাল -

পিরোজপুরের কাউখালীর কচা, সন্ধ্যা, কালিগঙ্গা ও গাবখান নদীতে ভরা মৌসুমেও ইলিশের আকাল দেখা দিয়েছে। জেলেরা নদীতে দিন রাত জাল ফেলে আপ্রাণ চেষ্টা করলেও তাদের জালে মাছ ধরা পড়ছে না। ফলে জেলেদের মধ্যে দেখা দিয়েছে চরম হতাশা।

কাউখালীতে ১০ হাজারেরও বেশি জেলে পরিবার রয়েছে। ইলিশ মৌসুমে এসব জেলেরা বিভিন্ন ব্যাংক ও এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে নৌকা ও জাল গড়ে নদীতে নেমেছে। কিন্তু সারাদিন জাল ফেলেও মাছ না পাওয়ায় তারা নিরাশ হয়ে বাড়ি ফিরছে। এখন অনেক জেলে নদীতে যাচ্ছে না। নদীর তীরে নৌকায় বসে অলস সময় কাটাচ্ছেন। অন্য কোনো আয়ের উৎস না থাকায় বেকার হয়ে পড়েছেন উপজেলার হাজার হাজার জেলে। বেশিরভাগ জেলে আবার ব্যাংক ও এনজিও ঋণের কিস্তির ভয়ে বাড়িতে যাচ্ছেন না। তাদের পরিবারের সদস্যরা অনাহারে-অর্ধাহারে দিন কাটাচ্ছে।

সরেজমিনে জেলেপাড়ায় গিয়ে এক করুন চিত্র দেখা যায়, জেলেদের স্ত্রীরা অভাবের তাড়নায় দিশেহারা হয়ে পরেছেন। তারা জানান, বিভিন্ন এনজিও ব্র্যাক, গ্রামীণ ব্যাংক, আশা, বিআরডিবি থেকে আনা ঋণের টাকা প্রতি সপ্তাহে পরিশোধ করতে হয়। তারা সংসার চালাতে পারছেন না কিস্তি দেবে কিভাবে- এই দুঃশ্চিন্তায় তাদের ঘুম হারাম হয়ে যাচ্ছে। কাউখালীর ২১২২টি জেলে পরিবার সরকারি সাহায্য পেলেও তা জেলেদের সংখ্যার তুলনায় যৎসামান্য।

কাউখালীর এলাকার জেলে নাসির, ফোরকান মাঝি, কাওসার জানান, তাদের একমাত্র পেশা ইলিশ ধরে বিক্রি করা এবং তা দিয়ে সংসার চালানো। ইলিশ মাছ নদীতে না পেয়ে তারা হতাশ এবং করোনার কারণে আয় রোজগার কমে গেছে। বর্তমানে সরকার সহজ শর্তে মৎস্য অধিদফতর থেকে লোন দিলে আমরা এই করুন অবস্থা থেকে রেহাই পাব।

এ ব্যাপারে উপজেলা ভারপ্রাপ্ত মৎস্য কর্মকর্তা ফনি ভূষন পাল জানান, উপজেলার জেলেদেরকে পূর্ণবাসনের জন্য চার মাসের জন্য প্রতি মাসে ৪০ কেজি চাল দেয়া হচ্ছে। উল্লেখ্য, কাউখালীর কচা নদীর সুস্বাদু ইলিশ কাউখালীরের চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে রফতানি করা হয়। এমনকি ভারতের জামাই ষষ্ঠী অনুষ্ঠানে কচা নদীর ইলিশ খুব জনপ্রিয়। এছাড়া বিশেষজ্ঞদের ধারনা জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ায় এ সমস্ত নদীতে কাঙ্ক্ষিত ইলিশ মিলছে না।


আরো সংবাদ



premium cement