২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`

ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত কুয়াকাটার নিজামপুর বেড়ীবাঁধ

ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত কুয়াকাটার নিজামপুর বেড়ীবাঁধ - নয়া দিগন্ত

ভাঙন শুরু হয়েছে কুয়াকাটর নিজামপুর গ্রামের বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধে। ঘূর্ণিঝড় আমফানের প্রভাবে ভাঙনের মাত্রা এবার আরো তিব্র হয়েছে। এতে পুরো এলাকা বন্যায় তলিয়ে যাওয়ার ঝুঁকিতে পড়েছে।

জানা যায়, উপজেলার মহিপুর ইউনিয়নের নিজামপুর গ্রামের বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধে অমাবস্যা-পূর্ণিমার জোয়ারে আন্ধারমনিক নদীর উত্তাল ঢেউ আছড়ে পড়ে। এতে প্রতিনিয়ত ভাঙছে বাঁধটি। প্রায় দুই কিলোমিটার জুড়ে এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। ফলে পাঁচটি গ্রামের হাজার হাজার কৃষক পানিবন্দি ও আর্থিক ক্ষতির শংকায় রয়েছে।

এর আগে ২০০৭ সালের ১৫ নভেম্বর ঘূর্ণিঝড় সিডরে নিজামপুর গ্রামের পাউবোর ৪৭/১ পোল্ডারের বেড়ীবাঁধের বিভিন্ন অংশে ভাঙন দেখা দেয়। এরপর ২০০৮ ঘূনির্ণঝড় নার্গিস, ২০০৯ আইলা, ২০১৩ মহাসেন, ২০১৫ কোমেন, ২০১৬ রোয়ানু, ২০১৭ মোরা, ২০১৯ ফণী ও বুলবুলের ভয়াবহ তান্ডবে নিজামপুর বাঁধ বার বার ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বেশ কয়েকবার সংস্কার ও তিন বার পুনঃনির্মাণ করা হয়। কিন্তু সাগর মোহনা আন্ধারমানিক নদীর অস্বাভাবিক জোয়ারের উচ্চতায় বেড়ীবাঁধের ভাঙন কবলিত অংশ দিয়ে পানি লোকালয়ে প্রবেশ করে। পর্যায়ক্রমে প্লাবিত হয় ওই ইউনিয়নের পুরান মহিপুর, ইউসুফপুর, নিজামপুর, কোমরপুর ও সুধিরপুর গ্রামের প্রায় তিন হাজার একর জমি।

এছাড়া বন্ধ হয়ে যায় বাঁধ সংশ্লিষ্ট একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। ২০১৭-১৮ অর্থ বছরে নদী ভাঙন রোধে পানি উন্নয়ন বোর্ড নির্মাণ করে দেয় রিং বেড়ীবাঁধ। সর্বশেষ ঘূর্ণিঝড় আমফানের তান্ডবে এ বাঁধটি ফের ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

স্থানীয় কৃষক আলতাফ শরীফ বলেন, নদীর পানির চাপ বাড়লে এ বাঁধটি যে কোনো মুহূর্তে ছুটে যেতে পারে। তখন যাওয়ার আর কোনো জায়গা থাকবেনা।

নিজামপুর গ্রামের প্রভাষক জয়নুল আবেদীন বলেন, সিডরের পর থেকে পাঁচ গ্রামের মানুষ দশ বছর যাবৎ জমিতে কোনো চাষ করতে পারেনি। এর পর পানি উন্নয়ন বোর্ড জনগনের দুর্ভোগ লাগবে এখানের রিং বেড়ীবাঁধ করে দেয়। আমরা দুই বছর ধরে চাষাবাদ শুরু করছি। এখন আবার নতুন করে আতঙ্কে ভুগছি।

মহিপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুস ছালাম আকন জানান, এ এলাকার বেশিরভাগ মানুষই মৎসজীবী। আবার কেউ কৃষিকাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন। এই ইউনিয়নের নিজামপুর ও সুধীরপুর গ্রাম সাগরের মোহনায়। শুধু অমাবস্যা-পূর্ণিমাই নয়, জোয়ার ও ভাটার সাথে যুদ্ধ করে বেচে থাকতে হয় তাদের। পূর্বের বেড়ীবাঁধ নেই। এখানে সারে আটশ মিটার রিং বেড়ীবাঁধ হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের দ্বারে দ্বারে গিয়ে আমি অনেক বার ঘুরেছি। কোনো ফল পাইনি।

পানি উন্নয়ন বোর্ড কলাপাড়া জোনের নির্বাহী প্রকৌশলী খান মোহাম্মদ ওয়ালিউজ্জামান বলেন, সরেজমিনে পরিদর্শন করেছি। যে বরাদ্ধ দেয়া হয় তাদিয়ে কোনো রকমের কাজ করা সম্ভব। এ সাগর মোহনায় পুর্নাঙ্গ বেড়ীবাঁধ করা দরকার। এর জন্য প্রকল্প তৈরি করে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে বলেও তিনি জানান।


আরো সংবাদ



premium cement