০৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`


গৌরনদীতে সরকারি সম্পত্তি দখল করে দ্বিতল পাকা ভবন

সরকারি জমিতে প্রভাবশালী সিরাজুল গংদের দ্বিতল ভবন : নয়া দিগন্ত -


বরিশালের গৌরনদী উপজেলার চাঁদশী ইউনিয়নের দক্ষিণ গোবর্দ্ধন গ্রামের প্রভাবশালী সিরাজুল ইসলাম গং প্রায় পাঁচ কোটি টাকা মূল্যমানের সরকারি সম্পত্তি দখল করে সেখানে একটি দ্বিতল ভবন নির্মাণ করেছেন। পরবর্তীতে আবদুল্লাহ আল মামুনসহ এলাকাবাসীর লিখিত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বরিশাল জেলা প্রশাসক এ দখলদারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে গৌরনদী উপজেলা ভূমি অফিসকে নির্দেশ দেয়ার পর প্রায় এক বছর অতিবাহিত হয়ে যায়। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা নেয়নি উপজেলা ভূমি অফিস। এদিকে, ওই জমির ওপর খনন করা পুকুরের মাছ ও জমিতে রোপণ করা গাছ বিক্রি করে সেই টাকা আত্মসাৎ করেছেন সিরাজুল ইসলাম গং। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়ে অবহিত করার পরেও প্রশাসন থেকে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।
স্থানীয় লোকজন, উপজেলা ভূমি অফিস, দখলদার ও সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, বরিশালের গৌরনদী উপজেলার চাঁদশী ইউনিয়নের দক্ষিণ গোবর্দ্ধন গ্রামের জে এল ১৩২ নং দক্ষিণ গোবর্দ্ধন মৌজার এস এ ৯৪, ৯২ নং খতিয়ানের হাল ২০৯, ২১০, ২২১, ২৫৪, ২৫৭, ২১২ ও ২১৩ নং দাগের তিন একর ৬১ শতাংশ জমির আর এস রেকর্ডীয় মালিক ছিলেন সুভাশিনি দেবী। গৌরনদী উপজেলা ভূমি অফিসের একাধিক কর্মকর্তা জানান, তার ওয়ারিস না থাকায় মৃত্যুর পরে ওই সম্পত্তি ভিপিভূক্ত করা হয়।

২০২৩ সালের ১৭ মে বরিশাল জেলা প্রশাসকের কার্যালয় গৌরনদী সহকারী কমিশনারকে (ভূমি) নির্দেশনামূলক একটি চিঠি দেয়া হয়। এতে বলা হয়, ১৯৬৯ সালে তিন একর ৬১ শতাংশ ভূমি লিজ গ্রহণ করে ভোগ দখল করা অবস্থায় আবেদনকারী আবদুল্লাহ আল মামুনের বাবা আব্দুল মালেক সরদার মারা যান। এ সময় আবদুল্লাহর চাচা আব্দুর রব সরদার তার সহোদর মালেক সরদারের কোনো ওয়ারিস নেই বলে দাবি করেন এবং মিথ্যা তথ্য দিয়ে আব্দুর রব সরদার নিজে ও তার ছেলে সিরাজুল ইসলাম সরদার গংরা প্রতারণার মাধ্যমে ওই সরকারি সম্পত্তি লিজ নেন। পরে পৈতৃকসূত্রে ওই সম্পত্তির মালিক দাবি করেন। এরপর ওই জমিতে দুই তলা পাকা ভবন নির্মাণ, জমির আকার পরিবর্তন করে পুকুর খনন এবং সরকারি খাল ভরাট করে নিজেদের দখলে নিয়ে নেন।
গোবর্দ্ধন গ্রামের মানিক সরদারসহ স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, আব্দুর রব সরদারের ছেলে সিরাজুল ইসলাম গংরা ওই সরকারি সম্পত্তিতে উৎপন্ন প্রায় ২০ লাখ টাকার মূল্যমানের গাছ বিক্রি করে ওই টাকা আত্মসাৎ করেন। শুধু তাই-ই নয়, গত ২০১৪ সালে ওই সম্পত্তির ওপর একটি পাঁচতলা ভবন নির্মাণের জন্য কাজ শুরু করা হয়। বর্তমানে ভবনটি নির্মাণ কাজ দোতলা পর্যন্ত শেষ করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে সিরাজুল ইসলাম বলেন, আমি লিজ পাওয়ার আবেদন করেছি। গাছ বিক্রির অভিযোগ সত্য নয়। মাছ ধরা প্রসঙ্গে বলেন, পুকুর বদলের জন্য মাছ ধরা হলে ইউএনও মাছ জব্দ করে এতিমখানায় বিতরণ করে দিয়েছেন।
গৌরনদী উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রফিকুল ইসলাম বলেন, এ বিষয়ে ইতোমধ্যে পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। সম্প্রতি মাছ ধরে বিক্রির চেষ্টা সম্পর্কে জানতে চাইলে বলেন, বিষয়টি গৌরনদী উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবু আবদুল্লাহ খান নিষ্পত্তি করেছেন।


আরো সংবাদ



premium cement